১১ প্রাণ ঝরার পর সেই রেলগেটে বাড়তি সতর্কতা

১১টি তাজা প্রাণ ঝরার পর চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের সেই রেলগেটের গেটম্যান সাদ্দাম আটক হওয়ায় এখন অপর গেটম্যান বাড়তি সতর্কতার সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, এলাকাবাসীও হয়েছেন সতর্ক। 

বারৈয়াঢালা বন উদ্যানের সভাপতি সরোয়ার হোসেন বলেন, রেলগেটে দুর্ঘটনার পর মেহরাজ নামের গেটম্যান কাজ করছেন। বর্তমানে সে ট্রেন আসার পূর্ব থেকে ট্রেন গেট পার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন এটাই গেট সুরক্ষিত রাখার নিয়ম। এমন সচেতনতা পূর্ব থেকে থাকলে ১১টি প্রাণ এভাবে হারাতে হতো না।  

বড়তাকিয়া স্টেশনের স্টেশনমাস্টার সামছুদ্দোহা বলেন, দুর্ঘটনাস্থলের খৈয়াছড়া রেলগেটে সবসময় গেটম্যানের তৎপরতা বৃদ্ধিসহ অতিরিক্ত গেটম্যানের প্রস্তাব ও পেশ করা হয়েছে। 

জুমার নামাজ পড়ে এসে দুর্ঘটনা দেখেই নিজে ও এলাকাবাসী সেজে জীবিত-মৃত ব্যক্তিদের টেনে বের করেছিল গেটম্যান সাদ্দাম। আহতদের হাসপাতালের পাঠানোর ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি দেখে গা-ঢাকা দিয়েছিল। পরে জিআরপি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী  জসিম উদ্দিন বলেন, মীরসরাইয়ে রেললাইনের লেভেল ক্রসিংয়ে যখন দুর্ঘটনা ঘটে, তখন ভাত খাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনার বিকট শব্দ শুনে তাড়াতাড়ি বের হই এবং দেখি ৪ যুবক আহতাবস্থায় লেভেল ক্রসিংয়ের পশ্চিম পাশে লাফাচ্ছে। তখন আমিসহ ৪-৫ জন গিয়ে তাদের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠাই।  

শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন রেললাইন সংলগ্ন দোকানের কর্মী জসিম উদ্দিন।

জসিম উদ্দিন বলেন, রেললাইনের উপরে উঠে দেখি মহানগর প্রভাতি ট্রেন দাঁড়িয়ে আছে। সামনে গিয়ে দেখি ইঞ্জিনের সামনে একটি সাদা মাইক্রো ঝুলছে। ভেতরে যাত্রীরা মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। আমরা তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করি। তখন গেটম্যান সাদ্দাম হোসেন জুমার নামাজের পড়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও আমাদের সঙ্গে উদ্ধার কাজে অংশ নেন।

জসিম উদ্দিন আরও বলেন আজকে শুনে ভালো লাগছে যে, আমরা আহত যে ৪ জনকে উদ্ধার করেছি তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত।  

আবার রেলগেটের চা দোকানি ভোলা মিস্ত্রি বলেন, প্রায়ই গেট বন্ধ করার পরও কোনো কোনো গাড়ি নিজেরা গেট খোলা নিয়ে গেটম্যানদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা এবং ঝগড়া হয়ে থাকে।