বিএনপির আলোচনা সভা
‘ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন, যেটা মিথ্যাচার’
মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনায় মির্জা ফখরুল।
আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘স্বাধীনতাসংগ্রামে অবশ্যই আপনাদের বিরাট অবদান আছে। আমরা আপনাদের অবদান অস্বীকার করি না। কিন্তু একই সঙ্গে আপনারা যদি স্বাধীনতার মূল নায়কের অবদান অস্বীকার করেন, সেটাকে আমরা মেনে নিতে পারি না।’ তিনি বলেন, ৯ মাস কী কষ্টটা করে দেশের মানুষ লড়াই করেছে, এক কোটি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে প্রতিবেশী দেশে শরণার্থী হয়েছেন, মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তাঁদের কথাগুলো আজ উচ্চারিত হয় না।
১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড চালান বলে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারপ্রধান ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক কথা বলেছেন, যেটা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ, তিনি যা বলেন, তার ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবেন না।’ তিনি বলেন, ‘আজকে কেউ একজন বললেন ২৫ মার্চ, ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান মানুষ হত্যা করেন, এটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয়।’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনে বিএনপির উদ্যোগে বছরব্যাপী কর্মসূচি পালনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, কাউকে ছোট করার জন্য নয়, আমরা স্বাধীনতাসংগ্রামে যার যে অবদান, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। এটাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। আর সে জন্য আপনাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। আপনারা বিভিন্ন রকম অসংলগ্ন, অপ্রকৃতিস্থ কথাবার্তা বলছেন, সেগুলোর সঙ্গে সত্যের কোনো চিহ্নমাত্র
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ৭ মার্চ পালন করছি ঘোষণা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ শুরু হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রথমে আমাদের স্বাগত জানালেন, তার পরে তিনি বললেন এটা আমাদের ভণ্ডামি।’
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাংসদ মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের লেখা ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে’ বইয়ের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম সেনানিবাসে একাত্তরের ২৫ মার্চ ২০ বালুচ রেজিমেন্টের সৈনিকেরা এক হাজার বাঙালিকে হত্যা করার বর্ণনা আছে। ওই সময়ে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান ও ইপিআরের (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) মেজর রফিকুল ইসলাম উভয়ে বিদ্রোহের প্রস্তুতির কাজটি করছিলেন।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুল সালাম প্রমুখ। সভায় আলোচকেরা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে স্বাধীনতার ‘প্রথম স্বপ্নদ্রষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করেন।