OpinionPolitics

ইউনুসের মহা বাটপারি

আব্দুল্লাহ আল হোসাইন, যুক্তরাজ্য

কাক সাবান চুরি করে গাছে লুকিয়ে রাখার সময় নাকি নিজের চোখ বন্ধ করে রাখে। কারণ কাক ভাবে আমি যেহেতু দেখতেসি না, তাহলে দুনিয়ার কেউই দেখবে না। বাটপার ইউনুস, ডাস্টবিন শফিকসহ তার পুরো উপদেষ্টা পরিষদের অবস্থা হইসে এমন। এরা প্রত্যেকেই এক একটা কন আর্টিস্ট। তারাও এমনভাবে মিথ্যা বলে, ভাবে কেউ তার মিথ্যা ধরতে পারবে না। এরপর ধরা খেয়ে ইজ্জত বাঁচাতে লুঙ্গি খুলে মাথায় টুপি পড়ার মতো হাস্যকর লজিক নিয়ে হাজির হয়।

ডঃ ইউনুসের লন্ডন সফরের পুরোটাই ছিলো ভন্ডামি, মিথ্যাচার আর শঠতায় পরিপূর্ণ। ইতোমধ্যে এসব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনাও হয়েছে অনেক। কিন্তু তারপরও দেখেন কি নির্লজ্জের মতো এরা এটাকে সফল সফর বলতেসে। অই যে বলে না, যার এক কান কাটা সে রাস্তার একপাশ দিয়ে যায়, কিন্তু যার দুই কানই কাটা সে চলে রাস্তার মধ্য দিয়ে। বেহায়া ইউনুস সরকারের হইসে সেই অবস্থা।

সফরে আসার আগে দাবি করসিলো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এর সাথে ইউনুসের সাক্ষাৎ হবে। আসলে সেই সাক্ষাতের বিষয়ে কখনোই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সাড়া দেয়া হয়নি। পুরোটাই ছিলো মিথ্যাচার আর কোটি টাকা খরচ করে ইউনুসের ব্যক্তিগত পুরুষ্কার নিতে আসাটাকে হালাল করার চেষ্টা। এখানে আসার পর ডাস্টবিন শফিক কানাডা সফরের কথা বলে পাশ কাটানোর চেষ্টা করেও যখন পার পাইলো না, তখন বললো বাজেট অধিবেশনের ব্যস্ততার কথা। তার সাথে সুকৌশলে একটা ন্যারেটিভ ধরানোর চেষ্টা করা হইলো যে ইউনুস পাচার করা টাকা উদ্ধারের জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চেয়েছে। দুনিয়ার কোথাও পাচার করা টাকার উদ্ধার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলাপ হয়না। তবুও ভন্ড ইউনুস এই বাটপারি আলাপ দিসে সাক্ষাতে ব্যর্থ হয়ে মুখ রক্ষা করতে।

আবার দেখেন, বিবিসির সাংবাদিক যখন ডঃ ইউনুসকে টিউলিপ সিদ্দিকীর দেখা করতে চাওয়ার বিষয়ে ছাইচাপা দিয়ে ধরসে তখন ইউনুস দাবি করসে, এইটা আইনী ব্যাপার, তাই সে সাক্ষাৎ করবে না। আরে বাটপার, টিউলিপ সিদ্দিকীর ইস্যু আইনী ব্যাপার হলে যদি সাক্ষাৎ দিতে না পার তাইলে কথিত পাচারকৃত টাকা উদ্ধারের মতো আইনী বিষয়ে কেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চাইসিলা? এতো হাস্যকর লজিক যে এরা বানায়, খন্ডাইতেও লজ্জা লাগে। আসলে এরা প্রতিনিয়ত এতো মিথ্যা বলে যে, নিজেরাই আসলে ভুলে যায় কখন কোথায় কি বলসে!

বিবিসির সাথে সাক্ষাৎকারে মিথ্যাবাদী ইউনুস অবশ্য চাপে পড়ে স্বীকার করসে যে দুদকের আইনজীবীরা এখন পর্যন্ত টিউলিপ সিদ্দিকীর আইনজীবীর সাথে কথিত দুর্নীতির মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোন তথ্য শেয়ার করেনি। ইউনুস বলেছে, তদন্ত দীর্ঘস্থায়ী ব্যাপার, তথ্য শেয়ারের সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। কথা হলো যে বিষয়ে এখনো তদন্ত চলমান, এমনকি অভিযুক্তের পক্ষ থেকে বারবার এই বিষয়ে তথ্য ও প্রমাণাদি চাওয়া সত্ত্বেও সেগুলো দেয়া হয়নি, সে ঘটনায় গ্রেফতারি পরোয়ানা কেন জারি করা হয়েছে? বিবিসির সাথে ইউনুসের সাক্ষাৎকার থেকেই এটা পরিষ্কার হয়ে গেসে, যে টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধ আনীত অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা ও বানোয়াট এবং এর স্বপক্ষে নূন্যতম কোন প্রমাণ নেই। যদি থাকতো ইউনুস গলায় সাইনবোর্ড বানায় নিয়ে লন্ডনের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতো!

এখন এই বাটপার ইউনুস সরকারের কি ধারনা যুক্তরাজ্য সরকারের এই সক্ষমতা নেই, কোনটা সত্য ও কোনটা মিথ্যা সেটা যাচাই করার? অবশ্যই আছে এবং তারা করেছেও। আর করেছে বলেই টিউলিপ সিদ্দিকির মতো একজন জনপ্রিয় এমপির বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক অপপ্রচারের প্রতিবাদ হিসেবেই ইউনুসের সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী দেখা করেননি। এটাই তাদের একশন। সাক্ষাৎ না দেয়ার এটাই একমাত্র কারণ। সব সময় জুতা খুলে জুতার বাড়ি দেয়া লাগে না, কিছু না করেও সেটা দেয়া যায়। কিয়ার স্টারমার সেটাই করসেন।

সবচেয়ে হাস্যকর হইলো, কিয়ার স্টারমারের সাথে সাক্ষাৎ না হওয়ায় হতাশ হয়েছেন কিনা, বিবিসি সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে ইউনুস বলেছে সাক্ষাৎ না হওয়ায় নাকি উলটো কিয়ার স্টারমারের হতাশ হওয়া উচিৎ! শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে নাকি এই হতাশায় এখন পর্যন্ত কান্নার রোল চলছে। দুইদিন ধরে ভাত খাচ্ছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী!