স্বাধীনতাযুদ্ধের অপর নাম জিয়াউর রহমান ঢাকায় সমাবেশে নেতৃবৃন্দ
শত শত বছর মানুষের হৃদয়ে থাকবেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানই এদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছে। তাঁর নাম মানুষের হৃদয় থেকে মুছে ফেলা যাবে না বলে জানিয়েছে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা।
বিএনপির নেতারা বলেন, কার খেতাব আপনারা বাতিল করতে চান। এই জিয়াউর রহমান এদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সেক্টর কমান্ডার, এই জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ফোর্স ‘জেড’ ফোর্সের কমান্ডার। দেশটা ভাষণে স্বাধীন হয় নাই, দেশটা স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে। সেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, সেই যুদ্ধের অপর নাম জিয়াউর রহমান। যুদ্ধ মানে জিয়া, গণতন্ত্র মানে জিয়া, দেশপ্রেম মানে জিয়া, সততা মানে জিয়া, আধুনিক বাংলাদেশ মানে জিয়া, স্বনির্ভর বাংলাদেশ মানে জিয়া, বিশ্বের দরবারে মর্যাদাশীল জাতির নাম জিয়া। জিয়াই বাংলাদেশি জাতি এক কাতারে লেখা। কোনোটাকে কোনভাবে বিচ্ছিন্ন করা যায় না।
আজ শনিবার সকালে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব প্রত্যাহারের সরকারি হঠকারী ও অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিএনপির পূর্বঘোষিত প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশটির আয়োজন করে। একই কর্মসূচি হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলা-মহানগরে। সকাল থেকেই ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণের বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত হয়। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি হয়। এতে জনতার ঢল নামে। নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মুক্তির দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে প্রেসক্লাব চত্বর উত্তাল করে তোলে। সমাবেশ শুরুর পর পুলিশ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখলেও কর্মীদের উপস্থিতি বাড়ার সাথে সাথে পুলিশ সরে যায় এবং এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব কারো বাতিল করার এখতিয়ার নেই বলে উল্লেখ করে ‘সরকার হটানোর আন্দোলনে’ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানই এদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছেন। কার খেতাব আপনারা বাতিল করতে চান। এই জিয়াউর রহমান এদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সেক্টর কমান্ডার, এই জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ফোর্স ‘জেড’ ফোর্সের কমান্ডার। এই জিয়াউর রহমানের অর্জিত খেতাব বাতিলের অধিকার আপনাদের নাই, এই খেতাব বাতিলের অধিকার কারো নাই। যারা চেষ্টা করছেন বাতিল করার জন্য আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনাদের পায়ের নিচে মাটি নাই। শেখ হাসিনার হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য আজকে যখন জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে তখন এই ষড়যন্ত্র। আমি সকলকে আহবান জানাবো, আগামী দিনে এই সরকারের পতনের আন্দোলনে সকলে ঐক্যবদ্ধ হোন। আজকে আমি সেই আন্দোলনের ডাক দিচ্ছি।তিনি বলেন, জামুকা (জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল)-এর কোনো এখতিয়ার নেই এই খেতাব বাতিলের। এই খেতাব দেয়া হয়েছে তখন মুক্তিযুদ্ধে যারা অবদান রেখেছেন সেই সময় কমিটি করে সেই কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক। সেই সময় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এই খেতাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদি আজকে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সেই খেতাবকে বাতিল করার মতো তাদের ক্ষমতা থাকে তাহলে জিজ্ঞাস করতে চাই তাদের কী আবার নতুন করে কাউকে খেতাব দেয়ার ক্ষমতা আছে কিনা? তাদের যদি খেতাব বাতিল করার ক্ষমতা থেকে থাকে তাহলে তারা জাতিকে জানাক- তাদের আবার নতুন করে বীর উত্তম, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক বা সর্বোচ্চ বীর শ্রেষ্ঠ কাউকে দেয়ার ক্ষমতা আছে কিনা। এটা তাদের নাই। অতএব বাতিল করার ক্ষমতা জামুকার নাই।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশটা ভাষণে স্বাধীন হয় নাই, দেশটা স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে। সেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে, সেই যুদ্ধের অপর নাম জিয়াউর রহমান। যুদ্ধ মানে জিয়া, গণতন্ত্র মানে জিয়া, দেশপ্রেম মানে জিয়া, সততা মানে জিয়া, আধুনিক বাংলাদেশ মানে জিয়া, স্বনির্ভর বাংলাদেশ মানে জিয়া, বিশ্বের দরবারে মর্যাদাশীল জাতির নাম জিয়া। জিয়াই বাংলাদেশি জাতি এক কাতারে লেখা। কোনোটাকে কোনভাবে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। জিয়ার খেতাব নিয়ে আমরা ব্যবসা করি না, আমরা গর্ববোধ করি, আমরা উৎসাহিত হই। আমি সকলকে বলি, ও খেতাব নিয়ে টানাটানি করুক, সবাই মিলে আমরা ওর গদিটা ধরে টান দেই। ওখান থেকে নামিয়ে নিতে পারলে সব হিসাব-নিকাশ একদিনে চুকে যাবে। সমাবেশের শুরুতে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি মিছিল সমাবেশস্থলে প্রবেশের সময় পুলিশের হামলা চালানোর ঘটনার নিন্দা জানান তিনি।আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আল জাজিরার রিপোর্ট ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নিচ্ছেন? এটা তো কোটি কোটি মানুষ দেখে ফেলেছে। জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নিয়ে আপনি ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে পারবেন না ওবায়দুল কাদের সাহেব।
তিনি বলেন, যে লোক (জিয়াউর রহমান) রাজনীতিকে গ্রামে নিয়ে গেছেন, যে মানুষটি মিশে ছিলেন কাদা মাটি ও পলিমাটির মধ্যে। নদীর উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে যার নাম মিশে আছে, মিশে আছে জনগণের মনে। সেই নাম কোনদিনও মুছে ফেলা যাবে না।তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন কবিয়াল আছে। আপনারা কি চেনেন? তার বাড়ি হচ্ছে নোয়াখালী। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। তার নাম হচ্ছে ওবায়দুল কাদের। তিনি কবিতার আকারে কথা বলেন, তিনি গতকাল বলেছেন আল জাজিরার পেছনে কারা কারা আছে আমরা সেটা খুঁজে পেয়েছি। আমি আগেই বলেছি, আওয়ামী লীগের ক্যারেক্টারটাই হচ্ছে সন্ত্রাসীদের মতো, মাফিয়াদের মত। ঠাকুরগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা বেগম গতকাল বলেছেন, আগামীকাল নির্বাচন যাদের ধানের শীষের সাথে প্রেম আছে তারা ঠাকুরগাঁও ছেড়ে দেন। লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেছেন।বিএনপির এই নেতা বলেন, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন, ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাই অপরাধের অন্যতম কারণ। এই আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন; এদের প্রত্যেকেরই ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা। আপনারা সবাই দেখছেন না এখন জিপিএ ফাইভের ছড়াছড়ি, আর ১৯৭২ সালে ছিল নকলের ছড়াছড়ি, এইবার হলো অটো পাসের ছড়াছড়ি। এই কারণেই সমাজ এবং রাষ্ট্রে অপরাধ বাড়ছে। আর আওয়ামী লীগের ভিতরে সবচেয়ে বেশি অপরাধ।তিনি বলেন, যখন দেশ বিধ্বস্ত সেই সময়ে কোনো বীর বলেছিলেন, ওই রিভল্ট। সেটা তো বলেছিলেন জিয়াউর রহমান। তাঁর খেতাব কেড়ে নিতে পারে? তাঁর খেতাব কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। তাঁর খেতাব নাকি কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমানের বীরত্ব মহাকাব্যের মতো। জিয়াউর রহমানের বীরত্ব নিয়ে আগামী দিনে গান রচনা হবে, কবিতা রচনা হবে। শতাব্দীর পর শতাব্দী এদেশের জনগণের কন্ঠে কন্ঠে জিয়াউর রহমানের বীরত্বের গান, কবিতা ও গল্প আবৃত্ত হবে। যেমন আমরা তিতুমীরকে নিয়ে গান রচনা করি, যেমন আমরা ক্ষুদিরামকে নিয়ে গান রচনা করি, যেমন আমরা ফকির মজনু শাহকে নিয়ে গান রচনা করি, ঠিক তেমনি জিয়াউর রহমানকে নিয়েও গান রচনা হবে।
ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সভাপতি ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম নকীর পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপি মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের বিএনপি মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন, মহানগর বিএনপির মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা সুলতানা আহমেদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ। এছাড়াও সমাবেশে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আক্তারুজ্জামান রঞ্জন, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুজ্জামান শিমুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, আকরামুল হাসান, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সভাপতি এসএম জাহানঙ্গীর হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সভাপতি একেএম মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ, নাসির উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ইউনুস মৃধা, নবী উল্লাহ নবী, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ওলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, তাঁতী দলের আহবায়ক আবদুল কালাম আজাদ, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, জাসাসের সহ-সভাপতি শাহরিন ইসলাম শায়লা, আরিফুর রহমান মোল্লা, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বপন, জাসাস নেতা ইব্রাহিম, যুবদল মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, কৃষক দলের সদস্য কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, এম জাহাঙ্গীর আলম, সাখাওয়াত হোসেন নান্নু, মোহাম্মাদপুর থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. খালিদ আলম শিপু, ২৩ নং ওয়ার্ড সাবেক কমিশনার মাহমুদুল আলম মিন্টু, ২৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু, সহ-সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম, পল্লবী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদ মল্লিকসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।