ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে দুই পক্ষের মারামারি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বিদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে সংগঠনের দুটি শাখার মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে ওই মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মহানগর দক্ষিণ শাখার নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাতে ছাত্রলীগের আনন্দ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি উপলক্ষে শুক্রবার দুপুর থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজির হতে থাকেন সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা। সমাবেশস্থলের সাউন্ড সিস্টেমে দুপুর থেকে বাজছিল দেশাত্মবোধক গান। বিকেল চারটার দিকে সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ করে স্লোগান শুরু করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা। সাউন্ড সিস্টেমের দায়িত্বে থাকা দুজন কর্মী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের বরাত দিয়ে বলেন, তাঁরা গান চালু রাখতে বলেছেন। এ নিয়ে মহানগরের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের মারধর শুরু করেন মহানগরের নেতা–কর্মীরা। এ সময় ৩০-৪০ জন আহত হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমেদ সোহানের অভিযোগ, জুবায়ের আহমেদের নির্দেশে তাঁর অনুসারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একজন সহসম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুবায়েরের অনুসারীরা একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকেও মারতে যান। ওই পরিস্থিতিতে সাদ্দাম ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেতা–কর্মীদের উজ্জীবিত করতে স্লোগান দেওয়ার জন্য আমি সাউন্ড সিস্টেম ১০ মিনিটের জন্য বন্ধ রাখতে বলি। একে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কিছু নেতা–কর্মী আমার ওপর হামলা করে। এতে আমার গাল কেটে গেছে। এ সময় উত্তেজিত হয়ে আমার নেতা–কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা–কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের ওপর কোনো হামলা করা হয়নি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উদযাপনের মতো মহৎ একটি কর্মসূচিতে এ ধরনের হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিরোধী এই কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা ও যথাযথ বিচার চাই আমরা।’

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেন, তাঁরা ঘটনাটির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *