সু চির বিরুদ্ধে ১১ কেজি স্বর্ণ ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

সু চির মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ।

সু চির মুক্তি দাবিতে বিক্ষোভ। এএফপি ফাইল ছবি।

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতির নতুন অভিযোগ তুলেছে জান্তা সরকার। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারি গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, সু চি অবৈধভাবে ছয় লাখ ডলার ও ১১ কেজি স্বর্ণ আত্মসাৎ করেছেন। খবর এএফপির।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় অং সান সু চিকে। অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে চলা সংঘর্ষে প্রায় ৮৫০ জন নিহত হয়েছে।

অভ্যুত্থানের পর থেকেই সু চি গৃহবন্দী রয়েছেন। সু চির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন আইনভঙ্গসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। নতুন অভিযোগ হলো, তিনি ইয়াঙ্গুনের সাবেক আঞ্চলিক মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে ছয় লাখ ডলার ও ১১ কেজি স্বর্ণ ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন। মিয়ানমারের সরকারি পত্রিকা গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলছে, সু চি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে এ–সংক্রান্ত প্রমাণ রয়েছে বলেও ওই পত্রিকার খবরে জানানো হয়েছে। এসব কারণে দুর্নীতি দমন আইনের ৫৫ ধারায় সু চির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

দাতব্য সংস্থার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে সু চি দুটি জমি ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েক সপ্তাহের আইনি লড়াইয়ের পর আগামী সপ্তাহে সু চির বিরুদ্ধে আনা দুটি মামলার বিচার শুরু হবে।

আগামী সোমবার নেপিডোতে সু চির বিরুদ্ধে আনা নির্বাচনে প্রচারে বিধিনিষেধ ভঙ্গের অভিযোগ ও অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার অভিযোগের বিচার হবে। ১৫ জুন সু চি, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের আরেকজন জ্যেষ্ঠ নেতার বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী কাজের অভিযোগের বিচার শুরু হবে।

সু চির আইনজীবী খিন মং জ এএফপিকে বলেন, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও দুর্নীতির অভিযোগে সু চিকে দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে। সু চিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে ও তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করতে তাঁর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।

সু চি ১৫ বছরের বেশি সময় গৃহবন্দী ছিলেন। ২০১০ সালে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। ক্ষমতায় থাকাকালে মিয়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সেনা নির্যাতন ও সহিংসতার প্রতিবাদ না করায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সু চির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ক্ষমতা দখলের পর আগামী দুই বছরের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। তবে এনএলডি দলকে বিলুপ্ত করারও হুমকি দিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা হলে সু চি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং অভ্যুত্থানের সপক্ষে যুক্তি হিসেবে নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির কথা বলেছেন। ওই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে সু চির দল এনএলডি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *