শ্রমিকদের সীমাহীন দুর্ভোগের দায় কার
হঠাৎ করে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খোলার সিদ্ধান্তে চরম দুর্ভোগের মধ্যে কাজে ফিরতে হয়েছে শ্রমিকদের। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি। বারবার সিদ্ধান্তের পরিবর্তন ও সমন্বয়হীনতাই এর বড় কারণ।শুভংকর –
তৈরি পোশাক ও রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় দক্ষিণাঞ্চল থেকে ফেরিতে ঢাকামুখী মানুষের ঢল। গতকাল দুপুরে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাটেছবি: দীপু মালাকার
সৈয়দ শামসুল হকের লেখা নাটকের সেই সংলাপটির মতোই, ‘মানুষ আসতে আছে যমুনার বানের লাহান’। ফেরিভর্তি শুধু মানুষ আর মানুষ। এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা নেই। ট্রাকের পেছনে শক্ত কাঠের ওপর একজনের ওপর আরেকজন শুয়ে আছেন গুটিসুটি মেরে, যেন জায়গা কম লাগে। যাঁদের কপালে সেই কাঠও জোটেনি তাঁরা রইলেন দাঁড়িয়ে। মাথায় ব্যাগ আর কোলে ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে ছুটলেন অনেকে। পা ঝুলিয়ে ভ্যানে চেপে বসেছেন কেউ কেউ। হেঁটে ফেরার সংখ্যাটিও কম নয়।
ঘটনাটি গত শনিবারের। শ্রমজীবী মানুষ, বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানার শ্রমিকদের কর্মস্থলে ফেরার চিত্র। এখন করোনা মহামারির মারাত্মক সংক্রমণের সময়। প্রায় প্রতিদিনই মৃত্যু ও শনাক্তের নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। অথচ মৃত্যুভয় কিংবা গণপরিবহন সংকট, কোনোটাই তাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে কয়েক গুণ অর্থ খরচ করে জীবন বাজি রেখে ছুটে এসেছেন কেবল চাকরি বাঁচাতে। কারণ, হঠাৎ ঘোষণা এসেছে, সরকারের ‘কঠোরতম লকডাউনের’ মধ্যেই রপ্তানিমুখী সব কলকারখানা খুলছে রোববার থেকেই।
এক বছর আগেও ছিল একই চিত্র
এমন না যে অভিজ্ঞতার অভাব ছিল। দেশে করোনার সংক্রমণ শুরু হয় গত বছরের ৮ মার্চ থেকে। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছিল লকডাউন, যাকে সরকারিভাবে বলা হয়েছিল সাধারণ ছুটি। শুরুতে বলা ছিল সবকিছু বন্ধ থাকবে। কিন্তু পোশাকমালিকদের চাপে হঠাৎ করেই কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে গত বছরের ৪ এপ্রিল সামাজিক দূরত্ব না মেনে ঝুঁকি নিয়ে হাজার হাজার শ্রমিক শিল্পাঞ্চলে ফিরেছিলেন। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অটোরিকশা, সিএনজি, পিকআপ ও পণ্যবাহী ট্রাকে চড়ে, অনেকে আবার হেঁটেই কর্মস্থলে ফিরেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে মালিকেরা ৬ এপ্রিল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হলে একই রকম কষ্ট করে অনেক শ্রমিককে গ্রামের বাড়িতে ফিরতে হয়েছিল। মূলত, পোশাকমালিকদের পাশাপাশি শ্রম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতা ও দায়সারা কাজের কারণেই গত বছরের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি
গত তিন দিনের ঘটনাপ্রবাহ ও পোশাকশিল্পের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেল, কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে পরিবহনের ব্যবস্থা না করেই অপরিকল্পিতভাবে হঠাৎ করে কারখানা খুলে দেওয়ার কারণেই শ্রমিকদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এ জন্য শুরুতেই অবশ্য মালিকপক্ষকে দায় নিতে হবে। তারাই বিধিনিষেধের মধ্যে কারখানা খুলে দিতে সরকারের ওপর মহলে বারবার চাপ দিয়েছে। ব্যবসা চলে যাবে বলে যুক্তি দেখিয়েছে। অথচ শ্রমিকেরা কীভাবে ঢাকায় ফিরবেন, সে ব্যবস্থার কথা আগেই চিন্তা করার দরকার ছিল। গত বছরের মতো এবারও মালিকেরা সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আবার বরাবরের মতো সরকারও মালিকদের চাপে নতি স্বীকার করেছে। কিন্তু সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকলে শ্রমিকেরা কীভাবে ফিরবেন, সেই প্রশ্ন সরকারের দায়িত্বশীল নীতিনির্ধারকেরাও ভাবেননি। অথচ আগের বছরের উদাহরণ সবার চোখের সামনেই ছিল। সুতরাং দায় সরকারের নীতিনির্ধারকদেরও।
সমন্বয়হীনতার নমুনা
