জাতীয় পার্টিও আ.লীগকে চায় না: জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘বর্তমানে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে চায় না, জাতীয় পার্টিও আওয়ামী লীগকে চায় না।’ আজ শনিবার দুপুরে জাপার বনানীর কার্যালয়ে দলের এক সাংগঠনিক সভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জি এম কাদের এ কথা বলেন।
জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘জাতীয় পার্টি কোনো জোটে নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গেও আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। জাতীয় পার্টির নিজস্ব রাজনীতি আছে। স্বকীয়তা নিয়েই রাজনীতির মাঠে এগিয়ে যাবে জাতীয় পার্টি।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ১৯৯১ সালের পর থেকে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে—এমন অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, ‘দুটি দলই সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে।
অধিকার হরণ করে দেশের মানুষকে জিম্মি করেছে। দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কবর দিয়েছে। তারা হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বিলাসী জীবন যাপন করে। ছোটখাটো নির্বাচনেও তারা কোটি কোটি টাকা নিয়ে মাঠে নামে।’
জাপার চেয়ারম্যান জি এম কাদের আরও বলেন, ‘১৯৯১ সালের পর সংবিধান সংশোধন করে সাংবিধানিকভাবেই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সরকারপ্রধান যা চান, তা-ই হচ্ছে, এটাকে গণতন্ত্র বলা চলে না। দুর্নীতি ও দলীয়করণের মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র এখন স্বৈরতন্ত্রের পর্যায়ে। সরকারি দল না করলে এখন আর কেউ চাকরি পায় না, ব্যবসা করতে পারে না। অথচ এই বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতেই মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল।’
জাপার চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে চায় না। কারণ, তারা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দিশেহারা মানুষ এই দুটি দলের হাত থেকে মুক্তি চায়।’ তিনি দেশের মানুষের জন্য প্রকৃত গণতন্ত্র উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
আওয়ামী লীগ দেশে ফ্যাসিবাদ চালু করেছে বলে মন্তব্য করে জাপার মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘বসুরহাটের মতো ভাগাভাগি নিয়ে সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ। ফরিদপুরের উপজেলা পর্যায়ের নেতারাও বিদেশে হাজার কোটি টাকা পাচার করে। দেশে আইনের শাসন নেই।
নির্যাতনের শিকার লেখক মুশতাক জেলখানায় মারা গেছেন। নির্যাতিত কার্টুনিস্ট কিশোর জামিন পেয়েছেন মুশতাকের মৃত্যুর পরে। দেশের মা-বোনেরা ধর্ষিত হচ্ছেন, বিচার পাচ্ছেন না। শুধু ভৌগোলিক স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়নি।’
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানান।
জাপার যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের নিয়ে এই সভা হয়। সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাপা চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী আবদুস সবুর, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ, মোহাম্মদ নোমান মিয়া, আমির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।