GeneralInternationalLatestNewsTOP STORIESঅন্যান্যরাজনীতিসারাবিশ্ব

‘জনরোষ’ ও ‘গ্রেফতার’ এড়াতে যা যা করেছিলেন লংকান সাবেক প্রেসিডেন্ট

সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন গোতাবায়া রাজাপাকসে। 

তবে ক্ষমতা ছাড়ার আগে জনরোষ থেকে বাঁচতে এবং গ্রেফতার এড়াতে কঠিন সময় পাড়ি দিতে হয়েছে গোতাবায়াকে। 

শনিবার তার পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী কলম্বোতে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। তখন জনরোষ থেকে বাঁচতে নৌবাহিনীর সহায়তায় ওইদিন গোপন সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে সরকারি বাসভবন ছাড়েন সাবেক প্রেসিডেন্ট। আশ্রয় নেন নৌ ক্যাম্পে।   

এরপর শুরু হয় তার গ্রেফতার এড়ানোর মিশন। 

যেহেতু তিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফলে সাংবিধানিকভাবে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব ছিল না। তাই প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাৎক্ষণিক পদত্যাগ না করে ১৩ জুলাই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। 

এরপর দেশ ছাড়ার চেষ্টা শুরু করেন। নৌ বাহিনীর সহায়তায় সোমবার হেলিকপ্টারে করে কলম্বো এয়ারপোর্টের সঙ্গে লাগোয়া বিমান ঘাঁটিতে আসেন। সেখান থেকে মধ্যরাতে আসেন এয়ারপোর্টে। 

চেষ্টা করেন ভিআইপি  টার্মিনাল দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার। কিন্তু ভিআইপি টার্মিনালের কাস্টমস কর্মকর্তারা তার কাগজপত্রে সিল দিতে অস্বীকৃতি জানান। 

নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে সাধারণ টার্মিনালে যাননি। রাত ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এয়ারপোর্টে অপেক্ষা করে বিমান ঘাঁটিতে ফিরে আসেন। এরপর মঙ্গলবার রাতে তিনি বিমান বাহিনীর বিশেষ বিমানে করে মালদ্বীপে পালান। 

কিন্তু মালদ্বীপে গিয়েও শান্তি পাননি। সেখানে শুরু হয় বিক্ষোভ। অবস্থা বেগতিক দেখে সিঙ্গাপুরে চলে যাওয়ার মনস্থির করেন। 

নিরাপত্তার কথা ভেবে মালদ্বীপ সরকারের কাছে বিশেষ বিমান চান। কিন্তু সেটি না দেওয়া হলে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সিঙ্গাপুর যান। 

সিঙ্গাপুর থেকেই পদত্যাগপত্র পাঠান। 

গোতাবায়া রাজাপাকসে জানতেন যদি শ্রীলংকায় থাকতেন তাহলে প্রথমে সাধারণ মানুষের রোষানলে পড়তেন। এরপর হতেন গ্রেফতার। আর তাই জনরোষ ও গ্রেফতার এড়াতে তিনদিনের দীর্ঘ এক পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। 

গোতাবায়া রাজাপাকসে ২০০৯ সালে ছিলেন শ্রীলংকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ওই সময় তার নেতৃত্বে তামিল টাইগারদের দমন করে শ্রীলংকা। কিন্তু তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 
অন্যদিকে ২০১৯ সালে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তার ভুল নীতি এবং দুর্নীতিকে প্রশয় দেওয়ার কারণে লংকান অর্থনীতিতে বিপর্যয় নামে। দেশকে এমন বিপর্যয়ে ফেলার কারণে তাকে গ্রেফতার করে বিচারের সম্মুখীন করা হত। 
 
সূত্র: এনডিটিভি, বিবিসি, আল জাজিরা