খাদ্য নিরাপত্তায় আরও বেশি গুরুত্বের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তায় আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। সেচে ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে উপরিস্থিত পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। যাতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে পরিবেশ বিপর্যয় না হয়। সুবিধামতো বৃষ্টির পানি ধরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক চেয়ারপারসন হিসেবে এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে সংযুক্ত হন তিনি।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ব্রিফিং করেন পরিকল্পনা কমিশন সদস্য সরকারের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম। তিনি প্রকল্পের বিভিন্ন দিকের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সাধারণত পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান একনেক বৈঠক শেষে ব্রিফিং করে থাকেন। তার অসুস্থতাজনিত কারণে কমিশন সদস্য ব্রিফ করেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি আছেন। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে সংশ্নিষ্ট সচিবরাও প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে আসাদুল ইসলাম আরও বলেন, প্রকল্পের কাজের মান উন্নয়নে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণেও উন্নতমান বজায় রাখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ভারী যানবাহন চলাচল উপযোগী করে শহরের ন্যায় গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামোও উন্নত করতে হবে। কারণ, গ্রাম-শহর তফাৎ কমে আসায় গ্রামীণ সড়ক দিয়েও ভারী যানবাহন পরিবহনের প্রয়োজন হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়েও কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, সারাদেশে ১০০ বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়ার প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহনে চাহিদা আরও বাড়বে। এ কারণে রানওয়ের উন্নয়ন প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যাতে পানি দূষিত না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। অতীতে এ ক্ষেত্রে অনেক দুর্বলতা ছিল।

এক হাজার ৬৬৮ কোটি টাকার ৪ প্রকল্প অনুমোদন: একনেকে মঙ্গলবার মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে একনেকে মঙ্গলবার মোট চারটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে একটি সংটি সংশোধনী। বাকি তিনটি নতুন প্রকল্প। কোনো প্রকল্পেই বিদেশি ঋণ বা অনুদান নেই। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সরকার ও বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থেই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও শাহমাখদুম বিমানবন্দর, রাজশাহীর রানওয়ে উন্নয়ন। ৪৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কদম রসুল অঞ্চলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও ভূ-উপরিস্থিত পানি উন্নয়নের মাধ্যমে বৃহত্তর দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলার সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *