বাংলাদেশে শ্রীলংকার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেছেন, ‘এ দেশে সুশাসনসহ দেশের কল্যাণে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অনেক অবদান রয়েছে। তিনি একজন দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। ওনার মতো এত স্বার্থক ও দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক বাংলাদেশের ইতিহাসে খুব কম সংখ্যক রয়েছে। এরশাদের মৃত্যু দিবসটি সরকারি মর্যাদায় পালন করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি।’
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা-৪ আসন এলাকায় শ্যামপুর ও কদমতলী থানা জাতীয় পার্টির উদ্যোগে জুরাইন রেলগেটে (বিক্রমপুর প্লাজার সামনে) শুক্রবার বিকালে স্মরণ সমাবেশ, দোয়া মাহফিল ও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘ঋণের দায়ে বাংলাদেশ শ্রীলংকার মতো দেউলিয়া হতে পারে। দেশের ঋণের পরিমাণ ১৬ লাখ কোটি টাকা। আগামীতে সুদসহ এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তখন দেশের অবস্থা ভয়াবহ হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আর শ্রীলংকার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। করোনাকালে শ্রীলংকার পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার দশ বছর গৃহযুদ্ধ করেও দেউলিয়া হয়নি শ্রীলংকা। শুধু ঋণের বোঝা টানতে গিয়ে দেউলিয়া হয়েছে। আবার শ্রীলংকা ও বাংলাদেশে একই রাজনৈতিক বাস্তবতা রয়েছে। আর এ কারণেই বাংলাদেশে শ্রীলংকার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে। দুটি দেশেই কোথাও জবাবদিহিতা নেই। এমন দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়নি। রাজা পেতে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদরা জীবন দেননি। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে জনগণের প্রতিনিধি পেতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা প্রতিনিধি পাইনি, পেয়েছি জনগণের রাজা।’
জিএম কাদের বলেন, ‘ঋণনির্ভর বাজেট হয়েছে। বাজেটে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ও বেকারত্ব কমাতে কোনো বরাদ্দ নেই। গেল বছরও লক্ষ্য অনুযায়ী ট্যাক্স আদায় হয়নি। এবার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ট্যাক্স আদায় না হলে ঋণ করে কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা দিতে হবে। ব্যাংকের টাকা জনগণের, এক সময় ব্যাংকেও টাকা থাকবে না, ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে দেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে সব রকম মালামালের দাম বেড়েই চলছে। সেদিকে সরকারের নজর নেই। আমরা বলেছি, ভর্তুকি দিয়ে হলেও নিত্যপণের দাম সহনশীল মাত্রায় রাখতে হবে। মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে দেশ থেকে। আমরা আর কোনো মেগা প্রকল্পে চাই না। আমরা চাই, মানুষ যেন খেয়েপরে বাঁচতে পারে। মানুষ যেন হাসপাতালে গিয়ে সহজে সুচিকিৎসা পায়।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘পল্লীবন্ধুর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন দেশপ্রেমিক নেতা। তিনি গণমানুষের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে উপজেলা পরিষদ সৃষ্টি করেছিলেন। যদিও পল্লীবন্ধুর স্বপ্নের মতো উপজেলা ব্যবস্থা নেই। জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা নেই উপজেলা ব্যবস্থায়।’
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টি সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপির সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন দে’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, সুনীল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, হারুন অর রশীদ, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, আমির উদ্দিন ডালু, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জহিরুল ইসলাম মিন্টু, গোলাম মোস্তফা, খোরশেদ আলম খুশু, শরফুদ্দীন শিপু, অ্যাডভোকেট মো. আবু তৈয়ব, সমরেশ মন্ডল মানিক, দ্বীন ইসলাম শেখ, কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান খসরু, শাহীন আরা সুলতানা রিমা, জাতীয় ছাত্র সমাজের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খান জুয়েল, সহসভাপতি শাহ ইমরান রিপন, কদমতলী থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি সামসুজ্জামান কাজল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুক রহমান, শ্যামপুর থানা জাতীয় পার্টির সভাপতি কাউছার আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল, মহিলা পার্টি কদমতলী থানার যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদা ইয়াসমিন, শ্যামপুর থানা মহিলা পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লাকী আহমেদ, মমতাজ বেগম প্রমুখ।