বিএসএফ বাংলাদেশে এসে ‘বাহাদুরি’ করেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজশাহীর চারঘাট সীমান্তে বৃহস্পতিবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে গোলাগুলি এবং এক বিএসএফ সদস্যের নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো যেসব তথ্য দিচ্ছে তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১১ টায় জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাতকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, তারাই (বিএসএফ) আমাদের এখানে এসেছে এবং এসে তারা বাহাদুরিও করেছে। আমাদের ছেলেদের (বিজিবি) তাদের লাস্ট জব হিসেবে বাধ্য হয়ে গুলি করতে হয়েছে। এই ঘটনার জন্য তিনি বিএসএফকেই দায় দিয়েছেন।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, এটা ওয়ান ইনসিডেন্ট (একটা ঘটনা)। একটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন ঘটেছে।
গত দশ বছরে ৩০০ এর বেশি বাংলাদেশি মারা গেছে বিএসএফের গুলিতে এমন তথ্যের প্রেক্ষাপটে মন্ত্রী বলেন, আগে বিএসএফ বছরে অনেকজনকে মেরে ফেলত আমরা তখন কেবল দুঃখ করেছি। কিন্তু গতবছর মাত্র তিনজনকে মেরে ফেলেছে। একজনের মৃত্যুও অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আগে কখনও মামলা করিনি। ভারত এখন নতুন করে করেছে। কোনো ‘পন্ডিতও’ আমাদেরকে আগে মামলা করার কথা বলেননি। আগামীতে বাংলাদেশও এই পথে হাঁটতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি ভারত সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের উষ্ণ সম্পর্ক আরো জোরদার করা। তা অর্জনও হয়েছে।
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক আমরা আবার দাঁড় করিয়েছি। উনিও নতুনভাবে জয়লাভ করেছেন এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীও জয়লাভ করেছেন, (এরপর) এটা প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর। বিভিন্ন ধরনের সমঝোতা হয়েছে। এগুলো হবে তা আমরা আশা করেছি কিন্তু আসল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে টু ডেভেলাপ দিস ওয়ার্ম রিলেশনশিপ।
ফেনী নদীর পানি প্রসঙ্গে তিনি জানান, ভারতের সাথে বাংলাদেশের ৫৪ টি অভিন্ন নদী আছে। এর মধ্যে বড় নদী সাতটি। তিস্তা নদীর বিষয় ভারত স্বীকার করেছে বণ্টন হবে। কিছু সমস্যা থাকায় তারা ২০১১ সালের সেই ওয়াদা রাখতে পারেনি। ফেনীতে যে পানি দেয়া হচ্ছে তা খুবই সামান্য। ১২৬ কিউসেকের মধ্যে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক ১ ভাগেরও কম। মানবিকতার জন্যই বাংলাদেশ এই পানি দিচ্ছে।
ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিকপঞ্জি তৈরি নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের প্রক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। আমরা বলেছি, ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে আমরা খুব কষ্টে আছি। আমরা আর নতুন উদ্বাস্তু চাই না। তারা বলেছে যেগুলো আলোচনা হয়েছে সেগুলো একান্ত আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়। এটা নিয়ে আপনাদের কোনো ধরনের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।