ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি
গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধের ঘোষণা
গণপরিবহন ও পণ্যবাহী যানবাহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এই খাতের মালিক-শ্রমিকেরা। তাঁরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যমান ভাড়ায় চালিয়ে পোষাতে পারছেন না। আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না দিলেও আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এসব পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধি করেছে সরকার। পরিবহন সূত্রগুলো বলছে, জ্বালানি তেলের নতুন মূল্যহার কার্যকর হওয়ার পর পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের মালিক-শ্রমিকেরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেছে। এসব বৈঠক থেকেই ভাড়া বৃদ্ধি না করার ঘোষণা দেওয়ার আগ পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে অধিকাংশ সংগঠনের নেতারা সরকারপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মঘট ঘোষণা করতে চান না। অনানুষ্ঠানিকভাবে বাস, ট্রাকসহ বাণিজ্যিক যানবাহন না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
বাস মালিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এই সংগঠনের মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৯ সালে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) প্রস্তাব তৈরি করে। করোনার সময় সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এর মধ্যে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাস চালিয়ে আয় দূরে থাক লোকসান গুনতে হবে। এ জন্য বিভিন্ন জেলার পরিবহন মালিকেরা বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে তাঁদের কিছু করার নেই।
ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরি, প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদ নামে সম্প্রতি একটি সংগঠন হয়েছে। তারা পণ্যবাহী যানবাহনের মালিক-শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংগঠনের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান ও সদস্যসচিব তাজুল ইসলাম জানান, মালিক-শ্রমিকেরা বাড়তি দামে জ্বালানি কিনে যানবাহন চালাতে চাইছে না। সারা দেশ থেকে ফোনে যান বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে তাঁরাও একমত হয়েছেন।
পরিবহন খাতের সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় সংগঠনগুলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও তাঁরাই বাস বন্ধ রাখা বা আনুষ্ঠানিক ধর্মঘটের সায় দিয়েছেন।
এখন বিআরটিএসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করে দাবি-দাওয়া তুলে ধরবেন তাঁরা। ভাড়া সমন্বয়ের আশ্বাস পেলে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হবে। আজ কিংবা আগামীকাল বিআরটিএর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে বলে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।