এবারের বাজেট গরিব–দুঃখী মানুষের: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

দেশের সর্বস্তরের জনগণের কথা ভেবে, বিশেষ করে গরিব-দুঃখী, শ্রমজীবী মানুষের কথা মাথায় রেখেই এবারের বাজেট করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

মন্ত্রী বলেন, ‘এটি একটি বাস্তবভিত্তিক, সময় উপযোগী, ব্যবসাবান্ধব, বিনিয়োগবান্ধব এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা ও সংকটকালে বাস্তবধর্মী বাজেট। ইতিমধ্যে অনেকে এ বাজেটের প্রশংসা করেছেন।’

আজ শুক্রবার দুপুরে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৬৪ টাকা। এখন ২ হাজার ২২৭ টাকা। বিএনপি সেটা কল্পনাও করতে পারেনি। সে জন্যই তারা আবোলতাবোল লিখছেন। ‘অন্ধ, বিদ্বেষপ্রসূত কথামালার চাতুরী বিএনপির বাজেট সমালোচনা। তারা ভালো কিছু চোখে দেখে না। দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে।’

আলোচনায় তিনি দেশের কয়েকটি বড় প্রকল্প নিয়েও কথা বলেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ ৮৬ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে, যা আগামী বছর উদ্বোধন হবে। আগামী বছর উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রোরেলের উদ্বোধন হবে, যার কাজ ৬৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধন হবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম।

বিএনপি একটা ফ্লাইওভারও করতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে, টঙ্গী ব্রিজ দশ লেনের হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে গাবতলীতে চার লেনের সেতু হচ্ছে। এ বছরের মধ্যেই শতভাগ বিদ্যুৎ দেওয়া সম্পন্ন হবে। দেশের মানুষের সংকট এখানে থাকবে না।’

কোভিড-১৯-এর মধ্যেও সংগঠনের কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা সদস্য সংগ্রহ অভিযান চালাই। ঢাকঢোল না পিটিয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী সদস্য সংগ্রহ করব।’ তিনি বলেন, ‘যারা চিহ্নিত চাঁদাবাজ, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু এবং চিহ্নিত মাদকাসক্ত—এই ধরনের লোক ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অপশক্তি এদের কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের সদস্য করা যাবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘এখন কাউকে খুশি করার জন্য, দলবাজি করার জন্য বিতর্কিতদের যদি কেউ টেনে আনে, তাহলে তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে। প্রত্যেককেই জবাবদিহি করা হবে। তাদের পরিচয় ও গ্রাউন্ড জানতে হবে। হঠাৎ করে এসেই জোয়ারের সঙ্গে (মিশলে চলবে না)। ক্ষমতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ, আর কাজে কর্মে ভিন্ন—এ ধরনের লোকের আমাদের কোনো দরকার নেই।’ এ ছাড়া কোনো অপরাধীকে, অপকর্মকে প্রশ্রয় না দেওয়ার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগে নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের মূল্যায়নের ওপর জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দুঃসময়ে তাঁরাই পাশে থাকেন। সুসময়ের কোকিলরা তখন সটকে পড়ে। তাঁদের জন্য রাজনীতির পথ মসৃণ করতে হবে। তাঁদের কোণঠাসা করলে, দল কোণঠাসা হয়ে যাবে।’

জাতীয় সংসদের ঢাকায়, কুমিল্লা ও সিলেটের চারটি আসনে উপনির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ১২ তারিখে মনোনয়ন বোর্ড গড়া হবে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে। আজ থেকে মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শুরু হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবার মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীর সংখ্যা অনেক। খুব একটা অসুবিধা নেই, এ কথা মনে করে অনেকে প্রার্থিতা নিচ্ছেন। পাই আর না পাই, প্রার্থী হতে চাই, কারণ বিএনপি নেই।’ তিনি বলেন, পরীক্ষিত ও দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল এমন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। এ ছাড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও দলীয়ভাবেও করা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *