আফগানিস্তান থেকে গুলি, পাকিস্তানের ৫ সেনা নিহত

প্রতিবেশী আফগানিস্তান থেকে একটি সীমান্ত চৌকি লক্ষ্য করে ছোড়া গুলিতে পাকিস্তানের অন্তত পাঁচ সেনা নিহত ও চার সেনা আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার ইসলামাবাদ এই হামলার কথা জানায়। গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন হামলা হলো। খবর আল-জাজিরার।

আফগান তালেবানের মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালেবানের (টিটিপি) সঙ্গে ইমরান খানের সরকারের একটি অস্ত্রবিরতি চুক্তি হয়েছিল। ইসলামাবাদ এ চুক্তির প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ করে ডিসেম্বরের শুরুতে টিটিপি চুক্তি থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যায়। এরপর গোষ্ঠীটি হামলার সংখ্যা বাড়িয়েছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক সীমান্তজুড়ে থাকা জঙ্গিরা খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কুররামে পাকিস্তানের সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আইএসপিআরের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সন্ত্রাসীদের পাকিস্তানবিরোধী কর্মকাণ্ডে আফগানিস্তানের ভূমির ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে পাকিস্তান। ভবিষ্যতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা হলে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার তা হতে দেবে না বলে আশা করছে পাকিস্তান।

এদিকে জঙ্গিদের হামলার পর পাল্টা হামলায় বহু হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তবে কত জন হতাহত হয়েছেন, তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, কারণ, আফগানিস্তানের পাহাড়ি সীমান্ত জেলাগুলোতে সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সদস্যদের যাওয়ার ব্যাপারে অনেক কড়াকড়ি রয়েছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ আহমাদ বলেছেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তালেবান সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক সীমান্তে এই ধরনের জঙ্গি হামলা বন্ধ করা।

তবে আফগানিস্তানের ভেতর থেকে সীমান্তে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার।

সম্প্রতি পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের দুটি সামরিক ঘাঁটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় অন্তত ২০ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ৯ সেনা নিহত হয়েছেন। দেশটির সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এটা জানানোর এক দিন পরই আফগানিস্তান সীমান্তে এই হামলা এবং আরও ৯ পাকিস্তানি সেনাসদস্যের হতাহতের ঘটনা ঘটল।

গত বুধবারের ওই জোড়া হামলার দায় স্বীকার করেছে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। পৃথক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে কয়েক দশক ধরে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে সশস্ত্র বিএলএ গেরিলারা।