ইউনুস যেভাবে বাংলাদেশের কৃষি ধ্বংস করছে
আফরোজা আলীম আশা, যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশের কৃষি, কৃষক তথা ভভিষ্যত শেষ করে দিচ্ছে মুহুম্মদ ইউনুসের অবোইধ সরকার। কিভাবে? আসুন একটু পর্যালোচনা করি-
প্রথম ধাপ:
আগস্টে সরকার পতনের পর ক্ষমতা নিয়ে প্রথমেই এক কলমের খোঁচায় স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ধ্বংস করে ইউনুস। এর ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সামাজিক অবকাঠামো এবং কৃষি অবকাঠামো উন্নয়নে বাঁধা আসে অনেক।
চুরি হয়ে যায় দেড় বছরের চালের রিজার্ভ। বীজ, সারের বস্তা এখনও পাওয়া যাচ্ছে জামাত বিএনপির নেতাদের বাড়িতে।
বিএনপি যখন টেক্সি স্ট্যান্ড দখল এবং চাঁদাবাজি নিয়ে ব্যস্ত, প্রশাসনের সাহায্যে তখন কৃষি উপকরণ চুরিতে ব্যস্ত ছিলো জামাত। তাতে তাদের গ্রামের কৃষকদের উপর দখল নিতে সুবিধা হয়েছে। আর তাদের এই দখলে বন্যায় ভেসে যাওয়া কৃষক এখনও কষ্ট করছে।
দ্বিতীয় ধাপ:
মানুষকে কম দামে আলু খাওয়ানোর মার্কেটিং করতে গিয়ে কৃষককে খুব কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য করে ইউনুসের অর্থ উপদেষ্টার গোষ্ঠী। সরকারি উদ্যোগে কৃষকের কাছ থেকে কৃষি পণ্য কিনতে দেরি করে।
অন্যদিকে হিমাগার পুড়িয়ে এবং বন্ধ করে দেয়ার কারণে কৃষক তার পণ্য হিমাগারে রাখতে পারেনি, অথবা রাখতে হয়েছে খুব বেশি খরচ দিয়ে।
একদিকে সরকার কিনতে দেরি করেছে, বা কম দামে কিনেছে। অন্যদিকে হিমাগার না থাকায় ৪০ টাকার পটল কৃষক বিক্রি করেছে ২ টাকায়। আপনি আমি খুশি, ইউনুস কম দামে খাওয়াচ্ছে। কিন্তু আসলে যে আপনার কৃষি এবং কৃষক শেষ তা বুঝতে পারেননি।
তৃতীয় ধাপ:
এর মধ্যে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। দেশের কৃষি খাতের কোম্পানিদের এবং বড় কৃষকদের একটা অংশের বেশিরভাগ ঋণ তালিকাভুক্ত থেকে খেলাপি হয়েছে।
কৃষি ব্যাংক মাত্র ১৫ মাসে দেশের ঋণ খেলাপি হওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। খেয়াল করবেন, এস আলমের নাম এখন আর কেউ নেয়না। কারণ তাদের কৃষি খাতে খেলাপি ঋণ নেই।
কৃষি খাতের কোম্পানিগুলোর খারাপ অবস্থায় কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা দিতে আবারও এগিয়ে আসলো মহাজন।
দেশীয় কৃষি ব্যবস্থা পুরো ধ্বংস করে দিয়ে বিদেশ (ইন্ডিয়া) থেকে কম দামে পণ্য আনা শুরু করলো। ইন্ডিয়া না করে দেয়ার পর এখন ইন্ডিয়ার চাল কিনছে সিঙ্গাপুর, দুবাই হয়ে। পাচার করে দিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
একই সাথে সরকারের ইলিশ উপদেষ্টা কিছু মাস আগে ঘোষণা দিয়েছেন একটা বড় দেশ শুধু বন্দর আর চর দখলেই শেষ না করে কৃষি জমিও চাচ্ছে। সেই দেশটি প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকে সরাসরি না শুনে, বাংলাদেশের কৃষি জমি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিছুদিন আগে তারা ইউক্রেনের কৃষি জমি দখলে নিয়েছে। ভবিষ্যতের খাদ্য সংকটে নিজেদের মহাজনী বজায় রাখার সহজ পদ্ধতি অন্যের কৃষি জমি দখল করা।
আর এতে অনেকটা পরিকল্পনা মাফিক দেউলিয়া করে দেয়া হয়েছে কৃষি খাতে ঋণ নেয়া প্রতিষ্ঠান এবং কৃষকদেরকে।
এখন কৃষক রাস্তায় ঘুরছে, অনেকে টাকা হাতে, সার কেনার জন্য, বীজের জন্য। কিন্তু সবখানে শুধু হাহাকার।
সামনে জলবায়ু পরিবর্তনে বিরূপ প্রভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ উপরের দিকে আছে।
অথচ ইউনুস ব্যস্ত আল্লাহর উপরের (নাউ’জুবিল্লাহ) “উপরওয়ালার” সন্তুষ্টির জন্য “বড় কাজ” করার অপেক্ষায়।

