সহিংতার শঙ্কা নিয়ে চলছে ভোটগ্রহণ

সহিংসতার আশঙ্কার মধ্যে আজ সোমবার চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ষষ্ঠ ধাপের ভোট হচ্ছে। ২২ জেলার ৪২ উপজেলার ২১৮টি ইউপিতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে ২১৬ ইউপিতে ইভিএমে এবং দুটিতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। আগের ধাপের নির্বাচনগুলোর মতো এই ধাপেও বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন।

চেয়ারম্যান পদে ১২, নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩২ এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ১০০ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউপিতে ১১ চেয়ারম্যান, নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৩ এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৮৮ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় জানায়, এ ধাপের নির্বাচনে মোট ভোটার ৪১ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২১ লাখ ১৪ হাজার ৭২০ এবং নারী ভোটার ২০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ জন। এ ছাড়া ছয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে দুই হাজার ১৮৬টি এবং ভোটকক্ষ রয়েছে ১৩ হাজার ৩০৫টি। এ ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন মোট ১১ হাজার ৬০৪ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে এক হাজার ১৯৯ জন, নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে দুই হাজার ৫৫৯ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে সাত হাজার ৮৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনী এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত শনিবার দিনগত রাত ১২টা থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৫৪ ঘণ্টার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। এ ছাড়া গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে এসব এলাকায় আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারও বন্ধ হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব, পুলিশ, আনসারসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচনী এলাকায় টহল শুরু করেছেন। তাঁরা থাকবেন ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।

চলমান ইউপি নির্বাচনে এরই মধ্যে পাঁচ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপের নির্বাচনের দুই দফায় ৩৬৫ ইউপি, ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩ ইউপি, ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউপি, ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে ৮৩৬ ইউপি এবং পঞ্চম ধাপে গত ৫ জানুয়ারি ৭০৭ ইউপিতে ভোটগ্রহণ হয়।

আজ ৩১ জানুয়ারি ষষ্ঠ ধাপে ২১৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণের পর সপ্তম ধাপে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ১৩৮ ইউপিতে এবং শেষ ও অষ্টম ধাপে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি আটটি ইউপির ভোট হবে।

এবারের ইউপি নির্বাচনে বিনা ভোটে জনপ্রতিনিধি হওয়ার রেকর্ড হয়েছে। এ পর্যন্ত বিনা ভোটে প্রতিনিধি হয়েছেন এক হাজার ৭২০ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩৬৬ জন। নারীদের জন্য সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৩৯৬ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ৯৫৮ জন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী।

আগের পাঁচ ধাপের নির্বাচনে তিন হাজার ৭৪২ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা দুই হাজার ১৭টি ইউপিতে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এক হাজার ৬০০ ইউপিতে জয়ী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী। বিএনপি এবার এই নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় এ দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের একাংশ স্বতন্ত্র প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ছাড়া এবারের ইউপি নির্বাচনে গতকাল রবিবার পর্যন্ত ১০৯ জন নিহত হয়েছে।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