শি জিনপিংয়ের উত্তরসূরি কে হবেন? বাড়ছে জল্পনা
গত ১০ বছর ধরে চীনের যাবতীয় ক্ষমতার চাবিকাঠি রয়েছে শি জিনপিংয়ের হাতে। গবেষকদের দাবি, ‘শীতলযুদ্ধ’ উত্তর বিশ্বে চীনকে শক্তিশালী করে তোলার নেপথ্য করিগর তিনিই। আর্থিক ও সামরিক — সমান তালে দু’দিকের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন জিনপিং। অনেকের এমনও দাবি, ২১ শতকের বিশ্বে সুপার পাওয়ার আমেরিকাকে যদি কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে, তবে সে হল চীন। কিন্তু, এর মাঝেই নিঃশব্দে অন্য বিপদ উঁকি দিতে শুরু করেছে ড্রাগনল্যান্ডে। শি-র মতো শক্তিশালী নেতা আর তৈরি করতে পারেনি তার দল। সে ক্ষেত্রে জিনপিংয়ের উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
সম্প্রতি ‘কমিউনিস্ট পার্টিস বিগ বার্থ ডে’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই নিয়ে মুখ খোলেন লন্ডনে কর্মরত এক অধ্যাপক। স্টিভ সাং নামে ওই গবেষকের দাবি, শক্তিশালী নেতা যে তৈরি হয়নি, দেরিতে হলেও এই সত্যটা বুঝেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। তাই নভেম্বরে ২০তম পার্টি কংগ্রেসে উত্তরসূরির নামে নিজেই ঘোষণা করবেন শি।” সেক্ষেত্রে হু চুনহুয়া নামে পলিটব্যুরোর সবচেয়ে তরুণ তাত্ত্বিক নেতার নাম ঘোষিত হতে পারে বলে দাবি করেছেন তিনি। এর পিছনে একাধিক যুক্তি রয়েছে লন্ডনের অধ্যাপকের। তার কথায়, “দলের মধ্যে থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ উঠে আসুক, এমনটা চান না শি। কপি বুক পলিটিশিয়ানই বেশি পছন্দ তার। আবার পার্টি চায়, উত্তরসূরিকে নিজের হাতে গড়ে নিক শি। বুঝিয়ে দিক প্রশাসনের মারপ্যাঁচ। বা দুনিয়াদারির দাবার চাল। যাতে তিনি সরলেও বিশ্বে অটুট থাকে চীনের উত্থান।”
‘নিন্দুক’-দের এসব জল্পনায় অবশ্য কান দিচ্ছে না জিনপিংয়ের গোঁড়া সমর্থকদের দাবি, আস্তিনে লুকানো তাস এখনও বেরই করেননি শি। শতবর্ষ পেরিয়ে যাওয়া পার্টির পতন তো আর সহজ নয়। কে বলতে পারে, পলিটব্যুরোর তালিমে হয়তো নেতৃত্বের যোগ্য হয়ে উঠছেন প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়ং। সূত্র: টিওআই।বেইজিংয়ে কর্মরত ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-র সাংবাদিক মেলিন্ডা লুইয়ের অবশ্য দাবি, গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পড়তে হতে পারে চীনকে। সেক্ষেত্রে গোটা ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে গিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে পারে বলেও দাবি করেছেন তিনি। লুইয়ের কথায়, “হংকং ও তাইওয়ানকে জোর করে দখল করতে চাইছেন শি। তার জন্য সেনার পিছনে পানির মতো খরচ হচ্ছে টাকা। পাশাপাশি ঋণের জালে জড়িয়ে একাধিক দেশকে কব্জা করতে গিয়েও অর্থনীতিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। যার ফলশ্রুতিতে চীনা জনগণের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার নির্দেশ দিতে হয়েছে বেইজিংকে। আর এরই প্রতিবাদে শ্যানডং প্রদেশে রাস্তা নামে মানুষ।” এই বিক্ষোভ ঠেকাতেই ৩৩ বছর পর পিএলএ-কে ট্যাঙ্ক নামাতে হয়েছে রাস্তায়।