নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে
বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। সংকট না থাকলেও তিন দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। দুই দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা এবং এক দিনের ব্যবধানে ডিম ডজনে পাঁচ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা। বাড়তি মাছের দামও। গত বুধবার রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘বেশি দামে পণ্য কিনে আনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম শুনে অনেক ক্রেতা রাগারাগি করেন। তবে কিছু করার নেই। বাজার ঘুরে শেষ পর্যন্ত তাঁরা ঠিকই কিনে নেন।’
বাজার করতে আসা মো. হাবিবুল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বাজারে এখন কোনো কিছুই নিম্নবিত্তের নাগালে নেই। মাছ, মাংস, চাল, ডাল, তেল, সবজি, পেঁয়াজ—সব কিছুরই দাম বাড়তি।
জোয়ারসাহারা কাঁচাবাজার ও নদ্দা মোড়ল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সব ধরনের সবজিতে কেজিতে পাঁচ থেকে ১৫ টাকা দাম বেড়েছে। এসব বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৫০, করলা ১০০, বেগুন ৭০ থেকে ৮০, ক্ষীরা ৬০, শিম ৫০ থেকে ৬০, মটরশুঁটি ৮০, কাঁচামরিচ ১০০, গাজর ৪০, চিচিঙ্গা ৬০, পেঁপে ৪০ ও আলু ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিটি ফুলকপি ছোট ৪০ ও বড় ৫০, বাঁধাকপি ৪০, মাঝারি আকারের লাউ ৮০ ও বড় আকারের ১০০, চালকুমড়া প্রতিটি ৬০, লেবুর হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।জোয়ারসাহারা বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা কারওয়ান বাজার থেকে মাল কিনে আনি। প্রতিদিনই আমাদের বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। এখন শীতের সবজি শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই বাজারে সরবরাহ কম। এ কারণেই সবজির দাম বাড়ছে। সবজির দাম এখন আর কমার কোনো সুযোগ নেই। ’
পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে নদ্দা মোড়ল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আবুল কালাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তিন-চার দিন আগে আমরা ৩৫ টাকা কেজি কিনে ৪০ টাকায় বিক্রি করেছি। বুধবার আমাকে পেঁয়াজ কিনে আনতে হয়েছে ৪৫ টাকায়। বিক্রি করেছি ৫০ টাকায়। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে আমাদের কিছু করার থাকে না। ’
জোয়ারসাহারা বাজারের মাছ ব্যবসায়ী উজ্জ্বল কালের কণ্ঠকে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে মাছের দাম বাড়তি। প্রতি কেজিতে মাছের দাম কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এক কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে ২৫০ টাকায়। এক কেজি ওজনের কার্ফ্যু মাছ ১৮০ ও তেলাপিয়া ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।
মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। ১৫০ টাকার জায়গায় এখন ব্রয়লার মাংস কেজি ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর সোনালি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। মুরগির পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দামও। লাল ডিমের ডজন পাঁচ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন ডিমের উৎপাদন কম, সামনে ডিমের দাম আরো বাড়বে।