রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হলেও বাণিজ্য বেড়েছে ভারত-চীনের

গত দুই বছরে চীন-ভারত সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়েছে। ২০২০ সালের মে মাসে ভারত-চীন সীমান্তে চীনা সেনারা মুগুর দিয়ে পিটিয়ে ভারতীয় সেনাদের হত্যা করে। দুই পক্ষের মারামারিতে চীনা সেনারাও মারা পড়ে। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যে বছর সীমান্ত উত্তেজনা বেড়ে গেল, তার পরের বছর দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাল।

চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমসের তথ্যানুসারে, ২০২১ সালে চীন-ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। তবে এ হিসাব ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত।

চীন ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গত দুই দশকে ধীরে ধীরে বেড়েছে। ২০০১ সালে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৮৩ কোটি ডলার। অথচ এ সময় তাদের মধ্যকার রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, দুই দেশের সীমান্তে উত্তেজনার প্রভাব রাজনৈতিক সম্পর্কে পড়লেও বাণিজ্য সম্পর্কে বিশেষ প্রভাব পড়েনি। এর কারণ হচ্ছে, বিদেশি উদ্যোক্তারা বাণিজ্যের দুয়ার উন্মুক্ত রাখতে চেয়েছেন।

২০২০ সালের জুনে চীন ও ভারতের সেনারা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুই পক্ষের সেনারাই হতাহত হয়। তবে ভারতীয় সেনাদের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল বেশি। এ ঘটনার পর দুই দেশের সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি হয়। এ ছাড়া সম্প্রতি চীন অরুণাচল প্রদেশের ১৫টি জায়গা নিজেদের মতো নামকরণ করেছে। এমনকি অভিযোগ আছে, তারা ভারতের ভূমি দখল করে আছে।

২০২০ সালে সীমান্তে প্রাণক্ষয়ের পর নরেন্দ্র মোদি সরকার চীনের ২৬০টি অ্যাপ ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, যার মধ্যে জনপ্রিয় অ্যাপ টিকটক, সিএন ক্যামস্ক্যানারও ছিল। কিন্তু এ ঘটনার পরের বছরেই যেভাবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ে, তাতে বোঝা যায়, ভারত সরকারের এসব তৎপরতা ছিল প্রতীকী, বাস্তবতার সঙ্গে তার বিশেষ যোগ ছিল না। বিশ্লেষকেরা অন্তত সেটাই মনে করেন।তাঁরা মনে করেন, মোদির মেইক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে।

এর আগে ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) চীনা স্মার্টফোন কোম্পানি অপোর সঙ্গে তথ্য বিনিময় চুক্তি করেছে। স্বাভাবিকভাবেই ভারতে জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনেকে অভিযোগ করেন, এতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *