১০ দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠাল তুরস্ক

আমেরিকা, জার্মানিসহ ১০টি দেশের রাষ্ট্রদূত নাগরিক সমাজের নেতা ওসমান কাভালার মুক্তির দাবি করেছিলেন। তারপর ওই রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়েছে তুরস্ক।

গত ২০১৭ থেকে কাভালা জেলে বন্দি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০১৩ সালে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভের সাথে জড়িত ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানকেও সমর্থন করেছিলেন। ৬৪ বছর বয়সী কাভালা এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রাষ্ট্রদূতদের দাবি কী ছিল

সোমবার ক্যানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন এবং অ্যামেরিকার রাষ্ট্রদূতরা একটি বিবৃতি জারি করেন। সেখানে কাভালার মামলায় ‘দ্রুত বিচার ও ন্যায়বিচার’-এর দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে। এর ফলে তুরস্কের বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।’ তুরস্ককে বলা হয়েছে, তারা যেন কাউন্সিল অফ ইউরোপের রায় মেনে নেয়। এই মানবাধিকার সংগঠনে তুরস্ক ১৯৫০ সালে যোগ দিয়েছিল।

কাউন্সিল অফ ইউরোপ বলেছে, আগামী ৩০ নভেম্বর তাদের পরবর্তী বৈঠকের আগে কাভালাকে মুক্তি না দিলে, তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলবে এবং ব্যবস্থা নেবে।

শনিবার ব্যর্থ অভ্যুত্থান চেষ্টার বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছে তুরস্ক৷ গত বছরের ১৫ জুলাই সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থানের প্রয়াসকে রুখতে গিয়ে যে ২৫০ জন প্রাণ দিয়েছিলেন, তাদের স্মরণ করা হয়েছে শ্রদ্ধাভরে৷ সবচেয়ে বড় জমায়েত দেখা গেছে দেশটির বসফরাস ব্রিজ এবং আঙ্কারার কেন্দ্রস্থলে৷

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোনো চালু মামলায় রাষ্ট্রদূতরা কোনো সুপারিশ দেবেন, এটা মেনে নেয়া যায় না। তিনি টুইট করে বলেছেন, ‘আপনারা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তার থেকে আপনারা গণতন্ত্র ও আইন কতটা বোঝেন তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে।’

ওসমান কাভালা কে?
কাভালা একজন ব্যবসায়ী। তিনি চার বছর ধরে জেলে বন্দি। কিন্তু তার কোনো শাস্তি ঘোষণা হয়নি। ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ হিউম্যন রাইটস তাকে মুক্তি দিতে বলার পরেও কোনো কাজ হয়নি।

গত বছর ২০১৩-র সরকার-বিরোধী আন্দোলনে জড়িত থাকা সংক্রান্ত অভিযোগ থেকে তিনি মুক্তি পান। কিন্তু চলতি বছরে পুরনো রায় বদলে দেয় আদালত। এর সঙ্গে ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানে তার জড়িত থাকার অভিযোগও সামনে আনা হয়। এখন তারই বিচার চলছে।

কাভালা সংখ্যালঘু অধিকারের সমর্থক এবং তিনি সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের অভিযোগ, তিনি মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোসের হয়ে তুরস্কে কাজ করেন। এই ধনকুবের বিভিন্ন দেশে গোলমাল পাকান বলেও তার অভিযোগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *