এক রাতেই ভোল পালটে যুবলীগের সন্ত্রাসী রিমন হতে চাচ্ছে যুবদল নেতা!

মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন, বিশেষ রিপোর্ট

দুইদিন আগেও যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থেকে শ্যামলী ২ নং রোড এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো রিমন খন্দকার নামে এক সন্ত্রাসী। যদিও তার পুরো নাম আবু জাফর খন্দকার ওরফে রিমন ওরফে নাডা টাকলা রিমন। ৮০ এর দশকের শেষে গভঃ ল্যাবেরেটরী স্কুলে ঘুষ দিয়ে ভর্তি এবং এখান থেকে টেনেটুনে এস এস সি পাশ করেছিলেন ১৯৯৭ সালে। ১৯৯৯ সালে এইচ এস সি পরীক্ষা না দিয়েই তার বড় ভাই কামালের পারিবারিক ভিসা আবেদনের মাধ্যমে চলে যান আমেরিকায়। প্রথম দিকে ভাইয়ের সাথে নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে রাস্তার ধারে তাবিজ ও কম্বল বিক্রি করতেন। পরবর্তীতে তিনি সেখানে ট্রাক ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এক পর্যায়ে আমেরিকাতে স্ত্রীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করবার মামলায় দোষী সাব্যাস্ত হয়ে জেল খাটেন কিছুদিন। বাতিল হয় আমেরিকায় থাকার ভিসা। দেশে ফিরিতে বাধ্য হন এই ফেরারী আসামী।

এখন আওয়ামী বফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের ঠিক পরপর রাতারাতি ভোল পাল্টে ২৮ নং ওয়ার্ডের বিএনপি নেতা জনাব বাবু ও রুহুল কুদ্দুসের সাথে সখ্যতা করে যুবদলে ভীড়তে চাইছে এই বহুরূপী সন্ত্রাসী। আমাদের নবযুগ প্রতিবেদনের সূত্রে জানা যায় শ্যামলী ২ নং রোডে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন রিমন খন্দকার। স্কুল ও কলেজ জীবন থেকে সন্ত্রাসের সাথে জড়িত এই রিমন খন্দকার। যাকে তাকে মারধর, হত্যার হুমকি, উগ্র আচরন, বেয়াদপি, খুন, ধর্ষন এমন কোনো অপরাধ নেই যা নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। সাম্প্রতিক সময় কয়েকজন মাদ্রাসার ছাত্রকে মেরে আজীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছিলো এই সন্ত্রাসী, এক কলেজ ছাত্রকে, তার বাবা-মাকে মেরে প্রায় অন্ধ কিংবা তার বাড়ির পাশের নির্মানাধীন বিল্ডিং থেকে মাসিক চাঁদা গ্রহন থেকে শুরু করে তার বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ নিয়ে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ও বিরক্ত। তার এসব কিছুর তথ্য আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আমরা সিরিজ আকারে তা একের পর এক তা প্রকাশ করতে থাকবো।

এই সন্ত্রাসী বীরদর্পে বলে বেড়াতো, ‘আমি কলেজ জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম’, এখন বলে বেড়াচ্ছে, ‘আমি আজীবন বি এন পি;র রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম’। রিমন খন্দকারের পিতা ছিলেন একজন সাধারণ কাস্টম অফিসার। কাস্টম অফিসার থাকা অবস্থায় ৯০ দশকের গোড়ার দিকে কি করে তিনি ঢাকাতে এমন আলিশান বাড়ি তিনি তৈরী করেছেন, এই নিয়েও এলাকাবাসি এখন প্রশ্ন তুলেছেন। শ্যামলী ২ নং রোডেই রয়েছে তাদের সেই ৫ তলা বাড়ি। জানা গেছে বাকী তিন ভাই রানা, রাজ ও কামালের ফ্ল্যাট দখল করে সেখান থেকে রীতিমত ভাড়া উঠিয়ে খাচ্ছে এবং আশে পাশের বিল্ডিং থেকে চাঁদাবাজিই তার একমাত্র পেশা।

আওয়ামীলীগের পুরো আমলে মুজিব কোট পড়ে চরম আওয়ামীলীগার সাজা এই বহুরূপীটি তার রাজনৈতিক স্নিবার্জেথ চরিতার্রথের জন্য স্ত্রী ও সন্তানকে ব্যবহার করতে পেছপা হয়নি। শিশু সন্তানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭-ই মার্চের ভাষন মুখস্থ করিয়ে যেখানে সেখানে কারন ছাড়া হাস্যকরভাবে তা শুনিয়ে বেড়াতো এবং ফায়দা নেবার চেষ্টা করতো। কিন্তু তার চরিত্রের সম্পর্কে সকলের ধারনা থাকবার কারনে কোথাও সে স্থান পায়নি।

ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগ কোথাও তার কোনো ধরনের পদের সংবাদও পাওয়া যায়নি। সব যায়গাতেই সে ছিলো ঘৃণার ও বিরক্তির এক ব্যাক্তি। এমনকি নিজ শিশু পূত্রকে ব্যবহার করে কবিতার বই বের করেছিলেন শুধু মাত্র একটু পাদ-প্রদীপের নীচে আসার জন্য। জানা যায় নিজে কবিতা লিখে সেগুলো ছেলের নামে চালিয়ে দিতেন তিনি। একই সাথে তার এলাকাতে এক বছর আগে কিছু নিরীহ হিজড়াদের বেধড়ক পেটান তিনি। তার বাসার কাজের ছেলে ইকবালের সাথে তার সমকামিতার সম্পর্ক ছিলো বলে তারই পরিবারের একজন জানান। এই সম্পর্কের কথা জানাজানি হবে বুঝতে পেরে ইকবালকে স্বর্ণ চুরির অপবাদ দিয়ে এলাকা ছাড়া করেন এই রিমন খন্দকার। এক সময় মিডিয়াতে অভিনয়ের নামে নিজ বাড়িতে বিভিন্ন নারীদের এনে করিয়েছিলেন দেহব্যবসা। এমন কয়েকজন সাক্ষীদের সাথেও আমাদের কথা হয়েছে।

গেলো ৭ জানুয়ারীর আওয়ামীলীগের ফ্যাসিস্ট একতরফা নির্বাচনের সময় রিমন খন্দকার আওয়ামী নেতা জাহাঙ্গীর কবীর নানকের নির্বাচনী সমন্বয় দলের একজন হিসেবে কাজ করেন। এই সময় তিনি এলাকার বিএনপি-জামাত সমর্থকদের ঘর থেকে বাধ্য করেন ভোট দিতে। ভোট না দিলে বাড়ি ঘরে হামলার হুমকিও প্রদান করেছিলেন তিনি।

একটা সময় বেশ কিছুদিন সে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম নিখিলের সাথে রাজনীতি করতো। সেখান থেকে অতিরিক্ত চালাকি আর অর্থ চুরির অভিযোগে বিতাড়িত হয়ে চেষ্টা করে বঙ্গবন্ধুর বোন জামাই সেরনিয়াবাতের দৌহিত্র ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমানের সাথে যুবলীগের রাজনীতি। অর্থ আত্নসাত, অন্তর্গত কুটিল রাজনীতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদির অভিযোগে ব্যারিস্টার তৌফিকের বাসভবনে এক সময় সে নিষিদ্ধ হয়। তার পরই সে শুরু করে ঢাল-তলোয়ারহীন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের রাজনীতি। একটা পর্যায়ে সেখান থেকেও তাকে প্রহার করে বিতাড়িত করা হয়।

কখনো শ্যামলীর রাস্তায় শোভা পেতো তার পোস্টার। পাশে দিয়ে কখনো লেখা থাকতো সার্জেন্ট, কখনো কর্ণেল, কখনো মেজর। জানা যায় তার বড় ভাই জিয়াউল মিল্লাত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা। একজন উচ্চ পদস্থ জেনারেলের সাথে ব্যাক্তিগত সমস্যার জেরে সেনাবাহিনী থেকে তিনি অবসর নেন। আমাদের প্রতিবেদকের সূত্রে এও জানা যায় যে বর্তমানে এই মেজর জিয়া গত ১০ বছর ধরে পঙ্গু অবস্থায় নিজ বাড়িতে শয্যাশায়ী। রিমন তার ভাইয়ের এই শারীরিক অবস্থার সুযোগ নিয়ে তাদের বাসার সাথের লাগোয়া এপার্টমেন্টে রীতিমত দেহব্যবসার মচ্ছব খুলে বসেছে। আপন বড় ভাই থেকে শুরু করে এলাকার মুরুব্বি কাউকেই তোয়াক্লকা করছেনা এই টাকলা রিমন। পায়েল, রাত্রি, সুজানা নামের তিন নারীকে তার বাসায় ভাড়া দিয়ে এখন সে দেহ ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ উপার্জনে লিপ্ত। বিশেষ করে দেহব্যবসায়ী নারী পায়েলের কাছে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের মনোরঞ্জনের মাধ্যমে রিমন এতদিন ধরে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই ছাড়াও বাড়ীর কাজের মেয়ে যাদের নামের অদ্যাক্ষর ‘র’ বা ‘আ’, তাদের সাথে বিভিন্ন সময়ে তার পরকীয়ার নানাবিধ প্রমাণ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে যা আমরা এই পত্রিকাতে সিরিজ আকারে প্রকাশ করবো। এই বিষয়ে এই এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তির সাথে আমাদের প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘এই পায়েল মেয়েটি ও তার বাকী দুই সহযোগী এলাকাতে দেহব্যবসা করে আসছে টাকলা রিমনের সাহায্যে। এই এলাকাতেই রয়েছে একটি মসজিদ আর মসজিদের পাশেই চলছে এমন রমরমা দেহব্যবসা যা এমন আবাসিক এলাকার জন্য অত্যন্ত আপত্তিকর। এতদিন আমরা কিছু বলতে পারিনি ভয়ে কিন্তু এইবার আমরা এই ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নিবো সমস্ত এলাকাবাসী মিলে’

এই ছাড়াও রিমন খন্দকার শারীরিক সম্পর্কের জন্য যেসব দেহব্যবসায়ীদের কাছে যেতেন তাদের দুইজন আমাদের সাথে সাম্প্রতিক সময় যোগাযোগ করে সমস্ত তথ্য আমাদের জানিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন তো রিমন খন্দকারের স্ত্রী বাসায় না থাকলে তার বাসায় গিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ের বিপ্লবী কোটা আন্দোলনের সময় হঠাত করে ভোল পাল্টান রিমন খন্দকার। কারফিউ চলমান থাকা অবস্থায় তিনি ভাড়া করে কিছু কিশোরদের এনে এলাকায় শো ডাউন করেন এবং এলাকাবাসীকে বুঝাতে চান যে তার কথাতেই সব কিছু চলবে। জানা যায় এলাকার প্রত্যেক বাড়ী থেকে সাপ্তাহিক মাসোহারার জন্যই তার এই শো ডাউন ছিলো। এই কুকুরের মত নাক সমৃদ্ধ ব্যাক্তিটি বুঝতে পারেন আওয়ামী সরকারের সময় আর বেশীদিন নেই। ফলে তিনি রাতারাতি ভোল পালটে হয়ে যেতে চান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী। বন্দনা শুরু করেন দেশ নায়েক তারেক রহমানের। অথচ তারেক রহমানকে ডন, অগ্নিসন্ত্রাসী, খুনী বলে তার দেয়া বেশ কিছু বক্তব্যের ভিডিও আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।

আজীবন সুযোগ সন্ধানী এই সন্ত্রাসীটি না কখনো হতে পেরেছে আওয়ামীলীগের কেউ, না হতে পেরেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের, না হতে পেরেছে একজন মানুষ। নিজ এলাকার নারীদের সাথে অশ্রাব্য ব্যবহার, গালাগাল, ধর্ষনের হুমকি থেকে শুরু করে সব কিছুই এই সন্ত্রাসীর জীবন ভান্ডারে বিদ্যমান। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন সে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতাদের অফিসে অফিসে গিয়ে এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল হক খান কাজল, আওয়ামী সমর্থিত বুদ্ধিজীবি ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার, যুবলীগ কর্মী শিবলী সাদিক প্রমুখ কে কোথায় রয়েছে এমন তথ্য দিয়ে ধরিয়ে দিতে চাইছে। এইসব গোপন তথ্য দিয়ে ধরিয়ে দেবার সমস্ত তথ্য, সভার সময় বেশ কিছু ছবি এবং অডিও রেকর্ডিং আমাদেরহাতে এসে পৌঁছেছে যা আমরা ক্রমান্বয়ে প্রকাশ করবো। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের শ্যামলী ওয়ার্ডের নেতারা এই রাজাকারটিকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছে না এবং তাকে আইনের আওতায় আনার সব ধরনের চেষ্টা করছে। এলাকাবাসী আড়ে আবডালে তাকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করেছে। কেউ কেউ তাকে এলাকার ‘টাকলা রাজাকার’ বলেও আড়ালে অভিহিত করছে।

আমাদের প্রতিবেদক সূত্রে জানা যায় যে, রিমন খন্দকারের বাসার সামনে একটি নির্মণাধীন বিল্ডিং থেকে গত চার বছর প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে চাঁদা নিতেন যার নানাবিধ প্রমাণ, বিকাশ রিসিপ্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এমনকি আপন নিজ দুই ভাই জনাব মাসুদ রানা মনি এবং জনাব খন্দকার রাজ ও জনাব খন্দকার কামালের নামে থাকা পিতৃপ্রদত্ত ফ্ল্যাট এখন এই সন্ত্রাসীর দখলে। নানাবিধ ষড়যন্ত্র, হুমকি, অস্ত্র প্রদর্শন করে তিনভাইকে এতদিন ধরে দেশে আসতে বেঁধা দিয়েছিলো। আমাদের প্রতিবেদক এই আলাকাতে গত তিন ধরে তার ব্যাপারে যে তথ্য সংগ্রহ করেছে সেটির চিত্র ভয়াবহ। ভাইদের তৈরী করা বাড়িতে দখল করে নিয়েছে পার্কিং লট। বানিয়েছেন অফিস। এই অফিস তিনি কি করে পেলেন তা নিয়ে ঐ ফ্ল্যাটের বিভিন্ন মালিকদের অসোন্তোষের কথাও জানা গেছে। তার বাবার বাড়িড় ছাদে অবৈধ ঘর বানিয়ে দখল করে নিয়েছে তিন ভাইয়ের ফ্ল্যাট। রিমন খোন্দকারের এক ভাই আমাদের এই প্রতিবেদককে জানান, শিঘ্রই তিনি দেশে এসে রিমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কেননা তিনি দিনের পর দিন তার ভাড়া লুটপাট করে মেরে দিয়েছিলেন। তিনি জানান যে তার প্রায় ৯ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা তিনি ভাড়া বাবদ মেরে দিয়েছেন।

আমাদের সূত্র বলছে তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে শের-ই-বাংলা নগর থানাতে দুইটি জিডি এবং চাঁদাবাজির জন্য একটি মামলা চলমান। দুইটি পরিবার তার বিরুদ্ধে ধর্ষনের হুমকি ও হত্যার হুমকির জন্য এবং চাঁদাবাজির জন্য মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। স্বৈরশাসক হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই রিমন খন্দকার তার পরিচালিত কিশোর গ্যাঙ্গের মাধ্যমে এলাকাতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। সে এতই ধূর্ত যে এলাকাবাসীকে বলে বেড়ায় ডাকাত আক্রমন করবে এবং তা করবে বিএনপির ব্যাক্তিরা। অথচ ২৮ নং বিএনপি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা কর্মীরা এলাকাতে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে নিজেরাই লাঠি হাতে পাহারা দিচ্ছে।

কখোনো নিজেকে আমেরিকার সেনাবাহিনীর কর্ণেল, কখনো মেজর পরিচয় দিয়ে প্রথম দিকে চাঁদাবাজি করতো। এখন বলে বেড়াচ্ছে তার ভাই বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার উয জামানের বন্ধু। এই কথা বলে নতুন পদ্ধতিতে চাঁদাবাজির মহোতসব করতে চাইছে। আগের সময়গুলোতে আওয়ামীলীগের পরিচয় ব্যবহার করে শুরু করে যাকে-তাকে হুমকি ও অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল। প্রতিবারই তার নতুন পীর/গড ফাদার জন্মাতে থাকে। প্রত্যেকবারই তার নতুন আশ্রয়দাতা জন্মাতে থাকে। যখন যাকে ব্যবহার করে বেঁচে থাকা যায় আরাম আর আয়েশে।

রিমন খন্দকারের কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন না, ব্যবসা করেন না। দৃশ্যত তার আয়ের কোনো রকমের তথ্যও আমাদের হাতে নেই, ফলে তার আয়ের উতসো নিয়ে এলাকাবাসীই প্রশ্ন তুলেছেন। তবে তার স্ত্রী অনলাইনে ভাত ও তরকারি এবং মাঝে মাঝে কেক বিক্রি করে সংসার চালান বলে জানা গেছে। জানা যায় ২০০৮ সালের দিকে প্রতারক প্রতিষ্ঠান ডেস্টিনির ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান বাটপার ছিলেন তিনি। এই রিমন খোন্দকার কালো টাই পরে বিভিন্ন মানুষের অর্থ মেরে দিয়ে প্রায় বছর খানিক পলাতক ছিলেন। এরপর মেট্রো রাইড নামে উবার নকল করে একটি প্রতিষ্ঠান বানিয়েছিলেন। যেখানে তার আপন খালাতো ভাইয়ের প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা মেরে দিয়ে তাকে সর্বশান্ত করেন। এভাবেই দিনের পর দিন প্রতারণা, সন্ত্রাস, হত্যা, ধর্ষন, চাঁদাবাজীর এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি।

রিমন খন্দকারের ব্যাপারে আমরা তারই ঘনিষ্ঠ এক আত্নীয়ের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘মূলত জীবনে কিছু না হতে পারার আক্ষেপ তাকে এই পর্যায়ে এনে নামিয়েছে। তার বন্ধু-আত্নীয় স্বজনরা যখন অনেক উপরে চলে গেছেন, তখন রিমন পড়ে থেকেছে অন্ধকারে। তার মা তাকে অতিরিক্ত লাই দিয়ে তাকে মানসিকভাবে পঙ্গু করে তুলেছিলেন। আমি এক সময় গান গাইতাম। এখন দেশের বাইরে থাকি। বড় চাকুরী করি। এই নিয়েও রিমনের হিংসার অন্ত নেই। আমাকে দেখে সে ছোট বেলায় গানের স্কুলে ভর্তি হলো অথচ তার গানের কন্ঠ ছিলোনা। এই যে ছোট বেলা থেকেই অন্যের মত হতে চাওয়া, এটাই তার কাল হয়েছে। কখনো সে তার নিজেকে খুঁজে পায়নি। সে হতে চেয়েছে অন্যের মতন। আমার বোনকে নিয়েও আগে আড়ালে আবডালে নানা ধরনের নোংরা কথা বলে বেড়াতো সে। শিক্ষার অভাব, অর্থনৈতিকভাবে স্ত্রীর সামান্য আয়ের উপর নির্ভরশীলতা, নিরাপত্তাহীনতা, আগের করা অন্যায়ের বিষয়ে পরিতাপহীনতা সব কিছু মিলিয়ে আজকের এই দানব রিমন তৈরী হয়েছে। হয়ত একদিন কেউনা কেউ তাকে রাস্তায় হত্যা করে চলে যাবে অতিষ্ট হয়ে। এত মানুষকে কষ্ট আর যন্ত্রণা দিয়েছে, এত মানুষকে সে জ্বালিয়েছে যেগুলো আর বলে শেষ করা যাবে না।এখনই যদি সে নিজেকে চূড়ান্ত শুধরে না নেয় এবং অনুধাবন করে যে, তার মত অশিক্ষিত ও হৃদয়হীন মানুষকে কেউই সমাজে ঠাঁই দিবে না, নিজেকে আলাদা করে অন্তত ১০ বছরের জন্য লোকচক্ষুর অন্তরালে না চলে গেলে এই ছেলেটির বিপদ অতি-আসন্ন’

আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সিরিজ আকারে এই সন্ত্রাসীর সমস্ত অপকর্ম তুলে ধরে তা দেশবাসীর নিকট জানিয়ে দিবো যাতে করে এই বাংলাদেশে এমন ভোল পাল্টানো সন্ত্রাসীরা আর কখনোই কোনো রাজনৈতিক দলে আশ্রয় বা প্রশ্রয় না পায়। এরা সমাজের কীট। এরা না আওয়ামীলীগ, না বিএনপি। এরা সুযোগ সন্ধানী ভোল পাল্টানো বাটপার। এদের মুখোশ দ্রুত খুলে দিতে হবে।