আবারও রক্তক্ষরণ হচ্ছে খালেদা জিয়ার: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলটির চেয়ারপারসন খালদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আবারও সংকটাপন্ন। আবারও তাঁর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট। মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। কারণ, তাঁর লিভার সিরোসিস এখন যে পর্যায়ে আছে, সেই পর্যায়ের উন্নত চিকিৎসা দেশে নেই। চিকিৎসকেরা এ কথা বলছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চিকিৎসকেরা বলছেন, অবিলম্বে তাঁকে (খালেদা জিয়া) যেন উন্নত চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু সরকার প্রথম থেকেই পুরোপুরিভাবে এ বিষয়টাতে একটা নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে, খালেদার চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সুস্থ অবস্থায় হেঁটে কারাগারে গিয়েছিলেন। এ কয়েক বছরে কারাগারে ও পিজিতে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) থাকা অবস্থায় তাঁর কোনো চিকিৎসা হয়নি। ফলে ২৬ দিন ধরে তিনি আইসিইউতে।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, খালেদা জিয়া যখন কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন, তখন তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। বারবার বলার পরে চিকিৎসার জন্য বোর্ড গঠন করা হয়। সেই বোর্ডও খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। পরে ব্যক্তিগত চিকিৎসকেরা যখন সেখানে যান এবং তাঁদের সুপারিশক্রমে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে আনা হয়। যতক্ষণে হাসপাতালে আনা হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

খালেদা জিয়াকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এর কারণ একটাই। খালেদা জিয়া হচ্ছেন একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বর পক্ষে কথা বলেন। এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বর জন্য জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। তিনি একমাত্র রাজনীতিবিদ, যিনি গণতন্ত্রের জন্য তাঁর সমস্ত জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। তিনি সুস্থ না হলে আমরা সুস্থ হব না। সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সব ব্যবস্থা করুন।’
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আইনের কথা বলেন, কেন মানুষকে বোকা বানাতে চান? ৪০১ ধারার যে আইনে তাঁকে আটকে রেখেছেন, সেই ধারায় শর্ত দিয়েছেন তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। ওই শর্তটা আপনারই তুলতে পারেন, আর কেউ তুলতে পারবে না। ওই শর্ত তুলে নেন এবং তাঁকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার পাসপোর্টের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে পাসপোর্ট দিয়ে খালেদাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে, কোনো অঘটন ঘটলে এর সমস্ত দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি মো. সেলিম ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গণি চৌধুরী, মো. শামীমুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোরশেদ আলম, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও–এর সভাপতি মো. রকিবুল ইসলাম প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *