সেনবাগে মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে ১০ ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে তা’লীমুল কুরআন মাদরাসার প্রধান মাওলানা আবদুল ফাত্তাহ’র বিরুদ্ধে ১০ জন আবাসিক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকদের চাপের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষককে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
এর আগে গত শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রদের অভিভাবকদের নিয়ে তা’লীমুল কুরআন মাদরাসায় একটি সালিশী বৈঠক বসে। বৈঠকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ওই বৈঠকে ২৫-৩০ জন অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। ওই বৈঠকের খবর পেয়ে গত দুই দিনে অভিযুক্ত শিক্ষক আর মাদরাসায় আসেননি।
ভুক্তভোগী অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানায়, তা’লীমুল কুরআন মাদরাসার আবাসিক হলের ৮-১০ জন ছাত্রকে বিভিন্ন সময়ে মাদরাসার প্রধান মাওলানা আবদুল ফাত্তাহ রাতে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যেতেন। ওই সময় মোবাইল ফোন আনা নেওয়াসহ বিভিন্ন অজুহাতে তার অফিস, শয়ন কক্ষে ডেকে নিয়ে বলাৎকারের ঘটনা ঘটায়।
এরপর বলাৎকারের শিকার মাদরাসার ছাত্ররা বাড়ি গিয়ে আর মাদরাসায় আসতে না চাওয়ায় পরিবারের লোকজন তাদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে মাদরাসায় পাঠাতে না পেরে মারধর করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
গত শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারগুলোকে নিয়ে তা’লীমুল কুরআন মাদরাসায় একটি সালিশী বৈঠক বসে। ওই বৈঠকের খবর পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আর মাদরাসায় আসেননি। অপরদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে মাদরাসায় থাকা আবাসিক ছাত্রদের তাদের অভিভাবকরা অত্র মাদরাসা থেকে অন্য মাদরাসা নিয়ে ভর্তি করাচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার সভাপতি ছারওয়ার আলম বলেন, মাদরাসার শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের কারণে ওই অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে। বিনা দোষে কেন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন অত্র মাদরাসার আবাসিক বিভাগ অচিরেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মাদরাসার চেয়ারম্যান হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব বলেন, অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অত্র মাদরাসার প্রধানের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মাদরাসার পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলেও তিনি জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল ফাত্তাহর মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তা’লীমুল কুরআন মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, অভিভাককদের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে ৮-১০টি অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো মাদরাসা পরিচালনা কমিটি তদন্ত করে দেখছে।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারীর জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিভাবক থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।