প্রচার শুরুর আগেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে যে উপনির্বাচন

প্রতীক বরাদ্দের আগেই নির্বাচনী মাঠে সরব চার প্রার্থী। আছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।

  • আজ ২৪ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৫ জুন। আসনটিতে চারজন প্রার্থী আছেন।
  • চার প্রার্থী হলেন আ.লীগের হাবিবুর রহমান, জাপার আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী।

নির্বাচন
নির্বাচন 

একে তো উপনির্বাচন, তার ওপর বিএনপি নেই। তাই অনেকে ভেবেছিলেন, উত্তাপহীন একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। কিন্তু হয়েছে উল্টো। প্রতীক বরাদ্দের আগেই নির্বাচনী মাঠে সরব প্রার্থীরা। একে অপরের প্রতি পাল্টাপাল্টি অভিযোগও করছেন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে’। নির্বাচন কমিশন গতকাল বুধবার তাঁর অভিযোগটি খারিজ করে দেয়। ফলে প্রার্থিতা বহাল থাকল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর।

রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, সিলেটের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও মেজাজ দেশের অপরাপর অঞ্চলের চেয়ে ভিন্ন। দলের পাশাপাশি এখানে ব্যক্তিরও মূল্যায়ন করে অনেক ভোটার। এই আশায় প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী। নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। তিনি এ আসনে বিএনপির টিকিটে দুবার সাংসদ হন। গত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর কাছে হেরে যান।

জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান এ আসনে দুবার নির্বাচন করলেও পরাজিত হন। সর্বশেষ ২০০৮ সালে তিনি তৃতীয় হন। সে নির্বাচনেও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বিজয়ী হয়েছিলেন এবং দ্বিতীয় হয়েছিলেন শফি চৌধুরী। উপনির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। স্থানীয়ভাবে সজ্জন ও উন্নয়নবান্ধব নেতা হিসেবে তৃণমূলে তাঁর পরিচয়।

দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে কাজ করছি। সততা ও ভদ্রতার সঙ্গে রাজনীতি করছি। দলের সবাই পাশে আছেন। যাঁরা দলনিরপেক্ষ মানুষ, তাঁরাও আমাকে সমর্থন করছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোটের মাঠে তুলনামূলকভাবে অভিজ্ঞ শফি আহমদ চৌধুরী ও আতিকুর রহমান প্রার্থী হওয়ায় পরিস্থিতি বদলে গেছে। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হবে।

এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন নবীন-প্রবীণ ২৫ জন নেতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তিনবারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহউদ্দিন সিরাজও। অপেক্ষাকৃত নবীন হাবিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেলে মনোনয়নবঞ্চিতরা নীরব হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে সবার আগে নীরবতা ভাঙলেন মিসবাহউদ্দিন সিরাজ। গতকাল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে এক বিবৃতিতে তিনি দলীয় প্রার্থীর বিজয়ে মাঠে নামবেন বলে ঘোষণা দেন। তিনি নৌকার বিজয়ের জন্য নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

গত মঙ্গলবার দুপুরে হাবিবুর রহমান ও শফি আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা উভয়েই তখন গণসংযোগে ছিলেন। শফি আহমদ বলেন, ‘বিএনপি ছিল জনবান্ধব দল। কিন্তু একের পর এক নির্বাচন বর্জন করায় জনবিচ্ছিন্নতা তৈরি হচ্ছে। এলাকার মানুষ আমাকে চাচ্ছেন, তাই প্রার্থী হয়েছি। ইভিএমে নির্বাচন হবে, তাই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলেই প্রত্যাশা করছি। এটাই আমার শেষ নির্বাচন।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে কাজ করছি। সততা ও ভদ্রতার সঙ্গে রাজনীতি করছি। দলের সবাই পাশে আছেন। যাঁরা দলনিরপেক্ষ মানুষ, তাঁরাও আমাকে সমর্থন করছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *