তারেক রহমানকে নিয়ে প্রেসক্লাব সভানেত্রীর বক্তব্য ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ : আমান

ডাকসুর সাবেক ভিপি এবং ৯০ এর সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতা আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের বিবৃতি ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) ৯০ এর ডাকসু এবং সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফরিদা ইয়াসমিনকে ক্ষমা চেয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতা নাজির উদ্দিন জেহাদ। দিনটি উপলক্ষে ১০ অক্টোবর রোববার শহীদ জেহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ৯০ এর সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের অংশগ্রহণে জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে পরদিন ১১ অক্টোবর একটি বিবৃতি দিয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।ভিডিও কনফারেন্সে তারেক রহমানের সঙ্গে মতবিনিময় আইন বহির্ভূত’ শিরোনামে ফরিদা ইয়াসমিনের বিবৃতিটি ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং সম্পূর্ণ হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

রাজধানীর পল্টনে বিএনপি অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেন,
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের বিবৃতিতে তথাকথিত প্রতিবাদের ভাষা ব্যবহার এবং শব্দ চয়নে মনে হয় ফরিদা ইয়াসমিন জাতীয় প্রেসক্লাব নয় বরং তিনি আওয়ামী মহিলা লীগের কোনো শাখা-প্রশাখার নেত্রী। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফোনে কথা বলবেন নাকি ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলবেন, এটি দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এ নিয়ে অন্য কারো মাথা ব্যথার কারণ থাকতে পারে বলে আমরা মনে করিনা।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে দেশের স্বার্থবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র চলছে। জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নেতৃত্বশূন্য করার চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক, দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের নির্ভরতার প্রতীক স্বাধীনতার ঘোষকের পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে যখন আগামী জাতীয় নির্বাচন জাতীয় দাবিতে পরিণত হতে চলছে এবং দাবি আদায়ে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে তখন নিশিরাতের সরকার এবং তাদের উচ্ছিষ্টভোগী চাটুকার দালালগোষ্ঠী জাতীয়তাবাদী শক্তি তথা বিএনপির এবং বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার আরো জোরদার করে চলছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, বিএনপি’র বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে দেশের অন্যান্য রাষ্ট্রীয় আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের মতো দেশের গণমাধ্যমের একটি অংশকেও সঙ্গী করে নেয়া হয়েছে। এমনকি সাংবাদিকদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান জাতীয় প্রেসক্লাবকেও ক্ষমতাসীনদের হীন দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় ব্যবহারের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। যার প্রমান বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাব সভাপতির হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত বিবৃতি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে প্রেসক্লাব সভাপতির ঔদ্ধত্বপূর্ণ ভাষা ব্যবহার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ৯০ এর ডাকসু এবং সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তারেক রহমান এমন একটি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন, যে পরিবারটির সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের পরিচয় স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। তারেক রহমানের পিতা হলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে সেক্টর কমান্ডার, বীরোত্তম, বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান, বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি।

তারেক রহমানের মা খালেদা জিয়া নিশিরাতের সরকারের নয় বরং জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিন মেয়াদে দেশ পরিচালনা করেছেন। তিনি জীবনে কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। এমন এক বনার্ঢ্য ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠেছেন তারেক রহমান। মূলত তার পরিবারটিই ছিল তাঁর রাজনৈতিক পাঠশালা।

সাবেক ছাত্র নেতারা বলেন, তারেক রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকার সময় স্বৈরাচারী এরশাদবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নানাভাবে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। এ কারণে তারেক রহমানের উপর সেই সময় স্বৈরাচারী এরশাদের পেটোয়াবাহিনী হামলাও করেছিল। এভাবে রাজনীতির দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তারেক রহমান বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অতএব এমন একজন বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব সম্পর্কে, এমন একজন জনপ্রিয় জননেতা সম্পর্কে ‘ভাষা ব্যবহারের ব্যাপারে’ জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে ফরিদা ইয়াসমিনের অসতর্কতা ঔদ্ধত্বের শামিল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একজন রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হওয়া কিংবা মামলার রায় হলেই তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবে আসতে পারবেন না কিংবা জাতীয় প্রেসক্লাবে ভিডিও কনফারেন্সেও কথা বলতে পারবেননা, এটি কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং, দোষী কিংবা নির্দোষী, পক্ষ কিংবা বিপক্ষ, যে কোনো ব্যক্তি প্রেসক্লাবে আসবেন, তাদের মতামত ব্যক্ত করবেন, বক্তব্য তুলে ধরবেন এটাই রীতি। দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসক্লাব এই নীতি অনুসরণ করে আসছিলো। এটাই হওয়া উচিত একটি সভ্য সমাজের নীতি। এই বৈশিষ্টের কারণেই অন্য যে কোনো ক্লাবের চেয়ে প্রেসক্লাব আলাদা গুরুত্ব ও মর্যাদা বহন করে। কিন্তু প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে ফরিদা ইয়াসমিনের বিবৃতির ধরণ দেখে মনে হয় তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে নিশিরাতের সরকারের নিযুক্ত একজন বেতনভুক্ত প্রশাসক।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, প্রতিপক্ষ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের হামলা মামলা নতুন কিছু নয়। কখনো পেশিশক্তি ব্যবহার করে কখনো বা আইন আদালত ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ রাজনীতিবিদদের দমিয়ে রাখার অপচেষ্টার ইতিহাসও নতুন নয়। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তিকে ঘায়েল করার জন্য মিথ্যা মামলা দায়ের , আদালত কিংবা আইনশৃংখলাবাহিনীকে ব্যবহার, বিশ্বের দেশে দেশে সকল স্বৈরাচারী সরকারের বৈশিষ্ট। এটি যেমন পাকিস্তান আমলে সত্য ছিল, স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচারী এরশাদ কিংবা বর্তমান সরকারের আমলেও তেমনিভাবে সত্য। সুতরাং, একজন রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মামলার রায় কিংবা সরকারের ইচ্ছেপূরণে তার অধিকার কখনোই বাতিল হয়ে যায়না।

সাবেক ছাত্র নেতারা বলেন, ২০০০ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে উচ্চ আদালতের ফুল বেঞ্চের পর্যবেক্ষণে শেখ হাসিনাকে ‘রং হেডেড’ উইমেন হিসেবে উল্লেখ করেছিল। মঈন-ফখরুদ্দিনের অসাংবিধানিক সরকারের আমলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শেখ হাসিনাকে ‘দেশের জন্য ক্ষতিকারক’ হিসেবে উল্লেখ করেছিল। এর কোনোটিই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনে বাধার সৃষ্টি করেনি। এমনকি পাকিস্তান আমলে মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর একজন সহযোগী আবু নাসেরের বিরুদ্ধে একটি সমাজকল্যানমূলক প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ওই সময় দুর্নীতি দমন আইন ১৯৪৭ বিধির ৫ (২) ধারায় মামলা হয়েছিল। ১৯৬০ সালে ওই মামলার রায়ে মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে ২ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওই মামলায় মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাগারেও যেতে হয়েছিল। এখন প্রশ্ন করা যেতে পারে, দুর্নীতির মামলায় শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে করা দণ্ড হওয়ার কারণে কি মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে গিয়েছিলো? কোনো প্রেসক্লাবে তাঁর প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল?

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আগরতলা মামলাও হয়েছিল। সেটিকে বলা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। সুতরাং রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে অগ্রযাত্রা ঠেকানোর অপকৌশল নতুন নয়। বাস্তবতা হচ্ছে, জেল জুলুম হুলিয়া এসব আপদ বিপদের ঝুঁকি রেখেই রাজনীতিবিদরা দেশ এবং জনগণের স্বার্থে রাজনীতি করে থাকেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও তার ব্যাতিক্রম নন। ওয়ান ইলেভেন থেকে আজ পর্যন্ত তিনি প্রতিহিংসাপরায়ণ একটি রাজনৈতিক অপশক্তিকে মোকাবেলা করে চলছেন। এটাই রাজনৈতিক বাস্তবতা। সুতরাং, রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাকে ক্ষমতাসীনরা তাদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু সেটির সঙ্গে জাতীয় প্রেসক্লাবের পরিচয় যুক্ত করে সুর মেলানোর পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে বলেই আমরা মনে করি।

সাবেক ছাত্র নেতারা বলেন, দেশ এবং জনগণের স্বার্থে বিএনপি গত একযুগের বেশি সময় ধরে বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতের মানুষ একটি প্রতিকূল পরিবেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের ডাক দিয়ে অস্ত্র হাতে এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সম্মুখ সমরে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি রণাঙ্গন ছাড়েননি। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর দেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে এনেছেন। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।

নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা আর ভয়কে জয় করে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে দেশের হাল ধরেন মাদার অফ ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া। নানা ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত মোকাবেলা করে তিনি ৯০ সালে গণ-অভ্যুথানের স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একাধিকবার রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনা করেছেন। তাঁর সময়ে বাংলাদেশ পরিচিতি পেয়েছিলো এশিয়ার ইমার্জিং টাইগার হিসেবে। আদালতের দোহাই দিয়ে দেশনেত্রীকে ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ করে রাখলেও তিনিই জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতিটি নেতাকর্মী তথা দেশপ্রেমিক মানুষের প্রেরণার বাতিঘর।

একইভাবে চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র, মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চলছে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। তবে এসব করে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবেনা। যে আদালত ব্যাবস্থায় দেশের সিটিং প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে চ্যাংদোলা করে বিদেশ পাঠিয়ে দেয়া হয়, নিম্ন আদালতের রায় সরকারের অনুকূলে না যাওয়ায় ওই আদালতের বিচারক প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন, সেই আদালত ব্যাবস্থার রায়ের দোহাই দিয়ে জননেতা তারেক রহমানের অগ্রযাত্রা থামানো যাবেনা, অচিরেই রাজপথে জনগণ এর প্রমান দেবে ইনশাল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, দেশে নানারকমের ডজন ডজন ক্লাব আছে। কিন্তু জাতীয় প্রেসক্লাব অন্য আরো আট -দশটি ক্লাবের মতো নয়। জাতীয় প্রেস ক্লাবের একটি আলাদা গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে। দেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের গুরুত্ব উপলব্ধি করেই ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রাজধানীর তোপখানা রোডে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় প্রেস ক্লাবের জায়গাটি স্থায়ী বরাদ্দ দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণের টাকাও বরাদ্দ দেন তিনি। ১৯৭৯ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বর্তমান ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন জিয়াউর রহমান।

২০০৪ সালে প্রেসক্লাবে বহুতল ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। গণতন্ত্র চর্চায় প্রেসক্লাবের জাতীয় গুরুত্ব বিবেচনায় এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সুতরাং, জাতীয় প্রেসক্লাব হবে বহুমত, বহু পথের মানুষের মিলনকেন্দ্র। মুক্তচিন্তা ও স্বাধীন মতপ্রকাশের নির্ভরযোগ্য অঙ্গন। স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রেসক্লাব ছিল গণতন্ত্রকামী মানুষের নির্ভরযোগ্য স্থান। অথচ এখন গভীর উদ্বেগের বিষয়, একটি মহল জাতীয় প্রেসক্লাবকে ক্ষমতাসীনদের তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। যা দেশের বিবেকবান মানুষকে হতাশ করেছে।

কোনো রাজনৈতিক দল বিশেষ করে জিয়া পরিষদ কিংবা ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ স্মৃতি পরিষদকে জাতীয় প্রেসক্লাবে আর কোনো সভা সেমিনার করতে দেয়া হবেনা এমন সিদ্ধান্তও নিয়েছে জাতীয় প্রেসক্লাব। এটি প্রেসক্লাবের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিরোধী উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য প্রেস ক্লাবের ব্যাবস্থাপনা কমিটির প্রতি আহবান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিয়ে সরকারের আনুকূল্য পেতে ফরিদা ইয়াসমিন তড়িঘড়ি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এহেন বিবৃতি দিয়েছেন। এতে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করা হয়েছে। সুতরাং, ফরিদা ইয়াসমিন দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতিটি প্রত্যাহার করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মর্যাদা রক্ষা করবেন এটিই সবাই প্রত্যাশা করে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইতোমধ্যেই বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। ২০১৪ সাল কিংবা ২০১৮ সালের মতো জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে আর জোচ্চুরি-ডাকাতি-প্রতারণা করতে দেয়া হবেনা। জন-দাবি মেনে নিয়ে ক্ষমতা জবরদখলকারী চক্র যদি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা মেনে নেয় তাহলে একটি অবাধ-সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে বিরাজমান সংকটের সমাধান সম্ভব অন্যথায়, ফয়সালা হবে রাজপথে। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই জনগণের ভোটাধিকার আদায় করা হবে, প্রতিষ্ঠা করে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ছাত্র নেতা ও বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব ও ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন, ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সহ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ছাত্র দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা কামরুজ্জামান রতন, বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক, আসাদুজ্জামান আসাদ, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীম, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশীদ হাবিব, আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *