দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে হার্ডলাইনে যেতে হবে: হাইকোর্ট
দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে হার্ডলাইনে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
এশিয়ার দেশগুলোতে দুর্নীতি নিয়ে নমনীয়তা আছে-এক নোবেল বিজয়ীর বক্তব্যকে উল্লেখ করে মঙ্গলবার (০২ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেছেন।
দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানির সময় দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খানকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, যদি দুর্নীতি বন্ধ করতে চান, তাহলে তিনটি বিষয় অবশ্যই মানতে হবে। এক. দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর একটি পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দুই. আইন-বিধি মান্য করতে হবে, আইন-বিধির প্রয়োগ করতে হবে। তিন. জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হবে।
আদালত আরও বলেন, এক নোবেল বিজয়ী বলেছেন, এশিয়ার দেশগুলোতে দুর্নীতির বিষয়ে নমনীয়তা আছে। কিন্তু দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে হার্ডলাইনে যেতে হবে। কঠোর হতে হবে।
কেবল আইন-বিধি বা রায়-আদেশ দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না—উল্লেখ করে আদালত বলেন, আগে নিজেদের আইন-বিধি মানতে হবে। যারা সার্ভিসে (চাকরি) ঢুকছে তারা কী নিয়ে ঢুকছেন আর কী নিয়ে বের হচ্ছেন তার স্বচ্ছতা থাকতে হবে। সবার জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
আদালত বলেন, সবাই মিলে ধরতে না পারলে দুর্নীতি বন্ধ হবে না। সরকার, সাংবাদ মাধ্যম, বিচার বিভাগসহ সব অংশীজনদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। একা বিচার বিভাগ বা সরকারের পক্ষে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। দেশকে ভালোবাসলে আইনের শাসন মানতে হবে। দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে থাকতে হবে। যেটি প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্নীতি ও অর্থপাচার বিরোধী অবস্থান এবং ভাষণ-বক্তৃতা তুলে ধরে হাইকোর্ট বলেন, দেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা করতে হলে সোনার মানুষ চাই। তার জন্য সবার ভূমিকা রাখতে হবে। সাংবাদিকরা সমাজের চোখ, তাদের ভূমিকা রাখতে হবে। তবে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা যাবে না।
দুদক আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে আদালত আরও বলেন, কানাডার বেগমপাড়ায় কাদের বাড়ি, কারা টাকার পাচার করেছে, সুইস ব্যাংকে কারা টাকা রেখেছে, এসব নিয়ে আদেশ দিয়েছি। কিন্তু কোনো আদেশের বাস্তবায়ন নেই।
এ সময় দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান পর্যায়ক্রমে আদেশ বাস্তবায়নের কথা বলেন।