ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আ.লীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ, দুজন গুলিবিদ্ধ
নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ইউনিয়নের সাতপাড়া এলাকায় এ ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন সাতপাড়া গ্রামের মৃত সুরুজ খানের ছেলে শাহ আলম খান (৪৫) ও মৃত ফজল মিয়ার ছেলে কাইয়ুম মিয়া (৩০)। তাঁদের দুজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ দুজনই আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন দীপুর কর্মী-সমর্থক। দেলোয়ার এবারও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুল্লাহর সমর্থকদের সঙ্গে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, আলোকবালী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে আসাদুল্লাহর দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। কিছুদিন পরপরই দুই পক্ষের সমর্থকেরা টেঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে আলোকবালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে পুনরায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন দেলোয়ার। অন্যদিকে মো. আসাদুল্লাহও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
এ নিয়ে আজ দুপুরে সাতপাড়া এলাকায় দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্যেই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় আসাদুল্লাহ পক্ষের সমর্থকদের গুলিতে বিদ্ধ হন শাহ আলম খান ও কাইয়ুম মিয়া।
স্থানীয় লোকজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁদের দুজনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাদিরুল আমিন তাঁদের শরীর থেকে গুলি অপসারণ করেন। গুলি অপসারণ করার পর তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক নাদিরুল আমিন জানান, আলোকবালী থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুই ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের একজন কাঁধে ও অন্যজন হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। গুলি অপসারণ করার পর তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আসাদুল্লাহ বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে এত দিন নির্বাচনের মাঠে থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আজ শেষ দিনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ নিয়ে সারা দিন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যস্ত থাকায় এলাকায় সংঘটিত সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে ঘটনা শুনেছেন, কারা এতে জড়িত জানেন না।
এ ঘটনায় বর্তমান চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলোকবালীতে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছেন। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।