ইউনূসের বাটপারির খতিয়ান
আবদুল্লাহ আল হোসাইন, যুক্তরাজ্য
৬০ বছর পেরিয়েও গদিতে: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গোপন অধ্যায়
গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ, ১৯৮৩-এর ১৪(১) ধারা স্পষ্টভাবে বলে দেয়- ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি বাধ্যতামূলক। একইসঙ্গে ১৪(৪) ধারায় নির্ধারিত আছে, কোনো ব্যক্তি ৬০ বছর বয়স অতিক্রম করলে তিনি এই পদে আর থাকতে পারবেন না।
তবে এই আইনের তোয়াক্কা না করে ১৯৯৯ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এমডি পদে পুনঃনিয়োগ করে, তাও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই এবং বয়সসীমা লঙ্ঘন করে। এটি ছিল একটি জ্বলন্ত উদাহরণ- যেখানে রাষ্ট্রীয় নীতিমালার চেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তির ইচ্ছাই কার্যকর হয়েছে।
ওই বছরই বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রামীণ ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে এ অনিয়ম শনাক্ত করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়- এই নিয়োগ বিধিবহির্ভূত ও বাতিলযোগ্য। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। ড. ইউনূস এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করলেও শেষ পর্যন্ত আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থানকেই বৈধ বলে রায় দেয়। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি বাধ্য হন পদত্যাগ করতে।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একথাও পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়- ড. ইউনূস ২০০০ সালের জুনে ৬০ বছর পূর্ণ করার পর এমডি পদে বহাল থাকা ছিল পুরোপুরি অবৈধ। অর্থাৎ, একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি পরবর্তী ১০ বছর (২০০০–২০১১) পর্যন্ত বেআইনিভাবে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সর্বোচ্চ পদ দখল করে রেখেছিলেন- নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়ে।
এই দশ বছরে তিনি বেতন, ভাতা ও নানা সুবিধা মিলিয়ে গ্রহণ করেন ৫২ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৪ টাকা। কর ও কর্তন বাদে তার হাতে পৌঁছে ৩৮ লাখ ৮১ হাজার ৮০১ টাকা- এবং মাত্র ২ লাখ ১৬৩ টাকা আয়কর হিসেবে পরিশোধ করেন!
এর বাইরে ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাকে একটি গাড়ি সার্বক্ষণিকভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়, যার যাবতীয় খরচ বহন করে গ্রামীণ ব্যাংক। তিনি অফিসে একটি টেলিফোন, বাসায় দুটি ফোন, একটি পিএবিএক্স, একটি ইন্টারনেট সংযোগ এবং চারটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার বিলও অফিস থেকেই আদায় করতেন।
এতো গেল কেবল দৃশ্যমান চুরি। হিসাবের মারপ্যাচে ফেলে গ্রামীন ব্যাংকের আরো কতো টাকা ইউনূস আত্মসাৎ করেছেন- কেবল নিজেই বলতে পারবেন।

