হাসিনার পতন

সামিউজ্জামান সিদ্দিকী’র কলাম

বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেখানে আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছে সেইসময় দুনিয়ার আরেকপ্রান্তে সাংবাদিক জামাল খাশৌগি হত্যায় যা করেছিলো সৌদি আরব, ঠিক একই কাজ করেছে আমাদের পাশের দেশ ভারত। এরা কানাডার মধ্যে থাকা শিখ নেতা হরদীপ সিংকে হত্যা করতে পিছপা হয়নি।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে এই জিনিস বলা নরমাল কোনো ঘটনা না।

ভারত কানাডাকে ভিসা স্যাংশন দেয়া এইজন্যই বিরাট ঘটনা। কিন্তু এর সাথে আমাদের সম্পর্ক কি?

আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে- হাসিনা রেজিমের সবচেয়ে ভাল বন্ধু এইমুহূর্তে ভারত। ভারত যদি হাসিনা রেজিমকে সাপোর্ট দেয়, তাহলে শেখ হাসিনা দুম করে আমেরিকার ভিসায় স্যাংশন দিয়ে দিলে আমি অবাক হবোনা। উনি এইযে ‘আমরাও স্যাংশন দিতে পারি’ বলেছেন- এই আত্মবিশ্বাস এমনিই আসেনি।

কারণ ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-যার সাথে আছে, সে ওয়ান থার্ড গেম জিতে বসে আছে।

মনে করে দেখেন আমাদের দেশের গুম হওয়া যত লোক তাদের বেশিরভাগকে পুনরায় খুঁজে পাওয়া গেছে ভারতের সাথে আমাদের বর্ডার এরিয়ায় কিংবা সরাসরি ভারতের ভেতর!

কিন্তু আমেরিকা?

এখনো পর্যন্ত দুনিয়ার সবচেয়ে দারুণ গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সিআইএ তাদের। সাথে এনএসআই, এফবিআই, কিংবা ডিআইয়ের কাজ বাদই দিলাম। তাদের বন্ধু ইজরায়েলের আছে মোসাদ। এদের যদি বন্ধুত্ব ঠিক থাকে, তাহলে সামনে শেখ হাসিনা রেজিমের কপালে খারাবি আছে।

মাঝখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ইসলামের চেতনা- এই দুইই ভুয়া।

যে সরকার সাধারণ মানুষকে খাওয়াতে পারছেনা তাদের সাথে ভারত আর চীনের সব গোয়েন্দা সংস্থা থাকলেও লাভ হওয়ার কথা না। কারণ ইতিহাস বলে- মানুষের ক্ষুধার কাছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ইন্টিলিজেন্স এসে বসে থাকলেও, পতন অনিবার্য।

এইজন্যই সাদাত হাসান মান্টো বলেছিলেন- লাখো ইনসান ভুখা হ্যায়, ইয়ে আজাদি ঝুঠা হ্যায়(লাখো মানুষ অভুক্ত, এই স্বাধীনতা মিথ্যা)।

যেখানের লাখ লাখ মানুষ খাবার পাচ্ছে না, আবার ‘মাছ-মাংস-চাইলের স্বাধীনতা চাই’ বললেও গ্রেফতার হয়ে যাওয়া লাগে সেখানে তথাকথিত স্বাধীনতা দিয়ে মানুষ কি করবে?

বরং একদিন দেখবেন জেলখানায় তিনবেলা খাওয়ার জুটবে জেনে মানুষ জেলেই যেতে চাচ্ছে স্বেচ্ছায়!

সেইদিন শেখ হাসিনার পতন উনার বন্ধুরাও কেউ ঠেকাতে পারবেনা- এটা আমার প্রেডিকশন।