সিনহা হত্যার ঘটনাক্রম
করোনাভাইরাস মহামারীর অন্যরকম এক কোরবানি ঈদের ছুটির আমেজের মধ্যেই ঘটে ঘটনাটি; পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়া এক মেজর। টেকনাফের সাগর আর পাহাড়ের মনোরম প্রকৃতির মধ্যেই ‘প্রতিশোধের নিষ্ঠুরতার’ শিকার হন ভ্রমণপিপাসু ওই যুবক, যে ঘটনাকে শুরুতে আত্মরক্ষার চেষ্টা বলে ‘চালিয়ে দিতে’ চেয়েছিলেন সেই পুলিশ সদস্যরা।
কোভিড আর ঈদ উৎসবকে ছাপিয়ে সামনে চলে আসা এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনাও পরে বেরিয়ে আসতে থকে। ঘটনাপ্রবাহ একের পর মোড় নিতে থাকলে দেশজুড়ে আলোড়ন শুরু হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের একটি চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের নিহত হওয়ার ঘটনা শেষ পর্যন্ত আর ‘আত্মরক্ষার্থে’ গুলির ঘটনা থাকেনি।
আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়ে ‘খুব কাছ থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি’ করার পর আনুমানিক সোয়া ঘণ্টা ফেলে রেখে সিনহার ’মৃত্যু নিশ্চিত’ করা হয়েছিল, সেই তথ্য বেরিয়ে আসে তদন্তে।
ট্র্যাভেল ডকুমেন্টারি তৈরি করতে একদল তরুণকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন সিনহা। তাকে হত্যার পর তার দুই সঙ্গীর বিরুদ্ধে দুই থানায় তিনটি মিথ্যা মাদক মামলা দায়ের করে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা হয়। তবে পরে আর তা ধোপে টেকেনি। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে সেসব মামলায়।
পুলিশের এমন ভূমিকায় দেশব্যাপী আলোড়ন শুরু হলে দ্রুত পরিস্থিতি যায় পাল্টে, মামলা হয় টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। তদন্ত শেষে আলোচিত এই ওসিসহ মোট ১৫ জন হন বিচারের মুখোমুখি।
কথিত ‘ক্রসফায়ারকে’ সামনে নিয়ে আসা এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ‘পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠাণ্ডা মাথায় হত্যার’ অভিযোগ করা হয় ওসি প্রদীপসহ আসামিদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগপত্রে ঘটনার বর্ণনা করা হয় এভাবে: “প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে পূর্ব পরিকল্পনা মতে ঠাণ্ডা মাথায় মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের আত্মরক্ষার অধিকারকে তোয়াক্কা না করে ও তার বাঁচার আকুল আকুতিকে উপেক্ষা করে নির্মমভাবে আর দশটা ক্রসফায়ারের মতো সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা মাথায় পূর্ব পরিকল্পনা মতে মেজর (অব.) সিনহাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেন।”
গুলিবিদ্ধ সিনহাকে আনুমানিক সোয়া ঘণ্টা ফেলে রেখে ’মৃত্যু নিশ্চিত’ করা হয় বলে উল্লেখ কর হয় সেখানে।
তদন্ত প্রতিবেদেনে বলা হয়, ”হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামী প্রদীপ কুমার দাশ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকত তাদের সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় ভিকটিমের গাড়ি হতে মাদক উদ্ধারের ও সরকারি কাজে বাধা দানের ঘটনার সাজিয়ে তিনটি নিয়মিত মামলা রুজু করে এবং ভিকটিমসহ শিপ্রা ও সিফাতের চরিত্র হরণের জন্য বিভিন্ন অপচেষ্টায় লিপ্ত হন।”
হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর সোমবার সেই মামলায় রায় দিচ্ছে আদালত। সেখানেই নির্ধারিত হবে প্রদীপ, লিয়াকতসহ ১৫ আসামির ভাগ্য।
দেড় বছরের ঘটনাক্রম
৩১ জুলাই ২০২০
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
১ অগাস্ট ২০২০
সিনহার সঙ্গে তথ্যচিত্র নির্মাণে যুক্ত সাইদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় দুটি এবং শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে রামু থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
সরকারি কাজে বাধা প্রদান এবং মাদক আইনে অভিযোগ আনা হয় সিফাতের বিরুদ্ধে। শিপ্রার বিরুদ্ধে হয় মাদকের মামলা।
খবর > বাংলাদেশ https://www.facebook.com/v6.0/plugins/save.php?app_id=1773848812835088&channel=https%3A%2F%2Fstaticxx.facebook.com%2Fx%2Fconnect%2Fxd_arbiter%2F%3Fversion%3D46%23cb%3Df3db0f26f0c102e%26domain%3Dbangla.bdnews24.com%26is_canvas%3Dfalse%26origin%3Dhttps%253A%252F%252Fbangla.bdnews24.com%252Ff3b09d4e784ca7e%26relation%3Dparent.parent&container_width=0&locale=en_US&sdk=joey&size=large&uri=https%3A%2F%2Fbangla.bdnews24.com%2Fbangladesh%2Farticle2007808.bdnews
সিনহা হত্যার ঘটনাক্রম
মাসুম বিল্লাহ ও শংকর বড়ুয়া রুমি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 31 Jan 2022 08:38 AM BdST Updated: 31 Jan 2022 03:41 PM BdST
- কক্সবাজারে তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের উত্তরার বাসায় খোলা হয় শোক বই।
- অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে পরিবারের সদস্যরা ডাকতেন আদনান নামে। ছবি: পারিবারিক অ্যালবাম থেকে
- কক্সবাজারে শুটিং করতে যাওয়া ‘জাস্ট গো’ টিমের চার সদস্য সিনহা মো. রাশেদ খান, শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাহসিন রিফাত নূর।
- সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ দাশকে ২১ অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে নেওয়া হয় তদন্তের জন্য
- টেকনাফে পুলিশের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্র। বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টেই পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
- সিনহার মা নাসিমা আক্তার
করোনাভাইরাস মহামারীর অন্যরকম এক কোরবানি ঈদের ছুটির আমেজের মধ্যেই ঘটে ঘটনাটি; পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়া এক মেজর। টেকনাফের সাগর আর পাহাড়ের মনোরম প্রকৃতির মধ্যেই ‘প্রতিশোধের নিষ্ঠুরতার’ শিকার হন ভ্রমণপিপাসু ওই যুবক, যে ঘটনাকে শুরুতে আত্মরক্ষার চেষ্টা বলে ‘চালিয়ে দিতে’ চেয়েছিলেন সেই পুলিশ সদস্যরা।
কোভিড আর ঈদ উৎসবকে ছাপিয়ে সামনে চলে আসা এ হত্যাকাণ্ডের পেছনের ঘটনাও পরে বেরিয়ে আসতে থকে। ঘটনাপ্রবাহ একের পর মোড় নিতে থাকলে দেশজুড়ে আলোড়ন শুরু হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের একটি চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের নিহত হওয়ার ঘটনা শেষ পর্যন্ত আর ‘আত্মরক্ষার্থে’ গুলির ঘটনা থাকেনি।
কক্সবাজারে শুটিং করতে যাওয়া ‘জাস্ট গো’ টিমের চার সদস্য সিনহা মো. রাশেদ খান, শিপ্রা দেবনাথ, সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও তাহসিন রিফাত নূর। আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়ে ‘খুব কাছ থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি’ করার পর আনুমানিক সোয়া ঘণ্টা ফেলে রেখে সিনহার ’মৃত্যু নিশ্চিত’ করা হয়েছিল, সেই তথ্য বেরিয়ে আসে তদন্তে।
ট্র্যাভেল ডকুমেন্টারি তৈরি করতে একদল তরুণকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজারে গিয়েছিলেন সিনহা। তাকে হত্যার পর তার দুই সঙ্গীর বিরুদ্ধে দুই থানায় তিনটি মিথ্যা মাদক মামলা দায়ের করে ‘ফাঁসানোর’ চেষ্টা হয়। তবে পরে আর তা ধোপে টেকেনি। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে সেসব মামলায়।
সিনহা হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ দাশকে ২১ অগাস্ট হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে নেওয়া হয় তদন্তের জন্য পুলিশের এমন ভূমিকায় দেশব্যাপী আলোড়ন শুরু হলে দ্রুত পরিস্থিতি যায় পাল্টে, মামলা হয় টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। তদন্ত শেষে আলোচিত এই ওসিসহ মোট ১৫ জন হন বিচারের মুখোমুখি।
কথিত ‘ক্রসফায়ারকে’ সামনে নিয়ে আসা এ হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ‘পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠাণ্ডা মাথায় হত্যার’ অভিযোগ করা হয় ওসি প্রদীপসহ আসামিদের বিরুদ্ধে।https://6f4a9ec53b3b3af8133f49c55fbe036c.safeframe.googlesyndication.com/safeframe/1-0-38/html/container.html
অভিযোগপত্রে ঘটনার বর্ণনা করা হয় এভাবে: “প্রকাশ্য অস্ত্র হাতে পূর্ব পরিকল্পনা মতে ঠাণ্ডা মাথায় মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের আত্মরক্ষার অধিকারকে তোয়াক্কা না করে ও তার বাঁচার আকুল আকুতিকে উপেক্ষা করে নির্মমভাবে আর দশটা ক্রসফায়ারের মতো সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা মাথায় পূর্ব পরিকল্পনা মতে মেজর (অব.) সিনহাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেন।”
গুলিবিদ্ধ সিনহাকে আনুমানিক সোয়া ঘণ্টা ফেলে রেখে ’মৃত্যু নিশ্চিত’ করা হয় বলে উল্লেখ কর হয় সেখানে।
তদন্ত প্রতিবেদেনে বলা হয়, ”হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামী প্রদীপ কুমার দাশ ও ইন্সপেক্টর লিয়াকত তাদের সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় ভিকটিমের গাড়ি হতে মাদক উদ্ধারের ও সরকারি কাজে বাধা দানের ঘটনার সাজিয়ে তিনটি নিয়মিত মামলা রুজু করে এবং ভিকটিমসহ শিপ্রা ও সিফাতের চরিত্র হরণের জন্য বিভিন্ন অপচেষ্টায় লিপ্ত হন।”
সিনহার মা নাসিমা আক্তার
হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর সোমবার সেই মামলায় রায় দিচ্ছে আদালত। সেখানেই নির্ধারিত হবে প্রদীপ, লিয়াকতসহ ১৫ আসামির ভাগ্য।
দেড় বছরের ঘটনাক্রম
৩১ জুলাই ২০২০
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
১ অগাস্ট ২০২০
সিনহার সঙ্গে তথ্যচিত্র নির্মাণে যুক্ত সাইদুল ইসলাম সিফাতের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় দুটি এবং শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে রামু থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
সরকারি কাজে বাধা প্রদান এবং মাদক আইনে অভিযোগ আনা হয় সিফাতের বিরুদ্ধে। শিপ্রার বিরুদ্ধে হয় মাদকের মামলা।
ঘটনার পর দেশব্যাপী আলোচনার মধ্যে ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ টেকনাফের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের ২০ জন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
২ অগাস্ট ২০২০
ঘটনা তদন্তে ১ অগাস্ট গঠন করা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি পরদিন পুনর্গঠন করা হয়। যুগ্মসচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই কমিটিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রতিনিধিত্বও রাখা হয়েছিল।
৪ অগাস্ট ২০২০
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় জানায়, সিনহার মা নাসিমা আক্তারকে ফোন করে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৫ অগাস্ট ২০২০
২০২০ সালের ৫ অগাস্ট টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ ৯ জন পুলিশ সদস্যকে আসামী করে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।
আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেয়। এ মামলার পাশাপাশি পুলিশের দায়ের করা তিন মামলারও তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র্যাবকে।
৫ অগাস্ট ২০২০
সিনহা নিহত হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনার মধ্যে কক্সবাজারে বিরল এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও আইজিপি বেনজীর আহমেদ। ঘটনাস্থল শামলাপুর চেকপোস্ট এলাকা পরিদর্শনেও যান তারা।
৫ অগাস্ট ২০২০
ব্যাপক আলোড়নের মধ্যে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে করে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স অয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া)। সেখানে সিনহা নিহতের ঘটনায় দায়ী সব পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি তোলেন সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা।
৬ অগাস্ট ২০২০
এদিন সকালে মামলাটি নথিভুক্ত করে টেকনাফ থানা। বিকালে মামলায় এজাহারভুক্ত ৯ জন আসামীর মধ্যে ওসি প্রদীপসহ সাত জন পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। বাকি ছিলেন এসআই টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা। প্রদীপ-লিয়াকতসহ তিনজনকে রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
৭ অগাস্ট ২০২০
ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত, এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ।
৯ অগাস্ট ২০২০
আদালত থেকে জামিন পেয়ে গ্রেপ্তারের ৯ দিন পর কক্সবাজার কারাগার থেকে মুক্ত হন সিনহার সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ।
১০ অগাস্ট ২০২০
শিপ্রার মুক্তির পরদিন দুই মামলায় জামিন পেয়ে কক্সবাজারের কারাগার থেকে মুক্তি পান সিনহার সহযোগী সাইদুল ইসলাম সিফাত।
১১ অগাস্ট ২০২০
তদন্ত চলার মধ্যে এদিন পুলিশের দায়ের মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের মারিশবুনিয়া এলাকার নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আয়াজ ও নিজাম উদ্দিনকে আদালতে সোপর্দ করে র্যাব।
১৩ অগাস্ট ২০২০
সিনহা নিহতের ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় নানা ‘অপপ্রচার’ চালিয়ে সেনা-পুলিশ মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিবৃতি দেয় পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত এ সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনাটিকে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে পুলিশ কর্মকর্তাদের সংগঠনটি বলেছে, অপকর্মের জন্য দায়ী ব্যক্তির শাস্তি হবে, ব্যক্তির কোনো অপকর্মের দায় পুলিশ নেবে না।
১৮ অগাস্ট ২০২০
প্রথম দফায় সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয় ওসি প্রদীপকে। মোট চার দফায় তাকে টানা ১৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
১৮ অগাস্ট ২০২০
শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার রাতে দায়িত্বরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য এএসআই শাহজাহান মিয়া, কনস্টেবল মো. রাজীব ও কনস্টেবল মো. আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলে র্যাব।
৩০ অগাস্ট ২০২০
হত্যায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন মামলার প্রধান আসামী লিয়াকত আলী। জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের পেছনে নিজের ও অন্যদের ভূমিকা বিস্তৃতভাবে তুলে ধরেন তিনি। তদন্ত চলাকালে আসামীদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
১০ সেপ্টেম্বর ২০২০
হত্যা মামলায় কক্সবাজারের তৎকালীন এসপি এবিএম মাসুদ হোসেনকে আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেন সিনহার বোন মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস, যা খারিজ করে দেয় আদালত।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
তদন্ত চলার মধ্যে এজাহারের বাইরে থাকা কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে র্যাব।
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
সিনহা হত্যার পর আলোচনায় থাকা কক্সবাজারের এসপি মাসুদ হোসেনকে কক্সবাজার থেকে বদলি করে রাজশাহী জেলায় পাঠায় পুলিশ সদরদপ্তর।
১৩ ডিসেম্বর ২০২০
প্রদীপ-লিয়াকতসহ মোট ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খাইরুল ইসলাম। পাশাপাশি সিফাত ও শিপ্রার বিরুদ্ধে তিন মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে র্যাব জানায়, অভিযোগের কোনো সত্যতা তারা পায়নি।
অভিযুক্তদের মধ্যে ১৪ জন কারাগারে থাকলেও টেকনাফ থানার কনস্টেবল সাগর দেব পলাতক ছিলেন। অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।
২১ ডিসেম্বর ২০২০
অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আদালত। পলাতক আসামী কনস্টেবল সাগর দেবের বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
২৪ ডিসেম্বর ২০২০
শিপ্রা দেবনাথের বিরুদ্ধে রামু থানায় মাদক আইনের মামলায় র্যাবের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে আপত্তি জানায় পুলিশ।
৩১ ডিসেম্বর ২০২০
সিনহার বোনের করা মামলার কার্যক্রম জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহের আদালত থেকে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
৩১ ডিসেম্বর ২০২০
ঘটনার পরপর পুলিশের দায়ের করা তিনটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে সিফাত ও শিপ্রাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন বিচারক।
২৪ জুন ২০২১
পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।
২৭ জুন ২০২১
১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। সেই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৬ থেকে ২৮ জুলাই পর্যন্ত দিন ধার্য করেন।
২৩ অগাস্ট ২০২১
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে আদালতের বিচার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় আগের ধার্য দিনগুলোতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। এদিন থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। আদালতে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জনের সাক্ষ্য ও জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
৬ ও ৭ ডিসেম্বর, ২০২১
ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন আসামীরা।
৯ জানুয়ারি ২০২২
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি আদালতে আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়, যা চলে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত।
১২ জানুয়ারি ২০২২
যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ঠিক করে দেন বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল।
৩১ জানুয়ারি ২০২২
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল ৩০০ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা শুরু করেছেন।
সূত্রঃ বিডিনিউস২৪