যতই জারিজুরি করুক এ সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এই সরকারকে আমাদের না বলতে হবে। যতই জারিজুরি করুক এবার এ সরকারের অধীনে কেউ নির্বাচনে যাবে না। এ বিষয়ে সকল বিরোধী দল একমত হয়েছে।
শুক্রবার (৮ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি, বিদ্যুতের সর্বনাশা লোডশেডিং এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মান্না। সেখানেই এসব কথা বলেন তিনি।
মান্না বলেন, এই সরকারকে না বলতে হবে। তারা ২০১৪ সালে একবার ফোরটোয়েন্টি ইলেকশন করেছিল। ১৫৪ জন আগেই জিতে গেছে! বিদেশিরাসহ সবাই বলেছে এটা কী? ওরা তখন বলেছে দেখো আমাদের সংবিধানের বাধ্যবাধকতা। ভোট একটা করতে হয়, তাই করেছি, এক বছরের মধ্যে আবার ভোট দেব। এক, দুই, তিন, চার বছরে ভোট দেয়নি। ২০১৮ সালে যেটা দিয়েছে কেউ কেউ বলে দিনের ভোট আগের রাতে করেছে। আমি বলি ভোট তো করেনি। পরের দিন ভোট হওয়ার কথা ছিল, আগের রাতে সেটা ডাকাতি করেছে। ওরা ভোট ডাকাত। ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে। যতই জারিজুরি করো আমরা তার মধ্যে যাচ্ছি না।
তিনি বলেন, এই দেশের সমস্ত বিরোধী দল বলেছে আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হবে না। পদত্যাগ করতে হবে। সেইখানে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসবে। সেই সরকার পরিবেশ তৈরি করবে। যাতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি আরও বলেন, বিদ্যুতের সংকট দেখছেন অথচ এখনও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যারা এখানে আছেন বা শুনছেন তাদেরকে বলি; (দূরে কয়েকজন রিকশাওয়ালাকে দেখিয়ে) ওই যে ওখানে যারা দাঁড়িয়ে আছেন তাদের ঘরে কি বিদ্যুৎ গেছে? ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ যাওয়ার মানে কি, প্রত্যেক ঘরে। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ গেছে। একটা মিথ্যা কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বলা হয়েছিল বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, ক্যাপাসিটির চেয়ে আমরা বেশি উৎপাদনের সক্ষম হয়েছি। এজন্যে তারা হাতিরঝিলে বিদ্যুৎ উৎসব করেছিল। এখন সে উৎসবের কি অবস্থা? তারা বলেছে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা হচ্ছে ২৫ হাজার মেগাওয়াট, এখন উৎপাদন করছেন কতো?
নিজেদেরে গ্যাস তা তুলে এলএনজি কেন আমদানি করা হচ্ছে প্রশ্ন রাখেন মান্না। তিনি বলেন, যেখানেই আমাদনি; বাইরের সাথে চুক্তি, যেটাই মেগা প্রজেক্ট, সেটাই লুট। এই বড় বড় লুট করতে গিয়ে তারা দেশের মানুষের ভাগ্য লুট করে নিয়ে গেছে। এখন নতুন বাহানা বের করেছে। আমেরিকা কেন স্যাংশন দিল রাশিয়ার ওপরে?
রাশিয়ার ওপর স্যাংশন দেওয়াতে আপনার অর্থনীতির কত বড় ক্ষতি হয়েছে একটা হিসাব দেখান না। আপনি অহেতুক একটা বানিয়ে কথা বললে তো হবে না। নিশ্চয়ই আমরা যুদ্ধের পক্ষে নই। কিন্তু আপনি বলবেন এটা মানবতা বিরোধী কাজ। কেন তুমি গ্যাস দেওয়া বন্ধ করেছো? ওইটা যদি মানবতা বিরোধী হয়, তাহলে বেগম জিয়া এত বছর বয়সে তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, সমস্ত ডাক্তাররা চিকিৎসার জন্য বাইরে একটা ভালো হাসপাতালের কথা বলেছেন। সেটা যে যেতে দিচ্ছেন না। সেটা কি মানবতা বিরোধী নয়? কোথা থেকে সোফিয়া নামের রোবট এনে তাকে দিয়ে বলাচ্ছেন আপনি মানবতার মা। আমরা দেখেছি না আপনার মানবতা কেমন? কেন কী কারণে র্যাবকে, পুলিশকে, আর্মির প্রধানকে স্যাংশন দেওয়া হয়েছে।
এ রাজনৈতিক আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ৭০/৭৫ বছরের একটি দল। অনেকে বলে স্বাধীনতায় নেতৃত্ব দিয়েছে। সেই দলের এখন পায়ের নিচে মাটি নেই। একটা ভোট করতে সাহস রাখে না। ভোট করলে জিততে পারবে না। এটা আওয়ামী লীগের সবচাইতে বড় পরাজয়। আর আমাদের বিজয় হচ্ছে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে প্রায় এখন নাই বললেই চলে। আর এই শক্তিতে জনগণ বলিয়ান হয়ে সামনে লড়াই করবে এবং লড়াই করে তাদেরকে পরাজিত করবে।
আয়োজক সংগঠন গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি খলিলুর রহমান ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিএনপি নেতা ফরিদ উদ্দিন, রাজিয়া আলিম, মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, সাঈদ হাসান মিন্টু, ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।