সীমান্তে বিএসএফের ‘খবরদারি’ বৃদ্ধির প্রতিবাদ মমতার

সীমান্তে বিএসএফের নজরদারির এলাকা বাড়িয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও লিখেছেন তিনি।

ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) এখতিয়ার সীমান্ত এলাকার ১৫ কিলোমিটার। এই জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন তাঁরা। বিএসএফের জওয়ানরা সীমান্তের ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে টহল, তল্লাশি, সন্দেহজনক পণ্য বাজেয়াপ্ত ও চোরাকারবারিদের ধরপাকড় করতে পারেন। কিন্তু ১১ অক্টোবর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এক নির্দেশিকায় বিএসএফের এই টহলদারি এলাকা ১৫ কিলোমিটারের জায়গায় ৫০ কিলোমিটার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ সীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশ ঘিরে।

গতকাল রোববার মমতা শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিএসএফের এই এলাকা বর্ধিতকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানান। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গকে কোনো ভাগাভাগি করা চলবে না। উত্তরবঙ্গের সীমান্ত পাহারায় বিএসএফের এখতিয়ার বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তও তিনি মানবেন না। মানবে না উত্তরবঙ্গও। মমতা দাবি করেছেন, উত্তরবঙ্গকে ঘিরে এবার ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নিয়ে চলতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে কারণেই বিএসএফের নজরদারি এলাকা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘তাই বলতে চাই, উত্তরবঙ্গ এসব মানবে না। বাংলা ভাগাভাগিও নয়। সবাই একসঙ্গে আছি, থাকব; আমরা এখানে সেই সমাজই চাই।’
বিএসএফের খবরদারি বাড়ানোর এখতিয়ার বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘এর মানেটা কী?’ অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘লোক মারলে হিসাব দেয় না! কিছু রাজনৈতিক লোক এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন দাঙ্গাকে উসকানি দেওয়ার জন্য। আমাদের শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও মালদহ সীমান্তে এমন সিদ্ধান্তের দরকার নেই। এখানে আমাদের সঙ্গে নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে।’

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সীমান্তপারের সন্ত্রাস, আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থান, বিশ্বব্যাপী যেখানে ধর্মীয় কারণে গোলযোগ চলছে, সেই আবহে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা মুখ্যমন্ত্রীর মতো সাংবিধানিক পদে থাকা মানুষের কাছে প্রত্যাশিত নয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *