বহু বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল
পল্লবীর আতঙ্ক ‘জার্সি বাহিনী’
নেতৃত্বে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাপ্পী, শীর্ষ নেতা কিলার সুমন কারাগারে, সেকেন্ড ইন কমান্ড আড্ডু এলাকায় প্রকাশ্যে
রাজধানীর পল্লবী এলাকায় রীতিমতো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ। খুন, দখল, চাঁদাবাজি তাদের কাছে মামুলি বিষয়। যখন-তখন অস্ত্র হাতে তাণ্ডব চালানো পেশাদার সন্ত্রাসী গ্রুপটির নাম ‘জার্সি বাহিনী’। স্থানীয়দের কাছে বাহিনীর সদস্যরা ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি গ্রুপ নামেও পরিচিত।
সূত্র বলছে, এই বাহিনীর উত্থানের নেপথ্যে আছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ক্ষমতাধরদের অনেকে। বিশেষ করে জার্সি বাহিনীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং পল্লবী থানা যুবলীগের সভাপতি তাইজুল ইসলাম ওরফে বাপ্পির নাম বলছেন অনেকে।
এছাড়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসাবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী ওরফে আড্ডু ওরফে মুগরিয়া আড্ডু রাজনৈতিক শেল্টারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। জার্সি বাহিনীর অন্যতম নেতা সুমন ওরফে কিলার সুমন সম্প্রতি র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পল্লবী এলাকায় প্রায় সব অপরাধ কর্মকাণ্ডে জার্সি বাহিনীর হাত রয়েছে। তাদের প্রধান কাজ দখল বাণিজ্য। বিশেষ করে বাড়ি, জমি, দোকান, রিকশা গ্যারেজ, ফ্ল্যাট দখল এবং পালটা দখলের চুক্তিতে ভাড়া খাটে জার্সি বাহিনী। এছাড়া মাদক ব্যবসা, চুরি-ছিনতাই, অটোরিকশার টোকেন বাণিজ্য এবং এলাকায় ত্রাস সৃষ্টির ভূরিভূরি অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় ডিস, ইন্টারনেট, ফুটপাত, যাত্রীবাহী বাস থেকে বিশেষ কৌশলে টাকা আদায় এবং অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড, হিউম্যান হলারে চাঁদাবাজির সঙ্গেও জড়িত জার্সি বাহিনী।
দখলে সিদ্ধহস্ত : গোপনে বা রাতের আঁধারে নয়, জার্সি বাহিনীর সদস্যরা অন্যের জমি বা বাড়ি দখলে নিতে প্রকাশ্যে হামলা চালায়। তবে কৌশল ভিন্ন। কারও সম্পত্তি দখলের আগে বাহিনীর কয়েকজন সদস্য জার্সি-প্যান্ট পরে আশপাশের রাস্তায় টহল দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে রাস্তা বন্ধ করে তাদের ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। এ সময় বাড়ির মালিককে অন্যত্র চলে যেতে সময় বেঁধে দেয় তারা। এরপরও বাড়ি খালি না হলে আকস্মিক হামলা শুরু হয়। এ কারণে জার্সি বাহিনীর সদস্যরা কোনো এলাকায় অবস্থান নিলে আশপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকেই বুঝে নেন সেখানে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। এভাবে পল্লবী এলাকার অসংখ্য বাড়ি, প্লট, দোকান, রিকশা গ্যারেজ বেদখল হয়েছে।
এর মধ্যে আছে ৫ নম্বর অ্যাভিনিউয়ের ১৭ নম্বর রোডে লিয়াকত আলী নামের অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মকর্তার বাড়ি। এ বাড়িটি দখলে নিতে ১১ ফেব্রুয়ারি হামলা চালায় জার্সি বাহিনীর সদস্যরা। বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আড্ডুর নেতৃত্বে ৩০০-৪০০ সন্ত্রাসী আকস্মিক হামলা চালায়। ঘটনার পর আড্ডুসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ১২ ফেব্রুয়ারি পল্লবী থানায় মামলা করা হয়। কিন্তু অদ্যাবধি একজন আসামিও গ্রেফতার হয়নি।
রোববার সেখানে সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছে। একদিকে কাত হয়ে পড়ে আছে টিনের চালা। ঘরের দরজা ও জানালাও ভাঙা। বাড়ির মালিক লিয়াকত আলী যুগান্তরকে বলেন, আড্ডুর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাড়িতে আকস্মিক হামলা করে। এ সময় পুলিশকে ফোন করলেও তারা আসেনি। একপর্যায়ে ৯৯৯-এ কল করা হলে দীর্ঘসময় পর ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ এলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অবশ্য পুলিশ আসার পর সন্ত্রাসীরা অন্যত্র চলে যায়।
সূত্র বলছে, একই কায়দায় মল্লিকা আবাসিক এলাকায় মালয়েশিয়া প্রবাসী সেলিমের ৪ কাঠার প্লট দখল করা হয়। ঘটনা জানতে পেরে তড়িঘড়ি দেশে আসেন সেলিম। প্রতিকার পেতে থানা পুলিশ থেকে শুরু করে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও অভিযোগ দেন তিনি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে জার্সি বাহিনীর হাতে চাঁদা হিসাবে ৯০ লাখ টাকা দেওয়ার পর তার প্লট রক্ষা হয়।
সাধারণ মানুষ ছাড়াও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জমিও দখলের তালিকা থেকে বাদ যায়নি। রাজউকের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু আব্দুল্লাহর মূল্যবান ১ বিঘা জমি দখলের পর সেখানে ফুয়েল স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রাণভয়ে আবু আব্দুল্লাহ সপরিবারে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কালসী মোড়ে আবু আবদুল্লাহর জায়গাটি দখলে নিতে একটি চক্র মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা জমি দখলে জার্সি বাহিনীর সঙ্গে ৪ কোটি টাকার চুক্তি করে। একপর্যায়ে জমি দখলের তৎপরতা শুরু হয়। উপর্যুপরি হামলা ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে আবু আব্দুল্লাহ তার জমিতেই আসতে পারেননি। বিভিন্ন জায়গায় দেনদরবার করেও ব্যর্থ হন। এমনকি থানায় একটি জিডি পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে আবু আবদুল্লাহ দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ২০১৮ সালে তার জায়গাটি পুরোপুরি বেদখল হয়ে যায়। সেখানে এখন একটি ফুয়েল স্টেশন নির্মিত হয়েছে।
এছাড়া পল্লবী ১১ নম্বর সেকশনের এ ব্লকের একটি গার্মেন্ট ফ্ল্যাক্টরিও দখল করা হয় অস্ত্রের মুখে। গ্রিন নিট নামের ফ্যাক্টরির মালিক ছিলেন রফিকুল ইসলাম। যুবলীগ নেতা বাপ্পির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে রফিকুলকে ফ্যাক্টরি থেকে বের করে দেন। মাত্র ৩ মাস আগে এ ঘটনা ঘটলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি থানা পুলিশ। অথচ প্রকাশ্যে হামলায় অংশ নেন জার্সি বাহিনীর সন্ত্রাসী আড্ডু, কিলার সুমন, সাদেক, সাহাব উদ্দীন ও ইকবাল হাওলাদার।
ঝুট বাণিজ্য : মিরপুর ও পল্লবী এলাকার অন্তত ২৫টি গার্মেন্ট জার্সি বাহিনীর হাতে জিম্মি। গার্মেন্ট থেকে ঝুট কাপড় নামায় তারা। বিশেষ করে বৃহদাকার গার্মেন্ট ইপিলিয়ন, ইভেঞ্জ, আজমত, ম্যাক্স-২০০০, শরৎ, আলানা, পূরবী অ্যাপারেলস, ডেকো ইন্টারন্যাশনাল থেকে ঝুট নামিয়ে নিয়ে যায় জার্সি বাহিনীর সদস্যরা। সূত্র বলছে, একটি ট্রাকে ১২০ বস্তা ঝুট কাপড় ওঠে। ওজন হয় ৮০ থেকে ৯০ কেজি। বস্তাপ্রতি ঝুট বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। কিন্তু তাদেরকে নামমাত্র মূল্যে ঝুট কাপড় দিতে বাধ্য হন গার্মেন্ট মালিকরা। অন্যথায় ব্যবসা করা কঠিন। ঝুট