খুলনায় দীর্ঘ দিন পর ছাত্রদলের ‘বাধাহীন’ কর্মসূচিতে ব্যাপক জমায়েত

খুলনা নগরের মোড়ে মোড়ে যুবক–তরুণের জটলা, তাঁদের হাতে ব্যানার-ফেস্টুন। বেলা দুইটা বাজার সঙ্গে সঙ্গে ওই জটলাগুলো পরিণত হয় মিছিলে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিলগুলো যায় নগরের কে ডি ঘোষ সড়কে থাকা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে। সেখানে ছাত্রদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন করে সংগঠনের খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটি।

সোমবার দুপুরে অনেকটা বাধাহীনভাবে ওই কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের। গত ১০ বছরের মধ্যে ছাত্রদলের এত বড় গণজমায়েত আর হয়নি বলে জানান কয়েকজন বিএনপি ও ছাত্রদল নেতা। খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটি আয়োজন করলেও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা কমিটিকে মিছিল নিয়ে ওই সমাবেশে যোগ দিতে দেখা যায়।

তবে বিএনপির একটি অংশের কয়েকজন নেতাকর্মীর অভিযোগ, কিছু দিন আগে নগর বিএনপির করা আহ্বায়ক কমিটিতে আগের সভাপতি নজরুল ইসলামকে বাদ দেওয়া হয়। বাদ দেওয়া হয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকেও। এর কিছুদিন পর নজরুল ইসলামকে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরই জের ধরে খুলনা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা গণ–পদত্যাগ করতে থাকেন। সার্বিকভাবে ওই পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ছাত্রদলের এই গণজামায়েত কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। মূলত কয়েকজন নেতার উপস্থিতি জানান দিতেই ওই কর্মসূচি।

ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান ও শামীমুর রহমান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে অরাজকতা চলছে। কেউ কিছু বলতে গেলেই সরকারি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ছে। মামলা দিয়ে হেনস্তা করছে। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ মৃত্যুশয্যায়। তাঁর সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন কিন্তু সেটাও করতে দিচ্ছে না বর্তমান সরকার। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র আসবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *