নারীর এডিট করা অশ্লীল ছবি ভাইরাল করায় বখাটের কারাদণ্ড
এক নারীর এডিট করা অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করায় শ্যাম দাস (৩৮) নামের এক ব্যক্তির সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাকে নগদ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলই) দুপুরে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুন্যাল আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয়। আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় এই মামলার আসামি শ্যাম দাস আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুন্যাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রায়ে বলা হয়েছে এই মামলার অন্যতম আসামি শ্যাম দাসের (৩৮) বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭ ধারার অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাকে দোষী সাব্যস্তক্রমে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হলো। এছাড়া নগদ পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হলো। অনাদায়ে থাকবে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
এই মামলার আলামত রাষ্ট্র বরাবর বাজেয়াপ্ত করা হলো এবং তা বিধি মোতাবেক নিষ্পত্তি করতে হবে। এছাড়া সিআরপিসির ৫৪৫ ধারার বিধান মতে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে জরিমানার পাঁচ লাখ টাকা এই ভিকটিম পাবেন। আর মামলার আসামির হাজতবাস মূলে কারাদণ্ড থেকে বাদ যাবে।
অ্যাডভোকেট ইসমত আরও বলেন, নাটোরে লালবাজার এলাকার এক নারী ২০১৪ সালের ২৪ মে সদর থানায় তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলার এজাহারে ওই নারী বলেন, তিনি রাজশাহী গভঃ কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করে বর্তমানে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষার্থী। তার প্রতিবেশী বাবলু চন্দ্ৰ একজন মাদকসেবী ও লম্পট প্রকৃতির লোক (২০১৪ সালে তার বয়স ছিল ৪৫ বছর)। তিনি তাকে প্রায়ই কু-প্রস্তাব দেন এবং রাস্তাঘাটে যৌন হয়রানি করেন।
এর একপর্যায়ে বাবলু চন্দ্র তার সহযোগী শ্যাম দাসকেও (ওই সময় তার বয়স ছিল ৩০ বছর) ওই নারীর পেছনে লাগান। তারা দুইজনে মিলে যে কোনো মাধ্যমে ওই নারীর ছবি সংগ্রহ করেন এবং তা এডিট করে অশ্লীল ছবি তৈরি করেন।
পরে ওইসব অশ্লীল ছবি দেখিয়ে তার বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এই টাকা না দিলে তারা ওই নারীর এডিট করা ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দেন। পরে তারা দাবি করা চাঁদার টাকা না দিলে দুইজনে মিলে ওই অশ্লীল ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেন। এ ঘটনায় তিনি থানায় গিয়ে মামলা করেন।
অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বলেন, এ ঘটনার পর পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরে তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে আসার পর সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এরই মধ্যে জামিনে আসার পর বয়সজনিত কারণে এক নম্বর আসামি বাবলু মৃত্যুবরণ করেন। পরে শ্যাম দাসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় আজ আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
সূত্রঃ বাংলানিউজ২৪