সরোসবাহিনীর রঙ্গমঞ্চ
এম ডি কামরুল হাসান, যুক্তরাজ্য
সেনাবাহিনী বনাম বৈষম্যবিরোধীদের বিবাদ নিয়ে অনেকে খুব উত্তেজিত। আমি একেবারেই উত্তেজিত নই, শান্ত মনে খেলা দেখছি। এই খেলা আমার নয়। এই খেলা কোন দুই পক্ষেরও নয়। এই খেলা এখন একই পক্ষের। এই খেলা জর্জ সোরোস বাহিনীর আভ্যন্তরীন। ফুটবলে আত্মঘাতী বা সেম সাইড গোল হয়ে গেলে দলের মধ্যে যে বিবাদ বাধে, একদম সেটার মত। পাতানো খেলায় এখন সেম সাইড গোল দিতে হচ্ছে, সামনে আরো দিতে হবে, বিবাদ বিতন্ডা বাড়বে, কমবে না। ইংরেজিতে একটা কথা আছে ডোন্ট শিট হয়্যার ইউ ইট। যার অর্থ হল নিজের প্রাথমিক দায়ীত্বের পবিত্রতা বজায় রাখ। সেনাবাহিনী এবং বৈষম্যবিরোধী উভয়ের কেউই সেটা রাখেনি। একটা পেশাদার বাহিনী তাদের পেশাগত কর্মের সাথে আবেগকে সংযুক্ত করেছিল। যে ছাত্রদের অন্যায় সন্ত্রাস তাদের অঙ্কুরে দমন করার শপথ ও পবিত্র দায়িত্ব ছিল, দেশের সংবিধান ও রাষ্ট্রকে রক্ষার দায়িত্ব ছিল, সেটা তারা করেনি। শুরু থেকেই তারা একটি বার্তা দিয়েছিল যে তারা কোন পক্ষে আছে। সেটাই ছিল ছাত্র জনতার সন্ত্রাসের অন্তর্নিহিত ধ্বংসাত্মক শক্তির মূল উৎস।
সেনাবাহিনীর তরুণ সদস্যরা নাকি সেটা নাকি চায়নি। একটি আধুনিক রাষ্ট ও তার সার্বভৌমত্ব কি সেনাবাহিনীর তরুণ সদস্যদের আবেগের খেলাধুলার যায়গা? এই পেশাদারিত্ব তারা কোথায় শিখেছেন? এই মানসিকতা তাদের কোথায় নিয়ে যাবে? যে মার্কিন-ইউরোপীয় ষড়যন্ত্রে ইউক্রেন রাশিয়ার উপর একটি অন্যায় চাপিয়ে দিয়েছিল, সেটা হটিয়ে দিতে রাশিয়ার সেনাপতিরা কিন্তু রাশিয়ার তরুণ সেনাদের আবেগের দোহায় দেননি। রাষ্ট্রের নিরাপত্তায় এক লক্ষ না হলেও অন্তত ৫০ হাজার রাশিয়ার সেনা এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে। সেই একই কুশীলবদের একই চক্রান্তে কিন্তু আমরা পড়ে গেছি। আমাদের সেনাবাহিনী আমাদের সেই বিপদ থেকে শুরুতেই বাঁচিয়ে দিতে পারত। সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রবিরোধীদের পক্ষে থেকে তখন তারা ধরি মাছ না ছুঁই পানি খেলতে চেয়েছে। সেই মাছ এখন হাত থেকে ছুটে গেছে। এখন নিজেদের ছেড়ে দেওয়া মাছ গভীর জলে ডুবে ডুবে ধরতে হবে। সেটা ঠিক তারা কিভাবে করবেন সেটা তাদেরই ঠিক করতে হবে। এখন আমরা পাড়ে বসে বসে খেলা উপভোগ করব। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন “যারা চিন্তাশীল, এ দুনিয়া তাদের কাছে একটি রঙ্গমঞ্চ, আর যারা আবেগ দিয়ে চলে তাদের কাছে সেটা ট্রাজেডি”। আমি এখন রঙ্গমঞ্চে খেলা দেখব। আবেগ আর নির্বুদ্ধিতার খেলা।