বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্ভব নয়
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনার কথা বলছেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি হারুন আল রশিদ বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দল ও সরঞ্জাম প্রয়োজন। সে জন্য চিকিৎসক এনে তাঁর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। তারা বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করার কথা কালক্ষেপণ ও সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করার জন্য বলছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা উপস্থাপন, বিদেশে সুচিকিৎসা ও স্থায়ী মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড্যাব সভাপতি। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
হারুন আল রশিদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার যে অসুস্থতা, তাঁর যে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, কয়েকবার রক্তক্ষরণ হয়েছে। এটা এমন একপর্যায়ে আছে, এখানে কালক্ষেপণ করার সুযোগ নেই। তাঁর চিকিৎসা পুরোটাই একটা টিম ওয়ার্ক। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির জায়গায় জায়গায় এই চিকিৎসা হয় না, দু-একটা সেন্টারে হয়। এটা টোটাল একটা টিম ওয়ার্ক। যদি চিকিৎসক আনা হয়, তিনি বলবেন, আমি তো একা পারব না। ওই টিমে যে নার্স, ওয়ার্ডবয়, যন্ত্রপাতি—প্রত্যেকেই ইকুইপড (প্রশিক্ষিত)। একজনের ভুলে পুরো জিনিস পণ্ড হয়ে যেতে পারে। সে জন্য যারা বলছে যে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করানোর যেতে পারে, এটা কালক্ষেপণ এবং সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করা। সরকার যেহেতু বিদেশে যেতে দিতে চাইছে না, সে জন্য তাকে ব্যাকআপ দেওয়া।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্যাব সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়ার নিয়োজিত চিকিৎসক প্যানেলের সদস্যরা দেশের প্রথিতযশা যত চিকিৎসক আছেন, তাঁদের মধ্যে স্বনামধন্য। তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, তাঁর বাংলাদেশে চিকিৎসা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। এমনকি উপমহাদেশেও সম্ভব নয়। এর বিপক্ষে সরকারের অবস্থান যা, ঠিক তারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে বিএমএ। তারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
এ সময় ড্যাবের মহাসচিব মো. আবদুস সালাম বলেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে। লিভার সিরোসিস তো দূরের কথা, বাংলাদেশে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট পর্যন্ত হয় না। আজ পর্যন্ত দুটি ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়েছে, তার মধ্যে একজন মারা গেছে, আরেকজন আরেকজনের অবস্থা ভালো নয়। সুতরাং লিভার সিরোসিসের চিকিৎসা বাংলাদেশে হয়, এটা ভুল তথ্য।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার তথ্য তুলে ধরে হারুন আল রশিদ বলেন, ‘যে সর্বশেষ খবর জেনেছি, তাঁর হিমোগ্লোবিনের লেভেল কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, সেগুলোর রেজাল্ট এখনো আসেনি। তাঁর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে গত পরশু রাতে তাঁর আবারও রক্তক্ষরণ হয়েছে। সে কারণেই হয়তো হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কিছুটা কমেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ড্যাবের মহাসচিব মো. আবদুস সালাম। লিখিত বক্তব্যে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার মৌলিক সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।