অনুসন্ধান কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা করছে বিএনপি
নির্বাচন কমিশন নিয়োগে গঠিত অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে নির্মোহভাবে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি অনুসন্ধান কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাষ্ট্রপতি এ অনুhসন্ধান কমিটির সুপারিশ করা তালিকা থেকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ মহান জাতীয় সংসদে পাস হয়। স্বাধীনতার পর এবারই সুনির্দিষ্ট আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। অথচ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইনগত বিষয়টি তোয়াক্কা না করে সার্চ কমিটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অর্থহীন বলে মন্তব্য করেছেন। যাঁরা এ দেশে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অপরাজনীতির জন্ম দিয়েছিল, তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি চিরাচরিতভাবে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুর কাদের বলেন, যারা বারবার সংবিধান ও প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের মাধ্যমে নিজেদের স্বেচ্ছাচারিতাকে পরিপুষ্ট করেছে এবং এ দেশের মানুষের ওপর স্বৈরাচারী শাসনের স্টিমরোলার চালিয়েছে, তারাই কেবল এ ধরনের আইনি প্রক্রিয়াকে মূল্যহীন বলার মতো ধৃষ্টতা দেখাতে পারে।
বাংলাদেশের জনগণ কোনো গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যকে বরদাস্ত করে না বলে মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বুটের তলায় পিষ্ট করে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করেছিলেন। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে সংবিধান ও আইনকে ভূলুণ্ঠিত করেছিলেন। তাঁরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সেই অপরাজনীতির ঐতিহ্য বহন করে বিএনপি। যার ধারাবাহিকতায় কোনো আইন বা নিয়ম-নীতির কথা শুনলে বিএনপি নেতাদের গায়ে জ্বালা ধরে।
অনুসন্ধান কমিটি ও নির্বাচন কমিশন সবই সরকারের অধীন—বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। আর অনুসন্ধান কমিটি প্রণীত হয়েছে আইনের অধীনে। এই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ২২টি সংশোধনী আনা হয়েছিল।
বিএনপি সব সময় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি এবং আইনি কাঠামোর প্রতি নেতিবাচক মনোভব পোষণ করে এবং তারই ধারাবাহিকতায় অনুসন্ধান কমিটিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, শুধু নিজেদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতিকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবরের ন্যায় নিলর্জ্জভাবে এ মিথ্যাচার করে চলেছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি উচ্চ আদালতে মীমাংসিত ইস্যু উল্লেখ করে কাদের বলেন, এটি নিয়ে নতুন করে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। দেশের জনগণ, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ওপর বিএনপির কোনো আস্থা নেই বলেই তারা বারবার অসাংবিধানিক পন্থার কথা বলে আসছে। তারা বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করার মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুঃস্বপ্নে বিভোর। তাই দেশের জনগণ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।বিজ্ঞাপন