জানুয়ারী ২০২৪ নির্বাচন – কলঙ্কের নতুনতম অধ্যায় নাকি প্রহসনের শেষ অঙ্ক?

গণতান্ত্রিক বিশ্বে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে অল্প কিছুদিন আতঙ্ক, আশংকা , ভয়, ভীতি, উদ্বেগ, প্রকাশিত হতে দেখা গেছে। কিন্তু খুব শীগগির এসব উদ্বেগ উঁবে গেছে দ্রুত এবং সকলেই আবারো নতুন এক আওয়ামী সরকারের সাথে কাজ করতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ২০১৪ এর নির্বাচনে বিএনপি ছিলো না। ২০১৮ এর নির্বাচনে বিএনপি ছিলো। দুটোতেই আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়। এর আগের কোনো নির্বাচনে (১৯৯১ থেকে) যেটিতে দুটি দলই অংশগ্রহণ করেছে, যেকোনো আসনের ভোটপ্রাপ্তি অংশ পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে কোনো কোনো আসনে যেকোনো একটি দলের ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা একটু ব্যাপক হলেও দুটি দলই সাধারণতঃ কাছাকাছি ভোট পায়। কিন্তু ২০১৮ তে গিয়ে দেখা গেলো, যেটি কিনা তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে না হওয়া প্রথম নির্বাচন গত প্রায় তিন দশকে, বিএনপি আসন পেয়েছে এতই কম যা ১০ এর নিচে চলে গিয়েছে। ভোটের মোট প্রাপ্তি ১৪% এর মতো। ২০০৮ এর বিতর্কিত নির্বাচনেও যেটিতে বিএনপি মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিলো, বিএনপির ভোট-এর প্রাপ্ত অংশ ছিলো ৩৩% এর মতো। এটি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত ২০০৮ এর নির্বাচনে তথাকথিত সেনা-সমর্থিত নিরপেক্ষ সরকার আওয়ামী লীগ যেন নির্বাচনে জিততে পারে সেটি নিশ্চিত করবার জন্যে যা দরকার তা করেছে। তারপরেও বিএনপির ভোটাংশ কিন্তু আসন-বিন্যাসের তুলনায় একটি ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে। এর আগের নির্বাচনগুলোতেও একই বিষয় দেখা যায়। আসন সংখ্যার দিক থেকে ব্যাপক তারতম্য থাকলেও ভোটাংশের ক্ষেত্রে কখনোই ১০/১৫ শতাংশের পার্থক্য ছিলোনা। অথচ ২০১৮ এর নির্বাচনে পার্থক্য ছিলো প্রায় ৬০ শতাংশ। গোটা বিশ্বে দেখা যায় ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। বাংলাদেশ একটি অনুজ্জ্বল ব্যতিক্রম এক্ষেত্রে। ২০১৪ ও ২০১৮ এর নির্বাচন একারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। ২০১৪ এর মতো নির্বাচন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ এ করতে চেয়েছিলেন এবং ব্যার্থ হয়েছিলেন। আমরা সে ব্যার্থতা দেখে আশান্বিত হয়েছিলাম এধরণের একতরফা বা একদলীয় নির্বাচনী কারসাজি আমাদের আর দেখার প্রয়োজন হবে না। কারণ ১৯৯৬ এর সে অপচেষ্টা আমাদের ১৯৭৪/৭৫ এর বাকশালী দুঃস্বপনের কথা স্বরন করিয়ে দেয়, যে দুঃস্বপ্ন থেকে জেগে উঠতে বাংলাদেশের সময় লেগেছে ১৬/১৭ বছর।।

কিন্তু ২০২৪ এর নির্বাচন কী বাকশাল-এর পুনর্জন্মের ইঙ্গিত বহন করেনা? এই নির্বাচনে সত্যিকারের বিরোধী দলের কোনো উপস্থিতি ছিলোনা। বিরোধী দলের উপস্থিতি আছে এমনতরো মরিচীকা হাজির করবার জন্যে ৭৪৭ জন-এর মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেন। এই ৭৪৭ এর মধ্যে প্রায় সকলেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো কোনো না সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তারা আওয়ামী লীগের ব্যানারে মনোনয়ন না পাওয়াতে আওয়ামী লীগের অনুমোদন ক্রমে আওয়ামী প্রার্থীর বিরূদ্ধে দাঁড়ান যারা কিনা তাদেরই দলীয় সতীর্থ। এবং ৭ই জানুয়ারীর নির্বাচন শেষে দেখা যায় ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন যারা প্রত্যেকেই আবার আওয়ামী লীগের পদাধিকারী। আইওয়াশ বলে একটা কথা আছে ইংরেজীতে, সেটির একটা চরম উদাহরণ হয়ে থাকলো এই নির্বাচন যেটিকে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে জানিয়েছে। তবে এই ২০২৪ এর মে মাস এ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মনোভাব এর পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এর সাম্প্রতিক বক্তব্যে। বিবিসির এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি উঠে এসেছে। উক্ত প্রতিবেদনে বিশ্লেষকরা বলছেন যুক্তরাষ্ট্র আসলে তার ‘মূল্যবোধ ভিত্তিক’ নীতিগত অবস্থান অর্থাৎ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলোতে আগের নীতিতে অটল থেকেই বাংলাদেশ সরকারের সাথে সংযুক্ত থেকে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। সেটিই মি. লু’র বক্তব্যে উঠে এসেছে বলে মনে করেন তারা। অন্যদিকে, ঢাকায় মি. লু’র বক্তব্যের পর সরকারি দল আওয়ামী লীগের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি আর বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর মধ্যে অস্বস্তির আবহ তৈরি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন ‘কিছু বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি ছিল যা সিভিল সোসাইটির লোকজন তৈরি করেছিলো। এখন আর সেটি নেই। যুক্তরাষ্ট্র বুঝতে পেরেছে জনগণ এ সরকারের সঙ্গেই আছে।’

তবে গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে এ নিয়ে আর খুব একটা উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি।

নির্বাচনের পরপরই যুক্তরাজ্যের অবস্থান পরিষ্কার হয় এই নির্বাচনের ব্যাপারে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ০৯ জানুয়ারী ২০২৪ এর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গণতান্ত্রিক নির্বাচন নির্ভর করে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার ওপর। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও যথাযথ প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান। নির্বাচনের সময় এসব মানদণ্ড ধারাবাহিকভাবে মেনে চলা হয়নি। ভোটের আগে বিরোধী দলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।” নির্বাচন সামনে রেখে ও নির্বাচনের প্রচার চলাকালে সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর কর্মকাণ্ডকে বিবৃতিতে নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসাথে রাজনীতিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের কোনো স্থান নেই বলে মন্তব্য করেছে দেশটি।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “সব দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। সে কারণে বাংলাদেশের মানুষের ভোট দেওয়ার যথেষ্ট বিকল্প ছিল না।” বিবৃতিতে বলা হয়, “যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। একটি টেকসই রাজনৈতিক সমঝোতা ও সক্রিয় নাগরিক সমাজের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে দীর্ঘ মেয়াদে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। আমরা বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রতি মতভিন্নতা দূর করে জনগণের স্বার্থে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অভিন্ন পথ বের করার আহ্বান জানাচ্ছি। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।”

কিন্তু বাস্তবতা হলো পশ্চিমা বিশ্ব তাদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষার খাতিরে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বলি দিতে আগ্রহী অনেক বেশি। যেকারণে তাদের এধরণের নির্বাচন-পূর্ব ও নির্বাচন-উত্তর অবস্থান-পরিবর্তন তেমন বিস্ময় জাগায়না। পশ্চিমের অবস্থান এর ওপর যদি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ভর করতে হয়, তাহলে এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছেনা কবে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার ফিরে আসবে? এ-ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষকেই উদ্যোগী হতে হবে, হতে হবে সোচ্চার।

এই নির্বাচনকে শেখ হাসিনা নিরপেক্ষ বলেছেন। আমাদের আশঙ্কা এরচেয়েও কারচুপি-পূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করবার রসদ শেখ হাসিনা তুলে দিয়েছেন বিরোধী দলগুলোকে যদি তারা কখনো ক্ষমতায় আসেন। ইতিহাস বলে একদলীয় নির্বাচন-এর যে প্রবণতা, তার পরিণতি ভালো হয়না। বাকশাল তার সাক্ষী। শেখ হাসিনার তার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করা এইক্ষেত্রে উচিৎ নয়, প্রজ্ঞা সেটাই নির্দেশ করে।

আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম আমাদের পাঠককূলকে এই প্রহসনমূলক নির্বাচন নিয়ে তাদের মতামত পাঠানোর জন্যে। সকলের মন্তব্য প্রকাশ করা গেলো না সময় ও স্থান সঙ্কুলানের জন্যে। তবে সকলকে ধন্যবাদ দৈনিক নবযুগের তরফ থেকে প্রত্যেকের আন্তরিক মতামতের জন্যে। এই আন্তরিকতা যদি অব্যহত থাকে, তাহলে অগণতান্ত্রিকতার দিকে বাংলাদেশের যে যাত্রা, সে যাত্রা হয়তো রুখে দেয়া যাবে।

নির্বাচিত পাঠক মন্তব্য

ফাতেহা তাসবি (২৯, ঢাকা) – আমি সাধারণতঃ রাজনৈতিক ব্যাপারে মন্তব্য করিনা, বা করতে আগ্রহ পাই না। কিন্তু এই যে গেল নির্বাচন হলো সেটা এতই লজ্জাদায়ক যে এ-ব্যাপারে না মন্তব্য করে পারছিনা। দুঃখজনক হলেও সত্য এই যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বাকশালী নির্বাচন এবং শেখ হাসিনার ২০১৪ ও ২০২৪ এর নির্বাচনের কোনো গুণগত পার্থক্য নেই। দুটোই স্বৈরচারী মনোভাবের পরিচায়ক। যেখানে বাংলাদেশে একজন সমকামী, উভকামী, বা নাস্তিক/অবিশ্বাসের সাধারণ অধিকার নেই, যেখানে রাষ্ট্র এবং সমাজ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎপর ও বৈষম্যে ভরপুর, সেখানে আসলে হাসিনা সরকার অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে আশা করাটাই ঠিক না। কিন্তু হতাশ লাগে যখন চিন্তা করি বিকল্প নিয়ে। খালেদা জিয়া-তারেক রহমান এর সরকার একই জিনিস করবে। কী ভয়ঙ্কর এক চক্র! 

তান্নি বেগম ((২১, নাজিরাবাদ, মৌলভীবাজার, সিলেট) – আমাদের প্রজন্ম বাকশাল দ্যাখেনি। আমরা দেখিনি ৯০ এর গণ-অভ্যূত্থান এবং ৯৬ এর আন্দোলন। তবে, প্রযুক্তির উন্নতির কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি সুষ্ঠু নির্বাচন বলতে কী বোঝায় অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে। এবং এও দেখতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ কী প্রচন্ডভাবে ব্যার্থ নিরপেক্ষ স্বাধীন ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবার ক্ষেত্রে। এই ব্যার্থতা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে অবলুপ্তির পথে নিয়ে গেছে। আমরা যদি সোচ্চার না হই, তাহলে শেখ পরিবারের কাছে বাংলাদেশের আজীবন শোষিত হয়ে থাকবে।

মোহাম্মাদ আব্দুল কাদের সুমেল (৩৬, মিরপুর, ঢাকা) – আমাদের দেশকে যে এখন ব্যানানা রিপাবলিক বলে, তা-তে আসলে আর অবাক হইনা। যে নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীদের নিজে নিজে লড়াই করে গোটা প্রক্রিয়াকে অবাধ ও সুষ্ঠ দেখানোর চেষ্টা করা হয়, সে নির্বাচনকে প্রহসন বলা ছাঁড়া কিইবা করার আছে। ১৯৯৬ এর বেগম খালেদার নির্বাচন এর সাথে এটির তুলনা  হয়না আসলে। এটি অনেক বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ শেখ মুজিব সাহেবের একদলীয় নির্বাচন করবার প্রচেষ্টার সাথে। সেই একদলীয় বাকশালী রাজনীতির দুঃখজনক পরিণতি আমরা দেখেছি। একই ভাগ্য কি শেখ হাসিনাকেও বরণ করতে হবে? জানিনা। তবে অবাক হবোনা। 

এম ডি ফোরকান (২৫, কাপাশিয়া, গাজীপুর) – আমি চরম হতাশ। প্রবাসে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলোর প্রতি মানুষের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখে নিজের দেশের জন্যে খুব কষ্ট হয়। আমরা কী শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিবের খেলার পুতুল আছি/ছিলাম? কেন এরকম ভন্ড নির্বাচন এর শিকার হবো বারেবার? বাকশাল কী যথেষ্ঠ ছিলোনা? আমরা রুখে না দাঁড়ালে বারবার জানুয়ারী ২০২৪ নির্বাচন এর মতো ভোটাধিকার হত্যাযজ্ঞ হতেই থাকবে। কিন্তু রুখে দাঁড়াতে গেলেও তো রক্ষে নেই। পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মেরে কেটে গুম করে ফেলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবেনা। কে নেবে এই ঝুঁকি?

এস এম ইকবাল মাহমুদ (৩৬, মিরপুর, কাফরুল, ঢাকা) – গণতন্তকে হত্যা করবার যত উপায় আওয়মী লীগ ও শেখ পরিবারের, বিশেষ করে শেখ হাসিনা ও তার বাবা শেখ মুজিবের জানা আছে এবং ছিল, তা বোধকরি এই পৃথিবীতে আর কারোরই আয়ত্তে নেই। জানুয়ারী ২০২৪ এর নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যার আরেকটা নমুনা। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কেন দেশ স্বাধীন করলো, সেকারণে বাংলাদেশের মানুষকে এখনো মুক্তিপণ গুণতে হচ্ছে।

নুরুল হুদা – আওয়ামী লীগের বাংলাদেশকে নিজস্ব সম্পত্তি মনে করা এবং সে মনা করা থেকে বাংলাদেশের মানুষ-এর সাথে যা ইচ্ছে তা করবার প্রবণতা নতুন নয়। বাকশালের মাধ্যমে শেখ মুজিব যা করেছেন, ২০১৪, ২০১৮, এবং ২০২৪ এর নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-এর মানুষকে পদে পদে বুঝিয়ে দিচ্ছেন কেন মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগের অধীনে করাটা ভালো হয়নি।

মোহাম্মেদ আলী শুভ (৩৩, মাটিকাটা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট) – ২০২৪ জানুয়ারী নিয়ে আপনারা মন্তব্য চেয়েছেন পাঠকদের কাছে দেখলাম। কিছুটা অবাক হচ্ছি এই ভেবে যে ২০২৪ নির্বাচনকে প্রহসন কিনা জিজ্ঞেস করাতে। মনে হতে পারে যে এর আগের নির্বাচনগুলো যেন নিরপেক্ষ  ছিল। ব্যাপারটা তো মোটেই তা নয়। ২০১৮, ২০১৪ এর নির্বাচন গণতন্ত্রের ধর্ষণ ছাড়া কিছু ছিলো কী? ২০০৮ নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে।  তবে আমি অবাক হই না এগুলোতে। আওয়ামী রাজনীতিই মানেই প্রহসন, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, দূর্নীতি। সেটা শেখ সাহেবের আমল থেকে শুরু হয়েছে এবং হাসিনাতে পরিণতি পেয়েছে। এদের সমূলে নির্বংশ করা দরকার। কিন্তু, কে করবে? সবাই বিক্রী হয়ে গেছে।

জাবেদ আহমেদ – গণতন্ত্র যদি একজন মানুষ হতো, তাহলে বলতে পারতাম, তার নারকীয় নৃশংস মৃত্যু হয়েছে আওয়ামী লীগ এর হাতে। যে হত্যার শুরু করেছেন তথাকথিত জাতির জনক শেখ মুজিব এবং সুচারুভাবে সে হত্যকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তার তনয়া শেখ হাসিনা। নতুন বাকশাল, নতুন অগণতন্ত্র।

মুহাম্মাদ জাকির হোসাইন (৩৪, পঞ্চকাঠি, হাতুরিয়া, শরীয়তপুর) – এই নির্বাচন নয় শুধু, গোটা আওয়ামী দুঃশাসনামলকেই প্রহসন বলা চলে। যেখানে নির্বাচনকে বৈধতা দান করবার জন্যে নিজস্ব দলীয় প্রার্থী দাঁড় করিয় দিলো প্রতিদ্বন্দীতামূলক নির্বাচনী ফ্লেভার দেবার জন্যে, সেখানে কারচুপি নিয়ে আওয়ামী চোরেরা থোরাই কেয়ার করে, সেটা স্পষ্ট। তবে মানুষের যে গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার আছে, সেটা আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে বিশ্বাস করেনি কখনো। বাকশাল, মুজিবীয়  একনায়কতান্ত্রিক নির্বাচন পদ্ধতি – এইসবই নির্দেশ করে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রের প্রতি সত্যিকারের আস্থা কদ্দূর আছে বা তারা আদৌ নির্বাচনী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে নাকি বাংলাদেশকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে, সেটা নিয়ে কোনো আলোচনা বাতুলতা মনে হয়। জানিনা উত্তরণের উপায় কী। বিপ্লব? কার রক্তের বিনিময়ে?

মোঃ ফাহাদ হোসাইন (২৩, কাঁঠালবাগান, কলাবাগান, ঢাকা) –  আমি মনে করি ২০২৪ এর জানুয়ারীর নির্বাচনে বাংলাদেশ যে একটি অগণতান্ত্রিক দেশ, সেটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। ২০১৮ সালে ভোট-দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। ২০১৪ তে গণতন্ত্র হত্যার প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন হাসিনা সরকার। এখন বাংলাদেশ আর স্বাধীন নেই। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। এর থেকে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে হবে। এই পরাধীনতা শুরু হয়েছিল শেখ মুজিবের বাকশাল দিয়ে। এবং হাসিনা এটা চলমান রেখেছে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করবার জন্যে আন্তর্জাতিক মহলকে বিনীত অনুরোধ করছি।

আল ইমরান আহমেদ (২৪, কুরুইয়া, ওসমানীনগর, সিলেট) – আপনাদের সাধুবাদ জানাই এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় সামনে নিয়ে আসবার জন্যে। দুঃখজনক হলেও সত্য মানুষ সহজে ভুলে যায় এত বড় অনাচারগুলোকে। যে অধিকার-হরণ আওয়ামী লীগ করেছে, সেটা তো শুধু মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের অধিকার হরণ নয়, গোটা বাংলাদেশের সাথেই তা করা হয়েছে। আমি একদম-ই অবাক হইনা যখন শেখ মুজিবের কলঙ্কজনক একদলীয় শাসনব্যবস্থা অনুসরণ করে শেখ হাসিনা নির্লজ্জের মতো মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে এবং একের পর এক ভূঁয়া নির্বাচন দিয়ে দেশের মানুষকে বঞ্চিত করে তাদের স্বাধীনতা থেকে। শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ যদি মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব নিয়ে এই ধরণের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল, তাহলে পরাধীনতা অনেক শ্রেয়। ধিক্কার এই অধিকার-হরণকারী ক্ষমতা-লিপ্সু হায়েনা পরিবারকে!

সালেহ আহমেদ –এই যে এসব অপনির্বাচন করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ একের পর এক, বাংলাদেশী হিসেবে লজ্জিত বোধ করি, বোধ করি গ্লানি। কিছু করতে পারিনা। ভয় লাগে কখন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কিছু করলে মেরে ফেলে কিনা। শেখ পরিবার যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র অপহরণকারীতে পরিণত হবে, এটা কেউ ভাবতে পেরেছিলো কস্মিনকালে?

Phahin Alam (21, Originally from Cox’s Bazaar, Chattogram) – Really pleased that you guys have taken to highlight this issue. It is of utmost regret that the current regime has misappropriated democracy in Bangladesh for so many years. Although a Bangladeshi, I lived a great deal of my life in the UAE and I now see no material difference between the theocracy there without any proper accountability and the Awami despotic rule. The West should impose proper sanctions on Bangladesh so that we can halt Bangladesh’s decline.

মুনাওয়ার হাসান নাসিম (২৩, সুনামগঞ্জ, সিলেট) – আপনাদের সাধুবাদ জানাই এই বিষয়টি তুলে ধরবার জন্যে। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮-কে বলা হতো গণতন্ত্র হত্যা দিবস সেদিনের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী কারচুপির স্বরূপকে কটাক্ষ করে। জানিনা ০৭ জানুয়ারী ২০২৪ এর নির্বাচনকে কিভাবে অভিহিত করা হবে। যেখানে শেখ পরিবারের ইতিহাস হচ্ছে গণতন্ত্রকে রোধ করা, সেখানে আমি অবাক হইনা শেখ হাসিনার এই গণতন্ত্র-ধ্বংসারী পৈশাচিক সরকারের নির্বাচন-ডাকাতি দেখে। পশ্চিমা সভ্যতা সরব হওয়া দরকার আরো।

ইমাম উদ্দীন রাব্বি – ২০২৪ এর জানুয়ারীর নির্বাচন ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচনের যে কারচুপি, ভন্ডামি, সেটার পরবর্তী অধ্যায়। এর পরের নির্বাচনে দেখবেন শেখ হাসিনা বলবে মানুষের কষ্ট করে ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই। শেখ মুজিবের বাকশালের একবিংশ শতকীয় রূপ।

মোহাম্মাদ শামীম আল মামুন (৪৬, ঢাকা) –  শেখ পরিবার-এ একনায়কতন্র মজ্জাগত। তারা বাংলাদেশকে নিজেদের পারিবারিক সম্পত্তি ভেবে আসছে আবহমানকাল ধরে। নির্বাচন তাদের জন্যে বিলাসিতা। বাংলাদেশীদের মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বে ছিল। এটাই আমাদের জন্যে যথেষ্ঠ। গণতন্ত্র বাংলাদেশের জন্যে বেদরকারী। যেকারণে আওয়ামী প্রার্থীরা নিজেদের দলের অন্যদের সাথে নির্বাচনে ছদ্ম প্রতিদ্বন্তীতা করবার জন্যে। নির্বাচনী অধিকার, গণতন্ত্র খুবই বাজে বিলাসিতা। সভ্য রাষ্ট্রগুলো যদি দয়া করে বাংলাদেশ-এর রাজনীতি নিয়ে মাথা না ঘামায়, তাহলেই সকলের জন্যে মঙ্গল। সবাই শেখ পরিবারের সব কথা ও আদেশ চোখ বন্ধ করে মেনে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনের পর ব্যঙ্গ না করে পারলামনা।

বোগদাদ পিয়ারী রুবি (৪৪, কুমিল্লা) – ২০১৮ এবং ২০১৪ এর নির্বাচন ছিল কারচুপি এবং ডাকাতি। ২০২৪ এর নির্বাচন হয়েছে নির্বাচন নামক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার হত্যা। সমস্যা হচ্ছে যারা শেখ পরিবারের ইতিহাস জানেনা, তাদের জন্যে এইসব কিছু অবাক করা হতে পারে। কিন্তু, শেখ মুজিবের একনায়কতন্ত্র ও বাকশাল যারা মনে রেখেছে, তারা কোনোভাবেই অবাক হবেননা শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী স্বেচ্ছাচারিতায়। বাংলাদেশ চীনের আদলে এখন। দেশ ত্যাগ করার সময় হয়েছে সকলের।

Morsed Alam (22, Cox’s Bazaar, Chittagong) – The looting of democracy in Bangladesh by the Awami regime is sadly a common thing. The January 2024 election was not a surprise in that regard. What was surprising was the dramatics they engineered by allowing their own leaders and supporters to contest the election as independent candidates against their own selected candidates to give the election the appearance of some normalcy and competitiveness. United Arab Emirates where I lived for many years, for example, has no democracy and they do not pretend to have democracy. Still the country functions well. But Bangladesh has this dodgy Sheikh-family democracy in name only and functions appallingly. These family dynasties are a disgrace and should be banned starting from the Sheikh Mujib’s family. I hope this ends soon because I shall have to go and live in Bangladesh sooner or later.

এমরান আহমেদ (২৫, নিশ্চিন্ত, গোলাপগঞ্জ, সিলেট) – আমি জানিনা এমন বানোয়াট প্রতারণা-পূর্ণ নির্বাচন নিকট অতীতে কোথাও হয়েছে কিনা। নিজের দলের লোকদের নিজেদের প্রার্থীতদের সাথে নির্বাচনের ভুয়া লড়াই এর চিত্র তুলে ধরেছে দুনিয়ার কাছে। হায় বাংলাদেশ! কবে এই প্রতারকদের কাছ থেকে মুক্তি পাবে আমার মাতৃভূমি? শেখ মুজিব যা শুরু করেছে, শেখ হাসিনা তা শেষ করছে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের হাত থেকে মুক্ত করে।

জোবায়ের হোসেন – ১৯৯১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত নির্বাচনগুলোর যে ন্যূনতম মানদন্ড ছিলো, সেটি রক্ষা করবার কোনো প্রয়াস আওয়ামী লীগ দেখায়নি। বরঞ্চ চিরতরে কিভাবে ক্ষমতায় থেকে যাওয়া যাবে, সেটি নিয়ে ফন্দি-ফিকির করেছে যার ফলস্বরূপ আমরা তত্বাবধায়ক সরকার-ব্যবস্থার অবলুপ্তি দেখতে পেলাম, এবং একদলীয় শেখ মুজিব-স্টাইলের বাকশাল-ও আমাদের দেখা হয়ে গেল। ক্ষমতায় চিরকাল থেকে যাওয়ার যে আকাঙ্খা সেটা রাজতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্রে মানায়, গণতন্ত্রে নয়। কেন এই নির্মোঘ সত্য স্বীকার করে নিচ্ছেনা শেখ হাসিনা, কে বলবে?

মোঃ দেলোয়ার হোসেন (৪৪, কুমারদিয়াঙ্গা, গাঙ্গনি, মেহেরপুর) – আমাদের মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া এইসব ব্যাপারে জেনে কি লাভ তা বুঝিনা আর। আন্তর্জাতিক বিশ্ব যদি চাপ প্রয়োগ না করে তাহলে বাংলাদেশীদের প্রতিবাদ প্রতিক্রিয়ায় কিছু হবেনা। মার্কিন সরকারের মদদে যদি শেখ মুজিবকে সরিয়ে দেয়া না হতো, তাহলে কিন্তু বাংলাদেশ এখনো বাকশালী স্বৈরতন্ত্রের অধীনস্ত থাকতো। সুতরাং প্রতারক হাসিনার প্রহসনমূলক নির্বাচনে ঘটতেই থাকবে যতদিন না মার্কিন সরকারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক বিশ্ব সত্যিকারের চাপ প্রয়োগ না করে। আমার কাছে ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচন একইরকম ডাকাতি ও কারচুপি-পূর্ণ মনে হয়েছে। খুব বেশি পার্থক্য কী আছে? ২০২৪ এ অভিনয়টা একটু বেশি হয়েছে। এই যা। 

মোঃ নূর আলম (৩১, কালিটালা, চাপাইনবাবগঞ্জ, সদর, রাজশাহী) – আমার মনে হয় বাংলাদেশ-এর ডিএনএ তে গণতন্ত্রের প্রতি একটা অস্বস্তি কাজ করে। আয়রনি হচ্ছে এই সুষ্ঠু নির্বাচনী গণতন্ত্রের অধিকার আদায়ের জন্যেই মুক্তিযুদ্ধ, এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা। অথচ স্বাধীনতার পর থেকেই নির্বাচনী গণতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা ছাঁড়া কিছু কি দেখা গেছে? ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ছাঁড়া (এর মধ্যে দুটোতেই বিএনপি বিজয়ী লক্ষণীয়) বাংলাদেশের ইতিহাস ভোটাধিকার, নির্বাচনী গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, এবং কারচুপি ও ভোট-ডাকাতির ইতিহাস যার গোড়াপত্তন করেছিল তথাকথিক বঙ্গবন্ধু। সেখান থেকে আজ ২০২৪ এর নির্বাচন এর যে পরিক্রমা সেখানে এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী বা বিরোধী প্রার্থী আর আওয়ামী প্রার্থী সবাই আওয়ামী লীগের। প্রহসন খুব হালকা হয়ে যায় এই অবক্ষয়কে বর্ননা করবার জন্যে। পতিত গণতন্ত্র এই বাংলাদেশে!

বীপেন রাজবংশি – মুক্তিযুদ্ধের দল, স্বাধীনতার দল বলে গলা ফাঁটায় আওয়ামী লীগ। তাদের নির্বাচন চুরি আর ক্ষমতায় থাকার জন্যে গণতন্ত্র-হত্যা, ভোটাধিকার-হরণ যেগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ জানুয়ারী ২০২৪ এর নির্বাচন, এগুলো দেখে মনে হয় বাংলাদেশের মানুষ কী আওয়ামী লীগের কাছে জিম্মি কিনা? বা শেখ পরিবারের কাছে? এসব অসভ্যতা, অন্যায় সহ্য করে যাওয়া কী আমাদের মুক্তিপণ?

ফারহানা আখতার চৌধুরী (৩৫, কুড়িগ্রাম, কামাল বাজার, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট)  – আমি তেমনভাবে রাজনীতি যে বুঝি তা নয়। কিন্তু গত দশ বছরে বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার এবং বাংলাদেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের যে ভুলন্ঠন, তা নিয়ে আমার মতো মানুষও রাগান্বিত ও উতকন্ঠিত না হয়ে পারলাম না। আমাদের দেশকে নিয়ে যে ছেলেখেলা করছে শেখ পরিবার, তার একটি পরিসমাপ্তি দরকার। কিভাবে এটা হবে জানিনা। কিন্তু শেখ পরিরারর আমাদের দেশটাকে নিয়ে ছেলেখেলা করার কোনো অধিকার নেই। আন্তর্জাতিক বিশ্ব মাঝে মাঝে আওয়াজ করে, হৈ চৈ করে, কিন্তু এই অগণতান্ত্রিক পরিক্রমার কোনো শেষ তারা ঘটায় না। আওয়ামী ভোট-চুরির কারণে গত ধশ বছরে আমাদের দেশ ৫০ বছর পিঁছিয়ে গেছে। কারণ বিএনপি একই কাজ করবে ক্ষমতায় এলে। মুক্তি? গণ-অভ্যুত্থান ছাড়া কোনো উপায় দেখিনা। কার নেতৃত্বে? জানিনা। তবে ২০২৪ এর মতো নির্বাচন আর যেন দেখতে না হয় সেই আশা-ই আছি।

এম ডি লুতফর রহমান – ২০২৪ এর নির্বাচন হলো রাহাজানি, ২০১৮ এর টা ছিলো ডাকাতি, ২০১৪ এরটা ছিলো চুরি। শেখ পরিবার বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র হরণ করে আনন্দ পায়। এটা ৭৪ থেকে হয়ে আসছে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমরা জেগে না উঠলে এটা চলতেই থাকবে।

মোঃ রফিকুল ইসলাম (৩৫, হোগলপাটি, আমরাগাছিয়া, মাঠবাড়িয়া, পিরোজপুর) – আমার এই অপনির্বাচনের কিছুদিন আগ পর্যন্তও আশা ছিলো যে মার্কিন ও পশ্চিমা বিশ্বের চাপে আওয়ামী সরকার সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাবে নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। কিন্তু বিধিবাম! ক্ষমতার লোভ আওয়ামী লীগকে সবসময় পরাস্ত করেছে, গত ষোল বছর ধরে এই দল ক্ষমতার লোভের কাছে পর্যদুস্ত। এরা বুঝতেই পারছেনা এরা যদি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন না করতে থাকে এবং এভাবে চুরি-ডাকাতি, কারচুপি, প্রতারণা ও ভোটাধিকার হরণ করতেই থাকে, তাহলে বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসবে, বিএনপিও একই জিনিস করবে। আওয়ামী লীগ সারাজীবন ক্ষমতায় থাকবে ধরে নিয়ে আগাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ চীন নয়। ২০২৪ এর সালের নির্বাচন আওয়ামী লীগের দ্বারা আরোপিত আরো একটি কালো অধ্যায় বাংলাদেশের জন্যে। আর এই অধ্যায়ের রচয়িতা বাকশালী শেখ মুজিব ও ভন্ড গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী শেখ হাসিনা।

কমল চন্দ্র দাস (৩৭, বাড্ডা, ঢাকা) – শেখ পরিবার বাংলাদেশকে পারিবারিক সম্পত্তি মনে করে। মনে করে আমাদের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র এগুলোর দরকার নেই। এগুলো আমাদের জন্যে বিলাসিতা। এই পরিবারের অবলুপ্তি না হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবলুপ্তি হয়ে যাবে।

এম ডি জাকির হোসাইন চৌধুরী (৩৬, দামালীপাড়া, জালালাবাদ, সিলেট) – আমি নিশ্চিত আসলেই বাংলাদেশের মানুষ এই গেল জানুয়ারীর নির্বাচন নিয়ে এখন আর তেমন কিছু ভাবছেনা। সংবাদ মাধ্যমে বা গণযোগাযোগ মাধ্যমেও এখন এই ইস্যু নিয়ে চীৎকার চেঁচামেচিও কমে গেছে, আন্দোলন যা ছিল, তাও স্তিমিত, ম্লান, হারিয়ে গেছে প্রতিবাদের ছটা। কারণ মানুষ শেখ পরিবারের কাছে জিম্মি। সেটা আমি দেখতে পাচ্ছি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ অবদি এবং ২০০৮ থেকে আজ অবদি চলমান। মানুষের ভোটাধিকার যে একটা মৌলিক অধিকার নির্বাচনী গণতন্ত্রে, সে মূল্যবোধটুকু নেই শেখ পরিবারের। তথাকথিত জাতির জনক ও তনয়া হলে যা হয় আর কি! ২০২৪ এর সাজানো লাম্পট্য-মার্কা নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্যে চরম দুর্ভাগ্যজনক একটি সময় যার পরে আমি আর কোনো আশা দেখতে পাচ্ছিনা। কারণ বিএনপি এলে একই জিনিসই করবে। বা আরো খারাপ। হতভাগা মাতৃভূমি আমার!

আহসানুল কবির – আমার মতে ২০২৪ এর নির্বাচন ভোটাধিকার হরণ করবার আরেকটি অধ্যায়। বাংলাদেশের সাথে প্রতারণার নতুনতম পর্যায়। অবাক হবোনা যদি মানুষের ভোটাধিকার পুরোপুরি বিলুপ্ত করে দেয় এই হাসিনা সরকার। তবে শেখ পরিবারের এই নজির আছে। বাকশাল তার সাক্ষী। শেখ মুজিব বাংলাদেশের কতটা ভালো চেয়েছেন, সেটা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।

তাহিয়া আব্দুল্লাহ বিনতে কামাল (২০, ফরিদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা) – এখনো ২০২৪ এর জানুয়ারীর নির্বাচন (বা অপনির্বাচন) নিয়ে আপনারা প্রাসঙ্গিক এবং মূল্যবান প্রশ্ন তুলছেন, এটাই বিস্ময়কর। দুঃখজনক হলো জানুয়ারীর প্রহসনমূলক এবং প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচন এর কারণে বিরোধী দল যদি কখনো ক্ষমতায় আসে তাহলে তারাও একই রকম প্রহসনমূলক নির্বাচন আয়োজন করতে পিঁছপা হবেনা। বলি হবে ভোটাধিকার, গণতন্ত্র।

শাকিল আহমেদ – দুঃস্বপ্নের তৃতীয় প্রহরের মতো ২০২৪ এর জানুয়ারীর নির্বাচন হয়ে গেলো। এই শেখ-পরিবার ইন্ডিউসড দুঃস্বপ্ন জাতি হিসেবে আমাদের কতদিন সহ্য করতে হবে জানিনা। তবে এটা বলতে হয় আমাদের এখন কোনো মেরুদন্ড নেই। থাকলে আওয়ামী লীগ এর এমনতরো স্বৈরাচারী ও ভোটাধিকার-হরণকারী অত্যাচার মেনে নিতাম না আমরা। আমাদের মেরুদন্ড ঠিক না হওয়া পর্যন্ত শেখ মুজিবের দ্বারা রচিত এবং শেখ হাসিনা দ্বারা পরিচালিত দুঃস্বপ্ন চলতেই থাকবে।

মোঃ রহমত আলী খন্দকার (৫০, ডিমশহর, ধূপচাছিয়া, বগুড়া)- আপনাদের এই প্রতিবেদন-সঙ্ক্রান্ত উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমার বক্তব্য নাতি-দীর্থ এবং সুস্পষ্ট। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের গণতন্ত্র যা মানুষের নির্বাচনী ভোটাধিকারের উপর নির্ভরশীল, সেটিকে হত্যা করেছে গত দেড় দশক ধরে। এই বছরের জানুয়ারীর নির্বাচন অবৈধ, অরাজকতা-পূর্ণ এবং প্রহসনমূলক ছিল তা বাংলাদেশের সবাই জানে এবং বোঝে। শেখ পরিবারের বাংলাদেশকে নিজের সম্পত্তি ভাববার যে ব্যাপারটা, সেটি থেকে বাংলাদেশকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজের সম্পত্তি ভাববার মতো মানসিকতা  থাকার কারণে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা – যার প্রধান উদাহরণ নির্বাচনী ভোটাধিকার, তা আওয়ামী সরকারের কাছে এবং শেখ পরিবারের কাছে সবসময়ই বাহুল্য মনে হয়েছে। এই মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ হলো বাকশাল, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচন যেটিকে নাটক ছাড়া কিছু বলা যায়না। শেখ হাসিনার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে না আসতে পারলে মৃতপ্রায় গণতন্ত্র চিরতরে হারিয়ে যাবে।

নুসরাত সুজানা নওরিন – বিরোধী দলগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অবলুপ্তির মাধ্যমে – আওয়ামী লীগ সেটাই করছে, যেটা এই দলের ডিএনএ-তে ছিল বরাবরি – একদলীয় শাসন। শেখ মুজিব বাকশাল করেছেন, এটা যেন শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিয়েছে একনায়িকাতন্ত্র কায়েমের যেটির লজ্জাজনক উদাহরণ জানুয়ারী ২০২৪ এর নির্বাচন। বাংলাদেশকে আওয়ামীদেশ বললে অত্যুক্তি হয়না। শেখ পরিবারের কবল থেকে রক্ষা করতে পারলেই একমাত্র দেশের ভাগ্য ঘোরানোর সুযোগ থাকবে, নচেৎ নয়।

মোঃ আবির হোসাইন (২২, রাজবাড়ি) –  আমি একসময় আওয়ামী রাজনীতি ও মতাদর্শ সমর্থন করতাম। কিন্তু ২০১৮ ও ২০২৪ এর নির্বাচন দেখবার পর সে-ই সমর্থন কর্পূরের মতো উড়ে গেছে। ২০২৪ নির্বাচনে যা হলো তা-কে প্রহসন ছাঁড়া কিইবা বলা যায়। আমি পড়েছি এবং শুনেছি এমনতরো স্বৈরতান্ত্রিকতা নাকি বাকশালী কাঠামোয় প্রণয়ন করতে চেয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান এবং এর ধারাবাহিকতায় তার হত্যাকাণ্ড হয়েছিলো। শেখ হাসিনা স্পষ্টতঃই শিক্ষা নেননি এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে। নাহলে এধরণের নির্লজ্জতা কিভাবে করেন আমি বুঝতে পারিনা। 

এম ডি আব্দুল্লাহ আল কায়সার – আওয়ামী লীগের রক্তে মিশে আছে স্বৈরতন্ত্র। ১৯৭২ – ৭৫ আমাদের জাতি হিসেবে সে শিক্ষা দিয়েছে। বাকশাল এর মতো জঘন্য স্বৈরাচারী ব্যবস্থা তারা নিয়ে এসেছিলো। ১৯৯৬ এবং ২০০৮ ছিলো প্রহসন, প্রতারণা মানুষের কাছে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ভান করেছিল একটি গণতান্ত্রিক দলের। সে মুখোশ খুলে যায় ২০১৪ থেকে এবং তাদের দ্বারা গণতন্ত্রের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ অব্যহত আছে আজতক, যার সর্বশেষ অধ্যায় ২০২৪ এর জানুয়ারী নির্বাচন। শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিব বাংলাদেশের জন্যে কলঙ্কস্বরূপ।

এস কে সাজ্জাদ হোসাইন কিবরিয়া (৫২, নোয়াখালী, বৃহত্তর চট্টগ্রাম) – একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আওয়ামী লীগ বিএনপি জামাত জাপা কারো প্রতিই আমার কোনো আনুগত্য নেই। খালেদা জিয়ার ১৯৯৬ এর একদলীয় নির্বাচন বানচাল হয়ে যাওয়াতে আমার মনে হয় সবাই-ই মনে মনে স্বস্তি পেয়েছিলো। শেখ মুজিবের তথাকথিত বাকশাল বাংলাদেশে চিরস্থায়ী না হওয়াতেও আমার মনে হয় বাংলাদেশ সর্বোপরি আশ্বস্ত হয়েছিলো। সামরিক শাসনের ১৬ বছর সেই প্রশান্তি নষ্ট করে দেয় নিশ্চিত। কিন্তু ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত পরপর তিনটি নির্বাচনে কারচুপি, ভোট-ডাকাতি ও গণতন্ত্রের যে অবজ্ঞা আওয়ামী লীগ দেখালো তা শেখ মুজিবের একনায়কতান্ত্রিক ক্ষমতাকেও হার মানায়। জানুয়ারী ২০২৪ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ উত্তর কোরিয়া, চীন বা রাশিয়া হওয়ার দিকে অগ্রসর হলো আরেক ধাঁপ। শেখ হাসিনার জীবনকালে মনে হয়না এই সংকটের অবসান ঘটবে। বিদায় গণতন্ত্র! বিদায় ভোটাধিকার!

আফরোজা খানম চৌধুরী (৩৫, ঠাকুর বাড়ি, কুমিল্লা সদর, কুমিল্লা) – আওয়ামী নির্বাচন প্রহসনকে ধিক্কার জানাবার ভাষা আমার নেই। অনেকেই হয়তো ভুলে যাবেন এই প্রহসনের কথা কিছুদিনের মধ্যে, কিন্তু মানুষ ঠিকই টের পাবে ভবিষ্যতে ভোটাধিকার হারাবার মূল্য। শেখ পরিবার কখনোই ভোটের গণতান্ত্রিকতায় বিশ্বাস করতো না। শেখ সাহেবের আচরণে যা দেখা গেছে, সেটার-ই কদর্য রূপ তুলে ধরেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ আজ পরাধীন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ করেছে।

ফামিদা সুলতানা (২৭, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ) – আমার রাজনীতি জ্ঞান বা ধারণা খুব বেশি নয়। কিন্তু একদম তৃণমূল পর্যায়ের অরাজনৈতিক মানুষ-ও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অবসান এই আওয়ামী সরকারের হাতে। হয়তো শেখ হাসিনা তার পিতার উদাহরণ অনুসরণ করছেন। কিন্তু, বাকশালের পরিণতি যে বাংলাদেশের জন্যে ভালো হয়নি, এটা ওনারা ভুলে গেছেন হয়তো। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করবার দায়িত্ব কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের। সেটা না হলে ২০২৪ এর জানুয়ারী নির্বাচন বারবার হতে থাকবে।

মিজানুর রাহমান (৪৮, বাঘা, রাজশাহী) – সালাম জানবেন। আমি সক্রিয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। হয়তো একারণে আমার নিম্নোক্ত মন্তব্য একপেঁশে শোনাবে। কিন্তু আমি এতবার নির্যাতিত হয়েছি আওয়ামী লীগ দ্বারা এবং পুলিশ প্রশাসন দ্বারা শুধু বিএনপি করবার কারণে, একপেঁশে শোনালেও আমার বক্তব্য নির্মোহ থাকবে। দুঃখজনক হলেও সত্য আমার দল বিএনপির ১৯৯৬ সালের প্রতিদ্বন্দীতাবিহীন নির্বাচন একটা কালো অধ্যায় হয়ে রয়েছে। কিন্তু ভালো মতো খেয়াল করলে দেখা যাবে শেখ হাসিনার এই উন্মাদনা,  গনতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা, বাংলাদেশের প্রতি নিষ্ঠুরতা, এগুলোর সবই বাংলাদেশ আগেও দেখেছে – শেখ মুজিবের মধ্যে। একারণেই জানুয়ারী ২০২৪ এর নির্বাচনের যে ছলাকলা, যে নাটক, যে চুরি, এটিতে ঘৃণা হয় ঠিকই, কিন্তু বিস্ময় তৈরি হয়না। পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশকে বয়কট না করলে এই নির্বাচনী প্রহসন চলতেই থাকবে।

ইফফাত আরেফীন (৩৯, দাউদপুর, কুলাউড়া, মৌলভীবাজার) – আমার পরিচিত অনেকের ২০১৪ থেকেই তারা নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেয়ার আগেই তাদের ভোট অন্য কেউ দিয়ে দিয়েছে। এমন নজির অনেক। এগুলো বাংলাদেশে আসলে নতুন নয়। নতুন হচ্ছে এগুলোর মাত্রা। গত তিন নির্বাচনে যে মাত্রায় হয়েছে, সেটি নজিরবিহীন। শেখ হাসিনার এতো বয়স হলো, অথচ তার বাপের স্বৈরাচারী একদলীয় মনোভাব ছাঁড়তে পারলোনা। আফসোস!

মহিউদ্দীন মিয়া  (২৫, বোয়ালমারী বাজার, বোয়ালমারী, ফরিদপুর) – আপনাদের ধন্যবাদ জানাই এই সময়োচিত বিষয়টি তুলে ধরবার জন্যে। অন্যায় এর-ও সীমা আছে। নির্বাচন-চুরিকে এখন অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। গণতন্ত্রকে হত্যা করতে হয় কিভাবে সেটা পরিষ্কার দেখিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। বাকশালী মুজিব থেকে শুরু করে গণতন্ত্র-হত্যাকারী হাসিনা পর্যন্ত যে পরিক্রমা, এটি দেখিয়ে দেয় কী ভয়ঙ্কর আওয়ামী লীগ এবং এটির রাজনৈতিক প্রহসন। মুক্তি হবে কিভাবে? বলতে পারছিনা। কিন্তু এই সরকারের উৎখাত নিশ্চিত দরকার।

হৃদয় কৃষ্ণ যাদব – যদিও প্রথামাফিক সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে এসেছে, কিন্তু, সে প্রথার-ও একটা সীমা আছে। সংখ্যালঘুরাও দেখতে পাচ্ছে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের তোয়াক্কা করছেনা। ভোটাধিকার হরণে তাদের আগ্রাসী আচরণ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকেও দমিয়ে দিয়েছে ব্যপকভাবে। ২০২৪ এর নির্বাচনকে আওয়ামী সমর্থকরাও অস্বস্তি সাথে নিয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। এধরণের প্রতারণা আসলে বাংলাদেশ আগে দেখেনি এমনভাবে। ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচন-চুরি এখন অন্য পর্যায়ে চলে গেছে। শেখ হাসিনার এবং শেখ পরিবারের উৎখাত ছাঁড়া মুক্তি বোধহয় নেই।

এম ডি মানওয়ার হুসাইন (২৭, মানিকছড়ি, খাগড়াছড়ি) – আমার কাছে ব্যাপারগুলো খুব স্পষ্ট। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ এর নির্বাচনকে নির্বাচন বলে বৈধতা দানকারী যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্র দুর্নীতিগ্রস্ত। দুর্নীতিগ্রস্ত না হলে এইসব নির্বাচনকে বৈধতা দান করা সম্ভব না। যেখানে রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধয়াক সরকার-ব্যবস্থা ধ্বংস করবার মাধ্যমে শেখ পরিবার চিরকাল ক্ষমতায় থাকতে চাইছে, সেখানে শেখ মুজিবের বাকশালীয় প্রেতাত্মা ছাড়া আর কিছু দেখবার অবকাশ নেই।

এম ডি আব্দুল্লাহ আল মামুন  (৪২, পটুয়াখালী) – আমাদের দেশটাকে ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে আওয়ামী লীগের তিনটি নির্বাচন দরকার হয়েছে যার মধ্যে ২০২৪ এর নির্বাচন সবচেয়ে দুর্নীতিপূর্ণ। ব্যার্থ রাষ্ট্রে পরিণত করবার প্রচেষ্টা আওয়ামী লীগের এটিই প্রথম নয়। শেখ মুজিব বাকশালের মাধ্যমে একই চেষ্টা করেছিলেন এবং মূল্য দিয়েছিলেন নিজের ও পরিবারের মৃত্যু দিয়ে। শেখ হাসিনার ভেবে দেখা উচিৎ উনিও কী একই পরিণতি বরণ করতে চান কিনা।