আন্দোলনের ‘সর্বাত্মক’ প্রস্তুতি নিন: মির্জা ফখরুল
নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের জন্য ‘সর্বাত্মক’ প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আর সময় নেই। আগামী দিনের জন্য তৈরি হোন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি।
দাবি একটাই-চলে যাও, চলে যাও, রেহাই দাও বাংলাদেশকে। পরিষ্কার কথা-অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তা না হলে এ দেশের মানুষ কীভাবে অধিকার আদায় করতে হয় তা জানে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী ?উপলক্ষ্যে এ সভা হয়।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ওদের একজন এমপি কিছুদিন আগে পার্লামেন্টে বলেছেন, বড় চোরদের চুরি দেখে ছোট চোররা এখন লজ্জা পাচ্ছে। বড় চোর হচ্ছে ওদের মন্ত্রী, বড় বড় নেতা। করোনা মানুষের জীবন নিয়ে যাচ্ছে। মানুষের জীবনের প্রশ্ন, বাঁচার প্রশ্ন, মরার প্রশ্ন। সেখানে টেস্টে চুরি, মাস্কে চুরি, পিপিইতে চুরি, ডাক্তার-নার্সদের টাকা দেওয়ার বেলা চুরি, আইসিইউ বেডে চুরি। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল চুরি।
তিনি বলেন, হাসপাতালও উধাও হয়ে গেছে। চিন্তা করতে পারেন। আবার নতুন করে একটা হাসপাতাল তৈরি করবে, ওখানে চুরি করবে, আবার কমিশন নেবে। আর ওই টাকা পাঠাবে কানাডা, মালয়েশিয়া, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে। আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, ৬ লাখ কোটি টাকা গত কয়েক বছরে দেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। এটাই আওয়ামী লীগ। বিএনপি মহাসচিব বলেন, চারদিকে তাকিয়ে দেখবেন-আওয়ামী লীগের সবাই রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এদের হাতে যদি দেশ বেশিদিন থাকে এই দেশের অস্তিত্ব থাকবে না, এ দেশ টিকবে না। ছোটবেলা আমরা পড়তাম, গানও শুনেছি-ছেলে ঘুমাল, পাড়া জুড়াল বর্গি এলো দেশে। এরা সেই বর্গি। জিয়াউর রহমানের জীবনাদর্শ দলের নেতাকর্মীদের জন্য ‘গর্ব’ উল্লেখ করে তা অনুসরণ করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে দলের নেতাকর্মীরা জেলখানায়, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশের মাটিতে। এমন অবস্থায় আমরা ভার্চুয়ালি ও আলোচনার মধ্য দিয়ে কথাই বলে যাচ্ছি। জিয়াউর রহমানের কথায় চলতে হবে-কথা কম কাজ বেশি। মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন-বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।