কাপড় বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় জার্সি বাহিনীর সদস্যরা। গার্মেন্ট ঝুটভর্তি ট্রাকের গেট পাশ হয় যুবলীগ নেতা বাপ্পির নামে। এছাড়া সাহাব উদ্দিন ওরফে শিবির সাহাব ওরফে বরিশাইল্লা সাহাবের নেতৃত্বে ঝুট নামানোর কাজ চলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গার্মেন্ট ঝুট নামানো নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাসী তৎপরতা চলে। এ নিয়ে অন্তত ৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে মোহন মার্ডার কেস চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড হিসাবে পরিচিত।
সূত্র বলছে, গার্মেন্ট থেকে ঝুট নামানোর নেপথ্যে আছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং যুবলীগ নেতা তাইজুল ইসলাম বাপ্পি। সম্প্রতি চাঁদাবাজি ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন লাক্কু। তবে শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে তিনি জিডি প্রত্যাহার এবং আপস করতে বাধ্য হন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওলাদ হোসেন লাক্কু সোমবার যুগান্তরকে বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাপ্পি তাকে ব্যবসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেন। অন্যথায় তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দেন তিনি। একপর্যায়ে ভারতে পলাতক মিরপুরের সন্ত্রাসী মুক্তার ফোন করে তাকে হুমকি দেন। বলেন, বাপ্পি ভাইয়ের কথামতো কাজ না করলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লাক্কু বলেন, আমার ছেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সেও ছাত্রলীগের নেতা। কিন্তু সন্ত্রাসী নয়। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে বাপ্পির সঙ্গে আপস করতে বাধ্য হয়েছি। এছাড়া সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল না।
মাদকের অভয়ারণ্য : পল্লবী এলাকায় মাদকের বিস্তার ভয়াবহ। স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণও জার্সি বাহিনীর হাতে। মোটরসাইকেলে হোম ডেলিভারিতে ইয়াবা, হেরোইন ও ফেনসিডিল পৌঁছে দেয় তারা। জার্সি বাহিনীর সদস্য সুজন এবং তার সহযোগী রাসেল হক ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। দুজনের বিরুদ্ধেই পল্লবী থানায় অর্ধডজন মাদক মামলা রয়েছে। হতদরিদ্র ঘরের সন্তান সুজন আগে বস্তিতে থাকতেন। তার মা ফুটপাতে কলা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু বর্তমানে তাদের সেই অবস্থা নেই। এখন তারা লালমাটিয়া এ ব্লকে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বাসিন্দা।
সূত্র বলছে, স্থানীয় চলন্তিকা বস্তিতে মাদকের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল জার্সি বাহিনীর সদস্য নজু ও ফরিদ আলমের হাতে। ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বরে নজু র্যাবের ক্রসফায়ারে মারা যান। তার সহযোগী ফরিদ আলম নেপালে পালিয়ে যান। এরপরও মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়নি। বর্তমানে বস্তির মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন জার্সি বাহিনীর সদস্য মাজেদ ও দুলাল।
পুলিশ বলছে, জার্সি বাহিনীর কয়েকজন কিশোর সদস্য মাদক বেচাকেনা ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। তাদের মধ্যে আছে আলামিন, বাহাদুর, সুমন ওরফে গাঁজা সুমন, অনিক, জালাল ও নয়ন মাহমুদ। এদের মধ্যে আলামিন থাকে ১১-এর ই ব্লকের ডিউকের প্লটে। বাকিরা পলাশ নগরের বাসিন্দা। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন টানা পার্টিতে নাম লিখিয়েছে। যাত্রীবাহী রিকশা থেকে মেয়েদের অলংকার ও ভ্যানিটি ব্যাগ হ্যাঁচকা টানে ছিনিয়ে নেয় তারা। এছাড়া এলাকার বাসা-বাড়িতে গ্রিল কেটে চুরির সঙ্গে জড়িত জার্সি বাহিনীর সদস্যরা। গ্রিল কাটায় সিদ্ধহস্ত এ ব্লকের বাসিন্দা চোরা আমিরের ছেলে চোরা রতন।
বাস ব্যাক মানি : মিরপুর-১২ ও পল্লবী থেকে প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন রুটে শত শত যাত্রীবাহী বাস ছাড়ে। যাত্রীদের কাছ থেকে বাসের ভাড়া আদায়ে খুচরা টাকার প্রয়োজন হয়, যা বাস ব্যাক মানি নামে পরিচিত। আগে বাস কোম্পানিগুলো ব্যাংক থেকে ১০ টাকা এবং ৫ টাকার নোটসহ খুচরা পয়সা ভাঙিয়ে আনত। কিন্তু এখন ব্যাংকে যাওয়ার উপায় নেই। স্থানীয় জার্সি বাহিনীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন দিয়ে ভাঙতি বা খুচরা টাকা নিতে হয়।
তিতাস পরিবহণের এক ম্যানেজার যুগান্তরকে বলেন, ৪০০ টাকার ভাঙতি নিতে হলে ৫০০ টাকা লাগে। অর্থাৎ প্রতি হাজারে ২০০ টাকা কমিশন। পল্লবী থেকে প্রতিদিন অন্তত ২০০ বাস ছাড়ে। প্রতিটি বাস ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ভাঙতি নেয়।
সূত্র বলছে, পল্লবী থেকে ছেড়ে যাওয়া শিকড় পরিবহণ, খাজাবাবা, বিহঙ্গ, নূরে মক্কা, আকিজ, বসুমতি, রবরব ও শেখর পরিবহণ থেকে খুচরা দেওয়ার নামে চাঁদা আদায় করা হয়। এজন্য ৫টি পয়েন্টে ভাঙতি টাকার কাউন্টার বাসানো হয়েছে। কালসী মোড়, পূরবী এবং ১০, ১১ ও ১২ এলাকায় কাউন্টার রয়েছে। ভাঙতি টাকার নামে কমিশন আদায়ের দায়িত্বে রয়েছেন স্থানীয় সন্ত্রাসী ইকবাল হাওলাদার এবং বাবু ওরফে বিএনপি বাবু।
জার্সি বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আছেন কিলার সুমন, ইকবাল হাওলাদার, আড্ডু, কিলার সাইফুল, সুজন, রং জলিল, জিয়া, দুধ সোহেল, আলমগীর, মিল্ক ভিটার শাহজাহান, ইয়াবা রাসেল, পাপা, উমর, পারভেজ, এরশাদ, জয়, শুক্কুর মাদবর, বিএনপি চঞ্চল, গাজা সুমন, বাংলা অনিক, সজল, সাহিন, কিশোর গ্যাং বাহাদুর, জাসাস কোকন।
সূত্র বলছে, বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড মুগরিয়া আড্ডু চাঁদাবাজির জন্য রীতিমতো অফিস খুলেছেন। পল্লবী এলাকায় তার দুটি সুসজ্জিত অফিস রয়েছে। এর একটি পল্লবীর ৫ নম্বর অ্যাভিনিউয়ে। আরেকটি ১১ নম্বর সেকশনের বি ব্লকে। ফুটপাত দখল করে নির্মিত একটি অফিসে চোখ ধাঁধানো লাইটিং আর ডেকোরেশনে অন্তত ১০ লাখ টাকা খরচ হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোমবার রাতে তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পি যুগান্তরকে বলেন, রাজনৈতিক কারণে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। যদি সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকে তবে আপনারা সরেজমিন এসে তদন্ত করে দেখেন। নিশ্চয় সত্যতা পাবেন না। স্থানীয় সন্ত্রাসী আড্ডুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, একই এলাকায় বসবাস করার কারণে আড্ডু আমার কাছে আসে। তবে তার সঙ্গে বিশেষ কোনো সম্পর্ক নেই। কিলার সুমনকে তিনি চেনেন না বলে দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে যুবলীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, তাইজুল ইসলাম বাপ্পীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের অবহিত করে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।