কোম্পানীগঞ্জে অভিযান শুরু
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ঘটনায় জড়িতদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সেখানে ১০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে।
বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সম্মেলনে যুক্ত হন।
দলের শৃঙ্খলা না মানলে যত বড় জনপ্রতিনিধি হোন না কেন ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়ে অত্যন্ত কঠিন অবস্থানে। দলের শৃঙ্খলা না মানলে যত বড় নেতা বা জনপ্রতিনিধি হোন না কেন, দল ছাড় দেবেন না।
অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপে কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই উঠে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ত্যাগীদের দলের কমিটিতে মূল্যায়ন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ত্যাগীরা আওয়ামী লীগের প্রাণ। তাদেরকে কমিটিতে রাখতে হবে। পকেট ভারী করার জন্য বসন্তের কোকিলদের দলে না টানতে জেলা ও উপজেলার নেতৃবৃন্দের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
জনগণকে জিম্মি করে কোন কর্মসূচি দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ আমাদের শক্তি, তাদের সেবা করাই মূল লক্ষ্য।নিজেদের ব্যর্থতার দায় অন্যের ওপর চাপাতে বিএনপি সিদ্ধহস্ত, তাই তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে জনগণ ও পুলিশকে দাঁড় করিয়েছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, অব্যাহত ব্যর্থতা আর ক্ষমতার রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ে বিএনপি এখন দিশেহারা পথিকের মতো। শেখ হাসিনা সরকার জনগণের জন্য অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে বলেই জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিচ্ছে। দেশের প্রতিটি জনপদ এখন উন্নয়নে দৃশ্যমান। আগামীদিনের রাজনীতি উন্নয়ন আর সমৃদ্ধিকে ঘিরে হবে৷ অন্যদিকে বিএনপির অপরাজনীতিতে জনগণের আস্থা নেই, তাই বিএনপিকে অপপ্রচার আর অপরাজনীতি ছেড়ে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসাই জরুরি।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঐক্যবদ্ধের বিকল্প নেই, মতভেদ ভুলে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে।
আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী সভাপতি মো. মোকসেদ আলী মন্ডলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও এসএম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ৯ মার্চ বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় আলাউদ্দিন নামের এক সিএনজিচালক নিহত হয়েছেন। নিহত আলাউদ্দিনকে নিজের সমর্থক বলে দাবি করেছেন মিজানুর রহমান বাদল।
সংঘর্ষে ওসি মীর জাহিদুল হক রনি ও ছয় পুলিশসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। এদের মধ্যে জাকের হোসেন হৃদয় নামের একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। গুলিবিদ্ধ অপর ১২ জন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বসুরহাট বাজারে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নিজ কার্যালয়ের সামনে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে ও পরে বসুরহাট বঙ্গবন্ধু চত্বরে মির্জার সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ এনে বুধবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে প্রধান আসামি করে ৯৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেন ছাত্রলীগ নেতা আরিফুর রহমান।
এ মামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে ৩নং আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও এ মামলায় অজ্ঞাত ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার। তবে এ নামে কেউ আটক নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাদলের স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাকুলি বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে মিজানুর রহমান বাদল জেলা শহর মাইজদী যান। বিকালে একদল সাদা পোশাকধারী পুলিশ জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।