দেশে করোনার সংক্রমণের শুরুর পরে গত বছর সাধারণ ছুটির মধ্যে পোশাক কারখানাভেদে তিন থেকে চার সপ্তাহ বন্ধ ছিল। তারপর কয়েকবার বিধিনিষেধ বা লকডাউন আরোপ করা হলেও কোনোবারই তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী কারখানা বন্ধ ছিল না। গত ২৮ জুন শুরু হওয়া সীমিত ও পরে ১ জুলাই শুরু হওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও খোলা ছিল কারখানাগুলো। ঈদুল আজহার সময়ে ব্যবসার জন্য সরকার ১৫ জুন থেকে আট দিনের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করে। এরপর ২৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউনে পোশাকসহ সব শিল্পকারখানা বন্ধ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই প্রজ্ঞাপনের পরপরই কারখানা চালু রাখতে মাঠে নামেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা। দল ভারী করতে তাঁরা বস্ত্রকলমালিকদের সংগঠন বিটিএমএসহ আরও দুটি সংগঠনের নেতাদের দলে নেন।
পরিকল্পনা ঠিক করতে ১৪ জুলাই রাতে গুলশানে বিজিএমইএর কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন পোশাক ও বস্ত্র খাতের নেতারা। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিনকে। তিনি নিজেও পোশাকশিল্পের একজন উদ্যোক্তা। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরদিন সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন পোশাক ও বস্ত্র খাতের নেতারা। এ সময় কারখানা খোলার রাখার যৌক্তিকতা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি দেন তাঁরা। তবে সরকার নমনীয় হয়নি।
ফলে ঈদের ছুটি দেওয়া শুরু করে কারখানাগুলো। তবে ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস ১৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা আশাবাদী ছিলেন, ঈদের পর শুরু হওয়া বিধিনিষেধের বাইরে পোশাকশিল্পকে রাখা হবে। ওই দিন দুপুরে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসানকে সরকারের ওপর মহল থেকে বার্তা দেওয়া হয়, করোনা সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ১ আগস্ট থেকে কারখানা খোলার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই আশ্বাস পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সভাপতি সংগঠনের সদস্যদের মুঠোফোনে একটি বার্তা পাঠান। এতে তিনি সদস্যদের করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়া সাপেক্ষে ১ আগস্ট থেকে কারখানা খোলার প্রস্তুতি রাখতে বলেন। তবে পরিষ্কার বার্তা না পাওয়ায় পোশাকশিল্পের অধিকাংশ মালিকই অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন।
ঈদের ছুটির পর করোনা সংক্রমণ না কমে উল্টো বাড়তে শুরু করে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও ১ আগস্ট থেকে কারখানা খোলার তৎপরতা ভেতরে-ভেতরে চালাতে থাকেন পোশাকশিল্পের নেতারা। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা হয়। সেই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চলমান বিধিনিষেধে শিল্পকারখানা খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ থাকলেও তা গ্রহণ করা হবে না। অন্যদিকে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সরকারের বিভিন্ন মহলেও চলমান বিধিনিষেধ আরও বাড়ানো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়।
নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান পোশাকশিল্পের নেতারা। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকের এক দিনের ব্যবধানে গত বৃহস্পতিবার তড়িঘড়ি করে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। পোশাকশিল্পের নেতাদের সেই বহরের নেতৃত্ব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন। সচিবকে তাঁরা শিগগিরই কারখানা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন। প্রয়োজনে প্রথম দিকে কারখানার আশপাশের শ্রমিকদের দিয়ে উৎপাদন চালানোর প্রতিশ্রুতিও দেন পোশাকশিল্পের নেতারা। যদিও সেই সাক্ষাতে সচিবের কাছ থেকে ১ আগস্ট কারখানা খুলবে, তেমন কোনো আশ্বাসও পাননি।
পোশাকশিল্পের একজন নেতা জানান, করোনা সংক্রমণ না কমায় সরকার বিধিনিষেধ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে। তাই ৫ আগস্টের পরও কারখানা নিয়েও দুশ্চিন্তা শুরু হয়। অন্তত চলমান বিধিনিষেধের পর যাতে কারখানা খোলা যায়, সেই চিন্তাভাবনা থেকেই সচিবের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ করেন পোশাক খাতের নেতারা। যদিও তাঁরা কৌশল করে নির্দিষ্ট তারিখ না বলে যথাশিগগিরই কারখানার খোলার দাবি জানিয়ে আসেন। পরদিন সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই প্রজ্ঞাপন হয়, রোববার থেকে রপ্তানিমুখী কারখানা খুলবে। যদিও বিকেল পর্যন্ত মালিকেরা পুরো বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে ছিলেন। প্রজ্ঞাপন হওয়ার কিছুক্ষণ আগে বিজিএমইএর নেতারা জানতে পারেন সিদ্ধান্ত আসছে।
বিস্মিত পোশাকমালিকেরাই
একাধিক পোশাকশিল্পমালিক প্রথম আলোকে বলেছেন, কারখানা খোলার প্রজ্ঞাপনের পর বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারাও বিস্মিত হয়েছেন। সরকার যে সহজেই তাঁদের দাবি মেনে কারখানা খুলে দেবে, সেটি ভাবতেও পারেননি তাঁরা। এদিকে প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই কারখানাগুলো তাদের কর্মীদের খুদে বার্তা পাঠিয়ে রোববার থেকে কাজে যোগ দিতে বলে। মালিকদের কেউ কেউ ফেসবুকেও ঘোষণা দেন, রোববার যেন কোনো কর্মী অনুপস্থিত না থাকে। ফলে দ্রুতই দৃশ্যপট পরিবর্তন হতে থাকে।
গত শুক্রবার প্রজ্ঞাপন জারির পর শনিবার সকাল থেকেই যে শ্রমিকেরা গ্রাম থেকে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করবেন, তা জানাই ছিল। অথচ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শ্রমিকনেতাসহ সংশ্লিষ্ট অনেকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারপরও কোনো উদ্যোগ নেননি বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা। আপাতত কারখানার আশপাশের শ্রমিকদের দিয়ে উৎপাদন চালাতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথাও এক দিনের ব্যবধানে ভুলে গেলেন তাঁরা। সংবাদকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে নেতারা কৌশলী হয়ে বললেন, কোনো শ্রমিক কাজে যোগ দিতে না পারলে চাকরি যাবে না। তবে গ্রামে থাকা শ্রমিকদের আপাতত আনা যাবে না এমন কোনো কঠোর নির্দেশনা তাঁরা দিলেন না।
ফলে শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করায় পরিবহনসংকটের কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সারা দিন গণমাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষের এমন কষ্টকর যাত্রার সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের টনক নড়ে। তড়িঘড়ি করে রাতে প্রথম লঞ্চ ও পরে বাস চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।
সব দুর্ভোগ শ্রমিকদের
জনগণের করের টাকায় সরকারি সুযোগ-সুবিধা আর সস্তা শ্রমের পিঠে চড়ে পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির মূল চালকে পরিণত হয়েছে। এই ব্যবসায় অর্থবিত্ত গড়ে অনেকেই আইনপ্রণেতা হয়েছেন। ফলে সরকারের ভেতরে তাদের বেশ প্রভাব। হাতে গোনা দুই চারজন শ্রমিকনেতা ছাড়া বাকিরা মালিকদের কাছে টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়েছে। সে জন্য পরপর দুই বছর শ্রমিকদের এমন দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হলো। শ্রমিকেরা ৩ হাজার ১৪৫ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের এই পোশাকশিল্পের ইঞ্জিন। অথচ তাদের জন্যই এত সব দুর্ভোগ।
কারখানা ৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকলে কী ক্ষতি হতো—এ বিষয়ে কয়েকজন দায়িত্বশীল পোশাকশিল্পমালিক বলেন, চলমান বিধিনিষেধের পর কারখানা খুলে দিলে খুব একটা সমস্যা হতো না। কারণ, যে কদিন উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে, সেটি সহজেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও অন্যান্য দিন দুই-তিন ঘণ্টা ওভারটাইম করে পোষানো যেত। আর ঈদের পর যেসব পণ্য পাঠানোর কথা ছিল, সেগুলো ঈদের ছুটির আগেই গুছিয়ে রেখেছিল অধিকাংশ কারখানা। চলমান বিধিনিষেধের পুরো সময় কারখানা বন্ধ থাকলেও ক্রয়াদেশ বাতিল বা অন্য দেশে সরিয়ে নিত না ক্রেতারা। কারণ, তাদের হাতে বিকল্প উৎস নেই। মিয়ানমারে সেনাশাসনের কারণে উল্টো সেখান থেকে ক্রয়াদেশ সরিয়েছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে ভিয়েতনাম নিজেই করোনার কারণে লকডাউনে রয়েছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান সামগ্রিক বিষয় নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ যথেষ্ট প্রভাবশালী। সরকারের সব সুযোগ-সুবিধা তারা পায়। তাহলে কেন বিধিনিষেধের মধ্যে কারখানা খোলা নিয়ে সমন্বয়হীনতা হবে। আমি মনে করি, একধরনের অতিমুনাফা করার আকাঙ্ক্ষা থেকে শ্রমজীবী মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন মালিকেরা। রাষ্ট্র ও সরকার তাতে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। অপরিকল্পিতভাবে কারখানা খোলার সিদ্ধান্তে শ্রমিকদের পাশাপাশি সারা দেশের মানুষকে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই দায় সরকার ও মালিকপক্ষের। সরকার যদি অসহায় আত্মসমর্পণ না করে তার রাজনৈতিক সদিচ্ছা অনুসারে শক্তভাবে সিদ্ধান্ত নেয় ও তা বাস্তবায়ন করে, তবেই এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব।