একাত্তরের জামাত
এম ডি কামরুল হাসান, যুক্তরাজ্য
১৯৭১ এর যুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধ করেনি। অস্ত্র হাতে নেয়নি। এই কারনে শুরু হয়ে গেল রাজাকার উপাধি। ………এখন প্রমাণিত হলঃ- ৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো।
আজ ন্যায্যমুল্যে কিনা স্বাধীনতা ‘বিনামুল্যে’ ভোগ করছে ভারত।”
পৃথিবীর নিকৃষ্টতম প্রজাতি জামাত-শিবিরের এমন প্রচারণা নতুন নয়। আগেও লিখেছিলাম যে, এই দলটির সৃষ্টি হয়েছে মিথ্যা দিয়ে। তাদের প্রচার প্রচারণার সিংহভাগ মিথ্যা। এটা এমন একটা দল যারা নিজেদের অবস্থান সঠিক প্রমাণ করতে সাহাবা থেকে শুরু করে নবী রাসুল, এমনকি কোরআন-হাদিস নিয়েও বিতর্কিত প্রশ্ন তোলে।
রাজনৈতিক দল গঠন করার কথা থাকলেও আদর্শে মৌদুদীয় ধর্ম মিশিয়ে তারা নতুন ধর্মের প্রবর্তন করেছে যার ইলাহ মওদুদী এবং শেষ নবী গোলাম আযম। এই দলের সকল নেতাই নবীতূল্য। এরা ইসলামের নবীদের গুনাহগার বলার শিক্ষা পেলেও, জামাতি নবীদের নিষ্পাপ মনে করে।
জামাতিরা অমুসলিম এবং/অথবা এটা ইসলাম বহির্ভূত একটি ধর্ম – এতে আমার বা আমাদের কিছু যায় আসে না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এরা এখনও এই দেশকে, এই দেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করে না। বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করলে এই দেশের কোনো বৈধ সন্তান কখনোই বলতে পারে না যে, “এখন প্রমাণিত হলঃ- ৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো।
আজ ন্যায্যমুল্যে কিনা স্বাধীনতা ‘বিনামুল্যে’ ভোগ করছে ভারত।”
নতুন প্রজন্মের অনেকেই এমন লেখা শেয়ার করছে। তাদের বাবা-দাদারা নিঃসন্দেহে রাজাকার ছিল। বিবেক থাকলে প্রশ্ন করা উচিত – কী প্রমাণিত হয়েছে?
জামায়াতে ইসলামীর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো – তারমানে কি মুক্তিযুদ্ধ ভুল ছিল?
জামাতে ইসলামীর যুদ্ধাপরাধ একটি প্রমাণিত বিষয়।
মুসলিম লীগের সঙ্গে জামাতের পার্থক্য হচ্ছে, মুসলিম লীগেও যুদ্ধাপরাধী ছিল, তবে মোটাদাগে তারা ছিল স্বাধীনতাবিরোধী। কিন্তু জামাত ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অক্সিলিয়ারি ফোর্স। অর্থাৎ দলীয়ভাবেই তারা স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী। আত্মসমর্পণের দলিলে শুধুমাত্র পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কথাই ছিল না, অক্সিলিয়ারি ফোর্সের কথাও উল্লেখ ছিল। ৭১ সালে জামাতিরাও আত্মসমর্পণ করেছিল। স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির জামাত বিরোধিতার মূল কারণ এটাই।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে যারা স্বাধীনতা খুঁজে পায় না, তাদের বিবেক কখনোই জাগ্রত হবে না, হওয়ার কথাও নয়। তাদের নবী দেইল্লা, রাজাকার হয়েও ৭ই মার্চকে স্বাধীনতার উদ্দীপনা বলে ওয়াজ করেছিল। কিন্তু নব্য রাজাকাররা আসল রাজাকারদের হার মানাচ্ছে!
অনেকেই এই মর্মে যুক্তি দেখান যে, জামাতের যুদ্ধাপরাধী নেতাদের কেউ এখন নেই। স্বাধীন বাংলাদেশে যাদের জন্ম, তাদেরকে নিয়ে আপত্তি কেন! ডাক্তার জাফরুল্লাহ সহ অনেকেই এমন আবদার করেছিলেন। আপত্তি কেন তা তাদের কার্যক্রমেই প্রমাণ পাবেন। দূষিত রক্তের ধারা কখনো শুদ্ধ হয় না।