দুই বছরের জন্য জাতীয় সরকার চান ডা. জাফরুল্লাহ

দুই বছরের একটি জাতীয় সরকার সব সংকটের সমাধান করতে পারে বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এখন বর্তমান সরকারের দায়িত্ব হবে পদত্যাগ করে জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আর জাতীয় সরকারকে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ আয়োজিত আলোচনাসভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

‘প্রবাসীদের সঙ্কট উত্তরণ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী অধিকার পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী মো. কবীর হোসেন। প্রবাসী অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব কুমার পোদ্দারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, লেখক ও গবেষক ড. দিলারা চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজীজ উলফাত, ভাষানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, আমরা দেশ স্বাধীন করা মুক্তিযোদ্ধা। আর প্রবাসীরা দেশ গড়ার মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতো প্রবাসীরাও নানা সমস্যা-সংকটে আছেন। বর্তমান সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় বলে এ সকল সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই এই সরকার বা দলীয় সরকারের অবসানের পর প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করে একটা জাতীয় সরকার বা নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণতন্ত্রের স্বার্থে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও কারাবন্দি আলেম-ওলামাদের মুক্তি দেওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, জনগণকে আপনারা কথা বলতে দেন না, মিটিং করতে দেন না, ভারত নিয়ে কথা বললে আপত্তি আসে। অথচ সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী ভারত সম্পর্কে কি বলেছেন, তা তো নিশ্চয়ই দেখেছেন এবং শুনেছেন। গণমাধ্যমে তা উঠে এসেছে। আজকে যখন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন তখন গায়ে লাগে না। ভারতকে অবজার্ভ করা আমাদের দায়িত্ব। ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরে তা বাস্তবায়নে আহ্বান জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রবাসে মারা যাওয়া সকল নাগরিকের মরদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে আনতে হবে। প্রবাসীদের প্রবাস থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও ভোটদানের সুযোগ দিতে হবে। বিমানবন্দরে প্রবাসী হয়রানি বন্ধ করতে হবে। প্রবাসীদের জন্য যুগোপযোগী দ্বৈত নাগরিকত্ব আইন ও পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। দালালমুক্ত পাসপোর্ট ও দূতাবাস সেবা নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসী নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। জাতীয় বাজেটে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। বিদেশে কাগজপত্রবিহীন প্রবাসীদের বৈধকরণে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। প্রবাসীদের জন্য পর্যাপ্ত বাংলাদেশি দূতাবাস ও শ্রমকল্যাণ উইং স্থাপন করতে হবে।

এ ছাড়া অভিবাসন ব্যয় এক লাখ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ও প্রবাস ফেরতদের কর্মসংস্থান ও সুদমুক্ত পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে।