জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হলেই গ্রেপ্তার: ডিএমপি কমিশনার

আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ রাস্তায় বের হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে, আনা হবে আইনের আওতায়। যন্ত্রচালিত কোনো যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ছাড়া। এ বিধি কার্যকর থাকবে কাল থেকে শুরু হতে যাওয়া সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউনের পুরোটা সময়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এসব কথা জানিয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ রাস্তায় থাকবে। কোনো যানবাহন বের হলে দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলা করা হবে। সংগত কারণ দেখাতে না পারলে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হবে। এবার পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকবে। পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকবে বলেই আপনারা নিরাপদে থাকবেন। দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলায় সাজা ৬ মাসের জেল ও জরিমানা। এর পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতেও সাজা দেওয়া হবে।’

মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘হার্ডলাইনে’ থাকবে। এমনও হতে পারে, প্রথম দিনেই গ্রেপ্তার পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সর্বাত্মক লকডাউনে ডিএমপি বিভিন্ন ইউনিটের উপকমিশনাররা বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।

সর্বাত্মক লকডাউনে শপিং মল, কমিউনিটি সেন্টার, মার্কেট, দোকানপাট—সব বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজারে এর আগে ভিড় দেখা গেছে। অলিগলির সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সে কারণে কাঁচাবাজার রাস্তায় এনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো হবে। তবে কাঁচাবাজারে কেউ কোনো যন্ত্রচালিত গাড়িতে যাতায়াত করতে পারবেন না। প্রয়োজনে রিকশা ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান মোহা. শফিকুল ইসলাম।

গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তাঁরা পরিচয়পত্র দেখানো সাপেক্ষে যন্ত্রচালিত যানবাহনে চলাচল করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরে বের হতে হবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোভিড টেস্টের জন্য যেতে হলে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা দেখিয়ে যেতে পারবেন। ওষুধের দোকানে ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে যেতে পারবেন, তবে যন্ত্রচালিত যানবাহনে নয়। খাবারের হোটেল খোলা থাকবে, তবে খাবার নিয়ে আসা যাবে, হোটেলে বসে খাওয়া যাবে না।

শফিকুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আসা যাত্রীরা যন্ত্রচালিত গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন পাসপোর্ট দেখিয়ে। তবে আগত ব্যক্তিকে কেউ আনতে গেলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হবে। পুলিশ আচরণে সন্তুষ্ট হলে তাঁকে ছেড়ে দেবে, না হলে আইনের আওতায় আনবে।

রিকশায় সংক্রমণের ঝুঁকি কম বলে তা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি–প্রধান। তিনি বলেন, মুভমেন্ট পাশের কোনো কার্যকারিতা নেই। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে পারবে না। শিল্পকারখানার মালিকেরা তাঁদের গাড়িতে চলতে পারবে না, রিকশায় যেতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। এ সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠানও সীমিত পরিসরে চালু থাকার কথা বলা হয়েছিল। পুরো সময়ে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও চালু ছিল ব্যক্তিগত পরিবহন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *