ইউনুসের ধাপ্পাবাজি
মোহাম্মদ জাহিন, যুক্তরাজ্য থেকে
সামাজিক নিরাপত্তার আওয়তাধীন সকল ভাতা বন্ধ আছে। যেমন প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা। নতুন কোন অবকাঠামোগত প্রকল্প হাতে নেয়া হয়নি গত এক বছরে। পুরনো প্রকল্পগুলোর মেন্টেইনেন্স খরচও বন্ধ।
শুনলাম রিজার্ভে হাত না দিয়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধের গল্প। শুনলাম চাকুরীর বন্যা বয়ে যাবে। বিদেশি এতো এতো বিনিয়োগ আসবে যে সবাই আমাদের সম্মান দিতে বাধ্য হবে। শুনলাম, আমরা কোথাও যাবো না সবাই আমাদের কাছে আসবে। আবার শুনলাম রিজার্ভ উপচে পড়ছে।
আজ হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে শুনি “তীব্র অর্থ সংকটে সরকার।” অথচ, ক্ষমতা নেয়ার পর অর্থ উপদেষ্ঠা ও গভর্নর বলেছিল দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ততটা খারাপ নয়।
তাইলে কী এমন হলো গত ১৫ মাসে যে সরকার এতোটা অর্থ সংকটে পড়ে গেছে। গড়ে প্রতি মাসে প্রধান উপদেষ্ঠার বিশাল বাহিনী নিয়ে বিদেশ সফর কী ফল বয়ে আনলো? সাত তারকা হোটেলে প্রতি রাতেই ১০ লক্ষ টাকার বিছানায় ঘুমিয়ে দেশের জন্য কী কী নিয়ে আসলো?
আগের সরকার মেগা মেগা প্রকল্প করে দিয়ে গেছে। বায়বীয় দুর্নীতির গল্পগুলো সত্য ধরে নিলেও তো সেই সেই প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান এবং সুফল ভোগ করছে সাধারণ মানুষ। কোন কারণে এক ঘন্টা মেট্রোরেল বন্ধ থাকলে পুরো ঢাকা শহরের মানুষের জীবনে ভয়াবহ ভোগান্তি নেমে আসে। পদ্মা সেতু, এলেভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সহ প্রকল্পগুলো সাক্ষ্য দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের সাহসী উদ্যোগের।
অথচ, গত ১৫ মাস যাবত একজন আন্তর্জাতিক “মোটিভেশানাল স্পীকার” দুই হাত ছুড়ে বড় বড় কথা বলে গেল। সাধারণ মানুষের কপালে নেমে এসেছে অসহনীয় দ্রব্যমূল্য ও চরম অনিরাপত্তা। আগের সরকার যেমন নিজেদের পকেট থেকে কিছু করেনি, নিজেদের বাপেদের টাকায় করেনি- এই সরকার তবে জনগণের টাকায় নাম পরিবর্তন ব্যতীত একটি ইটও গেঁথে দেখাতে পারে না কেন?
ফাঁকা বুলি আওড়ানো এক ব্যাপার, একটি দেশ চালানো পুরোপুরি আলাদা ব্যাপার। প্রশ্ন হলো, মহাজন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আদৌ কি দেশ চালাতে এসেছে? এটা তো এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার তাদের লক্ষ্যই হলো একে একে দেশের বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়া ও দেশকে চরম অস্থিতিশীল করে বিদেশিদের স্বার্থে এই দেশকে একটি চরম ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। দেশ বিক্রির যেই গাল গল্প এতো বছর শুনে এসেছেন, সেটা এখন একেবারে বাস্তবে প্রয়োগ দেখে নিচ্ছে দেশের মানুষ। এটাকেই বলে “দেশ বিক্রি”।

