কবরীর অসমাপ্ত সিনেমার তাহলে কী হবে?
‘
প্রায় দুই মাস হতে চলল কবরী নেই। সেই সঙ্গে থেমে আছে তাঁর শেষ ছবি এই তুমি সেই তুমির কাজ। ছবিটার কী হবে তাহলে? ছবিটা কী অসমাপ্তই থেকে যাবে? ভক্তদের আশ্বস্ত করলেন প্রয়াত পরিচালকের ছেলে শাকের চিশতী। তিনি জানালেন, মায়ের ছবি এই তুমি সেই তুমির অবশিষ্ট কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
গতকাল বুধবার শাকের চিশতীর সঙ্গে আলাপে জানা গেল, এই তুমি সেই তুমির পাঁচটি দৃশ্য ও কিছু প্যাচওয়ার্কের শুটিং বাকি রয়েছে। দুই দিন শুটিং করলেই হয়ে যাবে। এ ছাড়া ডাবিং, সম্পাদনা, আবহ সংগীত, রং বিন্যাসসহ শুটিং–পরবর্তী আরও কিছু কাজ এখনো বাকি।
কে করবেন, প্রশ্ন করতেই চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করা কবরীর ছেলের সরাসরি জবাব, ‘আমাকেই শেষ করতে হবে। এটা আমার অনেক বড় একটা দায়িত্ব। মায়ের স্বপ্নের ছবিটি তাঁর দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।’
এই ছেলেকে নিয়ে কবরীর অন্য রকম স্বপ্ন ছিল। মায়ের উৎসাহ ও আগ্রহেই চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ে পড়াশোনা করেন শাকের। ইচ্ছা ছিল, মায়ের সঙ্গে মিলে একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানাবেন। সে কথা মনে করে আফশোস করলেন শাকের চিশতী, ‘কত স্বপ্ন ছিল আমাদের, কত পরিকল্পনা। ভেবেছিলাম, করোনার এই দুঃসময় যখন শেষ হবে, আবার পৃথিবী যখন আগের মতো হয়ে উঠবে, একে একে সব ইচ্ছা পূরণ হবে। মায়ের সঙ্গে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা বানাব। আমার প্রথম সিনেমায় অভিনয় করতে চেয়েছিলেন মা। আমার সঙ্গে কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রেও কাজ করতে চেয়েছিলেন। তিনিই আমাকে চলচ্চিত্র নিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। মায়ের সঙ্গে একটা সিনেমা বানাতে পারলাম না, জীবনে এই আক্ষেপ থেকে যাবে। এখন মায়ের রেখে যাওয়া কাজটি দিয়েই শুরু করতে হবে।
তাই তো মায়ের এই তুমি সেই তুমি ছবির অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী সবার সঙ্গে কথা বলছেন শাকের চিশতী। মায়ের প্রধান সহকারী পরিচালক আনিসুজ্জামান শামীমকে নিয়ে একদিন আলোচনায়ও বসেছেন। শিগগিরই শুটিংয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে মাঠে নেমে পড়বেন।
কবরীর এই ছবি সরকারি অনুদানে তৈরি হচ্ছে। ছেলে শাকের জানালেন, আম্মু তখনই বলেছিলেন, মন্ত্রণালয়ে ছবির একটা বড় অঙ্কের টাকা রয়ে গেছে। হাসপাতালে ভর্তির আগেই এই টাকা উঠিয়ে অবশিষ্ট কাজ করার কথা ছিল। শুটিং শুরুর আগে তাই এসব নিয়েও তাঁদের ভাবতে হচ্ছে।
অসম্পূর্ণ অনেক কাজ, অনেক স্বপ্ন রেখে ১৭ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে চলে গেছেন কবরী। আমৃত্যু চলচ্চিত্রেই সক্রিয় ছিলেন ‘মিষ্টি মেয়ে’ কবরী। ক্যামেরার সামনে পেছনে দুই জায়গাতেই কাজ করেছেন।