দুটি নারী একটি প্রাণ, হীরকের রাণী ভগবান!
ভেবে দেখলাম- তসলিমা নাসরিন আর শেখ হাসিনার মধ্যে একটা সূক্ষ্ম মিল আছে। তসলিমা নাসরিন মুনিয়া হত্যার প্রধান আসামী ও বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাফিয়া সম্রাট- যাকে হত্যাকাণ্ডের আসামি থাকার সময়ও বাংলাদেশের ঘুষখোর পুলিশ দিনের আলোতে ঘুরলেও চোখে দেখে নাই, যে ওয়ারেন্ট এড়িয়ে ক্যামেরার সামনে এসে ছবি তুলে গেছে, যাকে মামলা চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের ক্রাইম রিপোর্টার এসোসিয়েশনের গোলাম সাংবাদিকরা ফুল দিয়ে গেছে, সেই মাফিয়া সম্রাট বসুন্ধরা গ্রুপের ‘সায়ে’ম সোবহান আন’ভীর’কে ‘মহানুভব’ উপাধি দিয়ে কলাম লিখেছেন কারণ আন’ভীর তার জন্মদিনে ১১ হাজার এতিম শিশুকে একবেলা খাইয়েছেন!
এদিকে তসলিমা আবার অতীতে চমৎকার সব কলাম লিখে নারীর অধিকার নিয়ে গলা ফাটিয়েছেন!
কিন্তু সায়েম সোবহান আনভীরের হাতে লেগে থাকা মুনিয়া নামের নিরীহ ও প্রতারিত হত্যাকাণ্ডের সময় অন্তঃসত্ত্বা থাকা মেয়েটার রক্তের দাগ তিনি দিব্যি ভুলে গেছেন!
তসলিমা মুসলিম মৌলবাদ নিয়ে কলাম লিখে মৌলবাদীদের তোপের মুখে দেশ ছেড়েছেন কিন্তু পাশের দেশে আশ্রয় পেয়ে মোদীর হিন্দু মৌলবাদীতা নিয়ে গুনগান গেয়েছেন, মোদী একাত্তর সালে যুদ্ধ করার যে গাজাখুরি গল্প পেড়েছেন তাতে আপ্লুত হয়ে দিল্লির মসনদের পাশে দিব্যি বসে আছেন, দিনে দিনে হয়ে উঠেছেন ভৃত্য!
অন্যদিকে শেখ হাসিনা- একদিকে পাকিস্তানকে গাইলও দেন, অন্যদিকে দেশের টাকায় কার্টুন ভরে আমও দেন। একদিকে মৌলবাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন, অন্যদিকে ‘কাওমি জননী’ও হন। একদিকে মাদককে না বলেন, আরেকদিকে ইয়াবা বদিরে নিয়া হাসিমুখে সমুদ্র দেখেন!
তসলিমা নাসরিন দিনে দিনে শেখ হাসিনা হয়ে উঠেছেন আর শেখ হাসিনা দিনে দিনে তসলিমা নাসরিন হয়ে উঠেছেন!
এমন অভূতপূর্ব রূপান্তরের ঘটনা আর কোথায় আছে?
সম্ভবত এই ঘটনা আমার প্রিয় লেখক ফ্রাঞ্জ কাফকা দেখলে ‘মেটামরফোসিস ২’ লিখে ফেলতেন, পেতেন নোবেল প্রাইজ!
তাই ভবিষ্যতে বেঁচে থাকলে আমি এই দুই নারীকে নিয়ে একটা বই লিখতে চাই, বইয়ের নাম হবে- দুটি নারী একটি প্রাণ, হীরকের রাণী ভগবান!
এখন বলেন- নামটা সুন্দর হইছে না?