সাংসদ জাফরকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
কক্সবাজার-১ আসনের সাংসদ ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চকরিয়া ও পেকুয়ার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন সাংসদের অনুসারী দলীয় নেতা-কর্মীরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলের কার্যালয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
জেলা আওয়ামী লীগের সভায় বলা হয়, গত মঙ্গলবার রাতে চকরিয়া পৌরসভার চিংড়ি চত্বর এলাকায় সাংসদ জাফর আলমের নেতৃত্বে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করা হয়। একই সঙ্গে চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরীর ওপরও হামলা হয়। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। এ অভিযোগে সাংসদ জাফর আলমকে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, জাফর আলম যখন-তখন নেতা-কর্মীদের গায়ে হাত তোলেন। তাঁর কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তাঁকে উপজেলা সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত মঙ্গলবার সাংসদের অনুসারী চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা কমিটি। এর জের ধরে মেয়র আলমগীর চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে মেয়র নিজে ও সাংসদের পক্ষে জাহেদুল ইসলাম পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে একে অপরকে দোষারোপ করেন।
জাফর আলম যখন-তখন নেতা-কর্মীদের গায়ে হাত তোলেন। তাঁর কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তাঁকে উপজেলা সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
জানতে চাইলে মুজিবুর রহমান আরও বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত মঙ্গলবার অব্যাহতি দেওয়া হয় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলামকে। এই সিদ্ধান্তটিও বহাল রয়েছে।
অন্যদিকে কক্সবাজার জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গায়ে হাত তোলায় ডুলাহাজারা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসানুল ইসলামকেও বহিষ্কার করা হয়েছে।
হাসানুল ইসলামও সাংসদের অনুসারী। মেয়রকে লাঞ্ছিত করার ঘটনার দিন সাংসদের সঙ্গে ছিলেন তিনি।
এদিকে জাফর আলমকে অব্যাহতি দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন নেতা-কর্মীরা। রাত সাড়ে নয়টা থেকে মহাসড়কের চকরিয়া থানার রাস্তার মাথা, জিদ্দা বাজার, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, বরইতলী রাস্তার মাথা, হারবাং এবং পেকুয়া উপজেলার মগনামা, টৈটং ও পেকুয়া চৌমুহনী এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখেন তাঁরা। রাত ১১টার পর তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।
গত মঙ্গলবার সাংসদের অনুসারী চকরিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা কমিটি। এর জের ধরে মেয়র আলমগীর চৌধুরীকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, চকরিয়া থানা রাস্তার মাথা এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় সড়কের দুই দিকে হাজারো যানবাহন আটকে পড়েছে। সেখানে কয়েকজন মুখোশধারী ফাঁকা গুলি করেছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকের মুহাম্মদ যুবায়ের রাত সাড়ে দশটায় প্রথম আলোকে বলেন, যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।