ন‌থি জা‌লিয়া‌তি: ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ

জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বদলে দেওয়ার অভিযোগে হওয়া মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মো. শাহজাহানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দিয়েছেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন।

একইসঙ্গে আদালত পলাতক দুই আসামি এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদ ও রবিউল আউয়ালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরোয়ানা তামিলের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেন৷

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মো. শাহজাহান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ব‌হিষ্কৃত সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম মুমিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা খাতুন, নাজিম উদ্দিন ও মো. রুবেল।  

দুদকের কোর্ট ইন্সপেক্টর (সহকারী পরিচালক) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
 
২০২১ সালের ৫ মে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত ৫ মে তরিকুল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমা ও ফরহাদ নামে একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় পুলিশ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিটও দাখিল করে। তবে অভিযোগ দুদকের এখতিয়ারভুক্ত হওয়ায় পরে কমিশনের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। গত ২৫ এপ্রিল দুদক ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেয়।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ পদে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। এই নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করার পর তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।

পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য নথিটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে এলে তিনি এম আবদুস সালাম আজাদ অনুমোদন পাননি বলে ফোনে তরিকুলকে জানিয়ে দেন।

এরপরই তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কৌশলে বের করে ফরহাদ নামে একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। সেই নথিতে তরিকুল ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।

এ কাজের জন্য ফাতেমাকে আসামিরা ১০ হাজার করে বিকাশে মোট ২০ হাজার টাকা দেন বলে অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ৩ মার্চ আসামিরা নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠায়। তবে একপর্যায়ে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।